দক্ষিন মেক্সিকোর ওসাকাতে রঙধনুর বৈচিত্র্য ভরা একঝাঁক মানুষের সমাবেশ। ভাবছেন এরা সবাই কি নারী বা পুরুষ? ওসাকাতে এ প্রশ্নটি করার আগে আপনার বেশ ভাবতে হবে। কারণ নারী এবং পুরুষের মাঝেও বৈচিত্র্য ভরা আরেকটি লিঙ্গের বিচরণ দক্ষিন মেক্সিকোর ওসাকাতে। যাকে আমরা তৃতীয় লিঙ্গ নামে আখ্যায়িত করে থাকি। কালো স্কার্ট পরা রঙিন সূচিকর্মযুক্ত ফুলেল পোশাকের মধ্য দিয়ে রঙধনুর মত মেলে ধরে এরা নিজেদের। ‘মুশে’ ওসাকায় উপজাতি গোষ্ঠীতে সংখ্যার দিক দিয়ে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ। শতাব্দী ধরে এক স্বতন্ত্র সত্তার আবাস যাদের; যারা নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে আধুনিক পৃথিবীর আরোপিত কার্যবিধিতে।
মেক্সিকোর দক্ষিণাঞ্চলীয় ওসাকা রাজ্যের ইশতমো দে তেঅনতেপেক অঞ্চলে এদের অবস্থান। প্রাক হিস্পানিক সময় থেকেই মুশেরা এই অঞ্চলে রয়েছে এবং সত্যি বলতে তাদের ছাড়া দক্ষিন মেক্সিকোর ওসাকার যাপনও অপূর্ণ! ওসাকাতে অধিকাংশ মানুষ জাপোটেক ভাষায় কথা বলে। জাপোটেকে ব্যাকরণগত কোনো লিঙ্গ নেই। তাদের মতে, সবাই মানুষ এটাই মৌলিক পরিচয়। এখানে কখনো কোনো মুশেকে সম্মুখীন হতে হয়নি পুরুষ নাকি নারীর পরিচয়ের প্রশ্নে!
মুশে শব্দটি সম্ভবত স্প্যানিশ শব্দ মুজের থেকে উদ্ভূত; যার অর্থ নারী! আদিবাসী হিজড়া নারী, যারা সমকামী পুরুষ এবং মেয়েদের পরিচয় মিশ্রিত। মূলত মুশে প্রাচীন জাপোটেক উপভাষা থেকে উদ্ভূত একটি শব্দ, যা সমকামী পুরুষদের একটি সম্প্রদায়কে বর্ণনা করে। যারা পুরুষের দেহে নারীর সত্তা নিয়ে বেড়ে উঠে, পুরুষদের সাথে ডেট করে। কখনও কখনও পরিবার এবং সমাজের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী নারীর ভূমিকা পালন করে।
মুশেদের সামাজিক এই স্বীকৃতি মূলত এই অঞ্চলটিকে ‘আজব স্বর্গভূমি’তে উপস্থাপন করেছে পৃথিবীর কাছে। যার ফলশ্রুতিতে ভোগ কভারে প্রথমবারের মতো মেক্সিকো থেকে ট্রান্সজেন্ডার হিসেবে মুশেকে দেখা যায়। শতাব্দী ধরে দক্ষিণ মেক্সিকোর ঐতিহ্যের অংশ মুশে হাজির হয় প্রায় ১২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রকাশিত ভোগ সাময়িকীর প্রচ্ছদে।
যদিও এদের শেকড়ের অবস্থান মেক্সিকোতে কমপক্ষে ১৯৫০ এর দশকেরও আগে! অবশ্য এই নিয়ে এখন পর্যন্ত দলিলপত্র নেই। তবুও এই অঞ্চলের সবচেয়ে আদির পরিচয়ে মুশেদেরই অবস্থান।
মেক্সিকোর বাইরে মুশেদের খুব বেশি পরিচিতি নেই। দেশের মধ্যে তাদেরকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা বিভিন্ন প্যারেডে সমকামীতার প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। তৃতীয় লিঙ্গ পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে আছে কিন্তু ওসাকাতে মুশেরা নিজেদের জন্মগত এই বৈশিষ্ট্য নিয়েই জীবনধারণ করতে পারে। মেক্সিকোর পুরুষতান্ত্রিক সমাজ কাঠামোর মধ্যেও মুশেরা চাইলে নিজেদের বয়স্ক বাবা-মায়ের ভরনপোষণ নিতে পারে, এই জন্যেই মেক্সিকো পৃথিবীর চোখে ভিন্নভাবে উঠে এসেছে। যেমন- ২০১৭ সালে মেক্সিকোর জুচিতানে 8.১ মাত্রার ভূমিকম্পের সময়ে মুশেরা ত্রানকর্তার মতো এগিয়ে এসেছিল। অনেকে ধ্বংসস্তূপ থেকে আটকে পড়া পরিবার ও বন্ধুদের বের করতে খালি হাতেই সাহায্য করেছিল!
