শত শত বছরের প্রাচীন ইতিহাস সমৃদ্ধ অর্থনীতি এবং উন্নত জীবনধারার এক সমৃদ্ধ নিদর্শন হলো যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরটি। বিশ্বের অন্যতম জনবহুল একটি শহর হিসেবে খ্যাত হলেও এর উন্নত জীবনধারা, শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রযাত্রা এবং কর্মসংস্থানের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ লন্ডন শহরের প্রতি আকৃষ্ট হয়।
যার ফলে প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজারো মানুষ নিজের আয়ের উৎস খুঁজতে কিংবা বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো শিক্ষার্থী নিজেদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারি জমায় লন্ডনে। তাই আজকের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো লন্ডন।
অবস্থান
যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন শহরটি প্রায় ২ সহস্রাব্দের পুরনো। ইতিহাস-ঐতিহ্যে পরিপূর্ণ এই শহরটি বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন শহর হিসেবে সর্বমহলে বেশ পরিচিত। যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি, সংস্কৃতি, পরিবহন-এর ক্ষেত্রে প্রধান কেন্দ্র হলো এই শহরটি। তাই ব্বৃরিটেনের বৃহত্তম মহানগর হিসেবে স্বীকৃত হলো এই শহরটি। লন্ডন শহরটি দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডের উত্তর সাগরের মোহনা থেকে ৫০ মাইল উজানে টেমস নদীর তীরে অবস্থিত।
বৈশিষ্ট্য
লন্ডন শহরের যদি কাঠামো বিবেচনা করা হয় তাহলে এর অভ্যন্তরীণ কাঠামো বেশ জটিল। অনেকগুলো জেলার সমন্বয়ে গঠিত এই শহরটি। তাই একটি ভূকেন্দ্রিক শহর হিসেবে বেশ পরিচিত। যা তারা স্টেট হিসেবে আখ্যায়িত করে। লন্ডনের স্টেটগুলোতে কিছু কিছু ক্ষেত্রে দুটি কিংবা তার অধিক শহর, মেয়র, ডায়োসিস, ক্যাথিড্রাল, চেম্বার অফ কমার্স, পুলিশ বাহিনী, অপেরা হাউস, অর্কেস্ট্রা এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
ইতিহাস
ইতিহাসবিদদের মতে, লন্ডন শহরটি ৩টি জেলা শহরকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। ১ম শতাব্দীর দিকে রোমান সম্প্রদায় টেমস নদীর তীরে এসে প্রাচীন বসতি নির্মাণ করেন। যা বর্তমানে স্কয়ার মাইল হিসেবে পরিচিত। এই শহরটিকে দক্ষিণ দিকের সাউথ-ওয়ার্কের উপশহরের সাথে একটি ব্রিজের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়াও, এর ঠিক এক মাইল উজানে বড় দক্ষিণামুখী বাকের দিকে অবস্থিত ওয়েস্টমিনিস্টার শহর। তবে এই তিনটি স্টেট-এর একত্রীকরণ এবং স্বতন্ত্র ক্ষমতা ছিল। যা ধীরে ধীরে লন্ডনকে ব্যবসা বাণিজ্যে ও অর্থনীতির কেন্দ্ররূপে প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
সাউথ-ওয়ার্ক শহরটি দ্য বোরাগ-এর মঠ, হাসপাতাল, সরাইখানা, থিয়েটার অব এলিজাবেথ রোজ (১৫৮৭), দ্য সোয়ান (১৫৯৫), বিশ্বের জনপ্রিয় গ্লোব (১৫৯৯) এর জন্য জনপ্রিয় ছিল।
ওয়েস্ট মিনিস্টার একটি মঠের পাশেই বেড়ে উঠেছিল যা একটি রাজকীয় প্রাসাদের অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে পরিচিত। এই প্রাসাদেই ব্রিটিশ রাজপরিবার কেন্দ্রিক চালিত আইনসভা, বিচারকার্য পরিচালিত হতো। এর পাশেই রয়েছে একটি বিস্তৃত পার্ক এবং ফ্যাশনেবল কিছুর ব্যান্ড শপ কেন্দ্রিক শপিং মল।
লন্ডন শহরটি তার প্রাচীনকালের সীমানা ধরে রাখার জন্য বেশ তৎপর ছিল। আর এই কারণে এই শহরের বিশ্বের অন্যান্য রাজধানী শহরগুলোর তুলনায় ব্যাপক জনপ্রিয়। প্রায় ১৭ শতাব্দীর প্রথম দশকে, উত্তর-দক্ষিণ বসতিগুলো একত্রিত হলেও তারা পৌরসভা গঠনে একত্রিত ছিল না। যার ফলশ্রুতিতে ওয়েস্টমিনিস্টারসহ অন্যান্য শহরগুলোকে নিজেদের কাঠামো গঠন করার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়। যার ফলশ্রুতিতে আজকের লন্ডন সময়ের সাথে সাথে সকলের কাছে পরিচিতি অর্জন করে।
ঐতিহ্য
শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রোমান সম্প্রদায়। তাদের ৪৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে পঞ্চম শতাব্দী পর্যন্ত শাসনকাল বিদ্যমান ছিল। তৃতীয় শতাব্দীতে এসে তারা শহরটিকে ‘লন্ডিনিয়াম’ নামক নামে নামকরণ করেছিলেন। প্রায় ৫০,০০০ জনসংখ্যা এবং বন্দর-এর বেশ প্রভাব থাকার কারণে এই শহরকে তখন রোমানরা এই নামে ভূষিত করেন।
কিন্তু পঞ্চম শতাব্দীর দিকে, রোমানদের পরাজিত করে শাসনভার অ্যাংলো স্যাকশন কেড়ে নেওয়ার সময় এই নাম বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। সেই সাথে অষ্টম শতাব্দীতে এসে তিনি এসেক্স-এর রাজধানী হিসেবে এই শহরকে প্রতিষ্ঠিত করেন।
নবম শতাব্দীর দিকে শহরটি বেশ কয়েকবার শত্রুপক্ষের আক্রমণের স্বীকার হয়েছিল। কারণ ডেনিশ সম্প্রদায় ইংল্যান্ডের এই অঞ্চলকে ঘিরে নিজেদের বসতি, ব্যবসা এবং আবাসনের মূল কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। কারণ এই শহর অর্থ, প্রাচুর্য, সম্পদ এবং ক্ষমতা ডেনিশ গ্রেট হেইতেন আর্মিকে বেশ আকৃষ্ট করেছিল। এই কারণে ৮৮৬ শতাব্দীতে রাজা আলফ্রেড এই অঞ্চলকে দখল না করার পূর্বে তিনি অঞ্চলটিকে অবরোধ করে রেখেছিলেন।
১০৬৭ সালে নরম