ওসাকার ইশতেমো দে এই অঞ্চলে ‘তেহুয়ানা ট্রাজে’ নামে এক ধরনের ঐতিহ্যবাহী পোশাকের জন্য বিখ্যাত। যার মধ্যে সুন্দর ফুলের সূচিকর্ম রয়েছে। ভৌগোলিকভাবে, ইশতেমো দে চীন এবং দক্ষিণ -পূর্ব এশিয়া থেকে এমন কিছু সূচিশিল্প তাদের মাঝে এনেছে যেটা আমেরিকার আর কোথাও দেখা যায়নি। এবং এ অঞ্চলের সূচিকর্মযুক্ত রেশমগুলি তেহুয়ানটেপেকের মহিলাদের তাদের নিজস্ব সূচিকর্মযুক্ত পোশাক তৈরি করতে প্রভাবিত করেছিল।
হুইপিল গ্র্যান্ড তেহুয়ানা ট্রাজের সবচেয়ে আইকনিক উপাদান। হুইপিল গ্র্যান্ডে মুখমণ্ডল সাজানো রফেল্ড কলার পরা হয়। ফ্রিদা কাহলো তার দুটি পেইন্টিংয়ে হুইপিল গ্র্যান্ডকে তুলে ধরেছেন, যা মেক্সিকোর বাইরের মানুষের কাছে একে বিখ্যাত করে তুলেছে।
এই জনপ্রিয় ও বিস্তৃত পোশাক বিক্রি এবং ব্যবসা করা স্বাধীন মহিলারা একটি শক্তিশালী মাতৃতান্ত্রিক সমাজ গঠন করে যারা আর্থিকভাবে স্বাধীন এবং পরিবারের প্রধান আয়ের উৎস হয়ে উঠে। আজ যেকোন মুশের পোশাক দেখলেই এটা অনুধাবন করা যায়। মূলত লিঙ্গের এই শক্তিশালী ভিত্তি মুশেদের গ্রহনযোগ্যতা বাড়াতে সক্ষম হয়েছে।
পুরো পৃথিবীর মধ্যে ইশতেমা দে তেঅনতেপেকে শুধু মুশেদের দেখা যায়। স্থানীয়দের মতে, জুচিতানে ধর্মগুরু ভিসেন্তে ফেরার যখন যাচ্ছিলেন তার পকেট থেকে পরেই মুশেদের জন্ম, এক ভাগ্যবান তারার হাতেই তাদের জন্মগাঁথা রচিত। আবার এটাও লোকমুখে শোনা যায়, ধর্মগুরু ভিসেন্তে ফেরার তিনটি ব্যাগ বহন করছিলেন: একটি মহিলা বীজ, একটি পুরুষ বীজ এবং একটি যেখানে দুটি বীজই মিশ্রিত ছিল। এই কাহিনী অনুসারে, তৃতীয় ব্যাগটিতে ফুটো হয়ে সব বীজ জুচিতানে পরে যায় এবং এই কারণেই এখানে মুশেদের সংখ্যা এত বেশি! এ সম্পর্কে ফার্নান্দো নোয়া দিয়াজ, একজন প্রাইমারি স্কুল টিচার, যার অনেক মুশে বন্ধু রয়েছে, তিনি বলেন,
এটা আসলে সত্য নয় মুশের সংখ্যা এই অঞ্চলে বেশি। আসলে তারা এখানে এতটাই সম্মানিত আর গ্রহনযোগ্য বলেই বাইরের দুনিয়া তাদেরকে বেশি দেখতে পাচ্ছে!
জাপোটেকে নারীদের মাঝে কঠোর আত্মপ্রত্যয় যেটা অন্যন্য অঞ্চল থেকে এই অঞ্চলের নারীদের ভিন্নরূপে তুলে ধরে। পরিবারের অর্থনৈতিক বা কতৃত্বের জায়গাগুলো নারীদের দখলে থাকে। শ্রমকেন্দ্রিক কাজগুলোতে পুরুষদের দেখা যায়। মৎস চাষ ও কৃষিকে নিয়েই শ্রমকেন্দ্রিক ব্যবস্থা জাপোটেকে। নারীরা উৎপাদিত দ্রব্য বাজারে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করেন। যা দিয়ে পরিবারের সবার ভরণপোষণ চলে।
যখন পুরুষরা মাঠে এবং মহিলারা বাজারে চলে যায়। তখন পরিবারের দেখাশোনা করার জন্য মুশেরা থাকে। এমনও বলা হয়ে থাকে, একজন মায়ের জন্য একটি মুশে ছেলে পাওয়া আশীর্বাদ যে তাকে বাড়িতে সাহায্য করবে এবং ছোট ভাইবোনদের দেখাশোনা করবে। সামাজিকভাবে মুশেদের দীর্ঘমেয়াদী সম্পর্ক বা বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া হয় না। ফলে তারা বৃদ্ধ হয়ে গেলে তাদের মায়ের সাথে থাকতে পারে। কিন্তু শুধুমাত্র ঘরগৃহস্তের মধ্যেই এখন আর মুশেদের জীবন বন্দী নেই। তারা বর্তমানে নিজেদের সাবলম্বী করছে সেলাই প্রশিক্ষণ, বিউটিশিয়ান, স্যালুনসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত করে।
স্থানীয় ক্যাথলিক চার্চে মুশেরা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের কাজ ছিল গির্জার সাজসজ্জা প্রস্তুত করা। তেঅনতেপেকে গির্জার ভিতরে গেলে মুশেদের নিজস্ব ভ্রাতৃত্ববোধের পরিচয় পাওয়া যায়। ক্যাথলিক চার্চের তিনটি লিঙ্গের সহবস্থানের এই সংস্কৃতি স্থানীয় ঐতিহ্যকে শক্তিশালী এবং গভীরভাবে রোপণ করতে সফল হয়েছে।
মুশেরা শুধুমাত্র সম্মানিত নয়, তাদেরকে পুরো জুচিতন জুড়ে উদযাপিত করা হয় লিঙ্গের এই বর্ণাঢ্যের জন্য। মুশে এবং তাদের লিঙ্গের অস্পষ্টতাকে সম্মান জানাতে প্রতিবছর তিন দিনব্যাপী উৎসবের আয়োজন হয়, যার নাম ভেলা দে লাস ইন্ট্রিপিডাস। এই উৎসবগুলোতেও মুশেদের আধিপত্য থাকে। উৎসবের শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে যখন প্রদক্ষিণ করে সামনের ব্যান্ডের সারির সাথে তখন মুশেদের দেখা যায় মোমবাতি হাতে। পিছনে আরো মুশে ফুল, বেলুন এবং ফেস্টুন নিয়ে আসতে থাকে গাড়ি বা ট্রাকে চড়ে। উৎসবের বিশেষ দিক হলো শহরের বাইরে রাতে অনুষ্ঠিত পার্টি।
সেখানে তিনটি স্টেজ সাথে থাকে বড় স্পিকারের। নারী, পুরুষ থেকে শুরু করে সবাই সমবেত হয়। নারীরা হুইপাইলসের সূচিকর্মযুক্ত ব্লাউজে এবং পুরুষরা সাদা গুয়াবের শার্টে বিভিন্ন বর্ণিল পোশাকে সবাই হাজির হয়। অনুষ্ঠানের সবাইকে স্বাগত জানায়, একজন মুশে সাথে থাকে তার পার্টনার মায়াটে। মায়েটে হচ্ছে এমন পুরুষ যারা মুশের সাথে যৌন সম্পর্ক রাখে। কিন্তু তারা নিজে মুশে নয় এবং সমকামী বলে বিবেচিত হয় না।
মুশেরা নিজেদেরকে সমকামী বা পুরুষের দেহে জন্ম নেওয়া নারী হিসাবে বিবেচনা করতে পছন্দ করে। কেউ কেউ হরমোন থেরাপি এবং ইমপ্লান্টের মাধ্যমে শরীরকে পূর্ণনারীতে দেখতে চায়। প্রতিবছর অনুষ্ঠিত বছর সেরা মুশে বা রানী মুশে প্রতিযোগিতায় দেখা যায় তাদের অনেকেরই কৃত্রিম স্তন রয়েছে।
মুশেরা এলজিবিটি অধিকারের সংগ্রামেও জড়িত। জুচিতান থেকে এক মুশে মেক্সিকান কংগ্রেসের নির্বাচনে একজন স্থানীয় প্রার্থী ছিলেন। যদিও তিনি পর্যাপ্ত ভোট পাননি তবুও তিনি মেক্সিকোর প্রথম ট্রান্সসেক্সুয়াল প্রার্থী হিসেবে বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। তিনি এখনও রাজনীতিতে জড়িত, সোচ্চার বিশেষ করে হোমোফোবিয়ার বিরুদ্ধে এবং এইচআইভি/এইডস প্রতিরোধের অভিযানগুলোতে। এ প্রসঙ্গে মুশে ফেলিনা বলেন,
আমাদের জীবন সূচিকর্ম, হস্তশিল্প বা রাস্তার পণ্য বিক্রির জন্য উৎসর্গ করার পরিবর্তে, আমরা আরও বেশি করে উচ্চশিক্ষা নিতে চাই। যদি আমরা, সেন্ট ভিসেন্টের মেয়েরা, নিজেদের অধিকারের জন্য লড়াই না করি, তাহলে কে করবে?
যদিও মেক্সিকানরা সাধারণভাবে সমকামীদের প্রতি দ্বিধান্বিত ছিল। মুশেরা সব চাকরিতে যোগদান করতে পারতো না। তাদের সামাজিকভাবে কিছু সীমাবদ্ধতার মুখোমুখি হতে হয়। সামাজিকভাবে তাদের রাজনৈতিক কার্যালয় বা জনপ্রিয় প্রতিনিধিত্বের পদ চাওয়া গ্রহণযোগ্য ছিল না। অনেক স্কুল তাদের পুরুষ দেহে নারীর বেশ মানতে পারতো না। সামাজিক এসব প্রতিবন্ধকতা তাদের অনৈতিক পেশায় প্রবেশ করতেও বাধ্য করেছে।
কিন্তু লাতিন আমেরিকার দেশের মধ্যে মেক্সিকো প্রথম সমলিঙ্গের বিবাহকে বৈধতা দিয়েছে। তবুও মেক্সিকোতে বিশ্বের এলজিবিটি সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে অপরাধের সর্বোচ্চ হার ছিল। জানুয়ারি ২০১৪ থেকে ডিসেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত হোমোফোবিয়ার কারণে ২০২ জন মানে, গড়ে ৩ দিনে ১জন করে মানুষ নিহত হয়েছিল।
ধীরে ধীরে মেক্সিকো এবং আন্তর্জাতিক সমকামী সম্প্রদায়ের জন্য জুচিতান স্বর্গের মত সহনশীলতার প্রতীক হয়ে উঠে। যদিও স্থানীয়ভাবে এখনও মুশেদের সাথে বৈষম্য হয় এবং সামগ্রিকভাবে এই সম্প্রদায়ের অধ্যয়ন এবং কর্মসংস্থান লাভের সুযোগও অনেক কম। তবুও আদি ও ঐতিহ্যগতভাবে তিনটি লিঙ্গের আদিবাসী সহবস্থান বিশ্বজুড়ে এলজিবিটি ইস্যুকে অনুপ্রাণিত করেছে। এ প্রসঙ্গে মুশে অ্যাভেনডাও বলেন,
এখন মানুষ বুঝতে পারে যে সবকিছু সংস্কৃতের শেকল দিয়ে আবদ্ধ করা উচিত নয়। লিঙ্গের ক্ষেত্রে, সবচেয়ে ভাল হলো সর্বদা ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা, অনুমান করা নয়।
নিজেদের লিঙ্গ নিয়ে মুশেদের কোনো আক্ষেপ নেই। কারণ একজন মুশের জন্য তার লিঙ্গ পরিচয় ঐচ্ছিক নয়; তারা একটি মৌলিক অংশ সমাজের। এ প্রসঙ্গে মুশে দারিনা বলেন,
যদি তারা আমাকে পুনর্জন্মের সুযোগ দেয় এবং একজন নারী বা মুশের মধ্যে বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে আমি একজন মুশে হিসেবে আবার জন্মগ্রহণ করতে চাই। কারণ এটাই আমি এবং এতেই খুশি আমি!
একজন মুশের জন্য যৌনসঙ্গম পাওয়া সহজ হলেও ভালোবাসা পাওয়া কঠিন! দিনশেষে তারা এমন পুরুষের প্রেমে পড়ে যাদের নিজস্ব জগত আছে, প্রেমিকা আছে, এমন পুরুষ যারা দিনশেষে নারীকেই ভালবাসে। তাই মুশেদের ক্ষনিকের গড়া সম্পর্কগুলো গভীর রেশ রেখে যায় নিজেদের মনে! যাকে সমাজ থেকে বিয়ে বা সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী করার বিধান দিতে পারে না। যাদের চোখের নীলাভ স্রোতে ভেসে আসে প্রতিটি মুহূর্তের যাপনের কথা।
ফিচার ইমেজ: iadb.org
তথ্যসূত্র:
- The third gender of southern Mexico
- Beyond Gender: Indigenous Perspectives, Muxe
- Life Outside the Binary: Meet Mexico’s Muxe Community Celebrating Genderqueernes
- Meet the mixed-gender ‘muxes’ of southern Mexico
- Vogue cover features transgender ‘muxe’ from Mexico for the first time
লেখার মাঝেই মেক্সিকোতে চলে গেলাম। সবচেয়ে ভাল লেগেছে এই ফিচারে শুধু লেখা না আবেগ ভেসে এসেছে এত দারুণ করে। উপসংহারটা চোখ থেকে জল গড়িয়ে আনার মত। অনবদ্য।
আগে জানা ছিলনা মুশেদের নিয়ে, লেখাটির মাধ্যমে তাদের দেখতে পেলাম। তাদের সুখ, দুঃখ আনন্দের বয়ান। লেখিকাকে শুভকামনা
সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটা লেখা পড়লাম।
আসলে মুল কথাহলো জীবনকে বোঝা না ভেবে
খাপ খাইয়ে নেয়া। জীবনে যুগে যুগে বৈচিত্র্য থাকবেই। সেটা শারীরিক বৈশিষ্ট্যেও আত্মপ্রকাশিত। ভালো লাগছে- এই মুশে তো সব খানেই রয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশও সমাজে
ও অন্যান্য দেশে তাদের জীবনের বৈচিত্র্যময় কর্ম এবং জীবনকে জীবনের মত( হয়তো বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ভিন্নভাবে) প্রকাশের এই প্রকাশ কল্পনারও অতীত। এটা অবশ্যই অনুসরণীয় হতে পারে ।কারণ জীবন তো জীবনই। প্রাণীকুলের মধ্যেও তো বৈচিত্র্য থাকে। মুশেদের এই সম্মানিত জীবন ব্যবস্হা তাদেরকে তৃতীয় লিঙ্গের অপবাদ থেকে রেহাই দিয়েছে। যা হয়তো স্বাভাবিক মানুষ হিসেবে আমাদের বিবেককেও দায়ী করে।
হয়তো তাদের সচরাচর দেখি না বলে আমরা ভাবি না। কিন্তু রাষ্ট্র ও সমাজের দায়িত্ব ডিস- অ্যাবল বাচ্চাদের মতই তাদের নিয়েও ভাবা।
তারাও আমাদের ভাইবোন। খুব কঠিন শোনালেও আমাদের ভাগ্যও তাদের মতই হতে পারতো।
ধন্যবাদ এত কঠিন লেখা উপস্হাপনে হাত দেবার জন্য এই গুণী লেখিকাকে। পাঠাভ্যাসই যার মূল কাজ,ঠিক আমাদের আহারের মতো।
আর প্যারিস ব্লগকে তো অবশ্যই ধন্যবাদ।
আমি এর সন্ধান পেয়ে খুবই আপ্লুত।
যদিও লেখাগুলো শক্তই বটে।
ধন্যবাদ।
অজানার শেষ থাকে না | আমাদের সমাজে এনাদের স্থান আজ ও অনেক নিচে, তবে বর্তমান সমাজ একটু হলে পরিবর্তন হচ্ছে| গভঃ এক্সাম বসতে পারছে (কিছু রাজ্য এখনো পাশে আসেনি) আবার অন্য কর্ম জীবনে অগ্রসর হতে পারবে |
আবার আমরা যখন কেউ এই ভূপৃষ্ঠে জন্ম নি তখন কিন্তু এনারা বাড়িতে এসে আদের সন্তানদের আশীর্বাদ করে যায়……..
একদিকে সমাজ তাকে দূর করছে অন্য দিকে আশীর্বাদ নিয়ে ঋণী করছে ||
লেকিকার লেখা পড়ে অনেক কিছু লিখে গেলাম, বেশ পক্ত হাতের লেখিকা || আপনি ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন ||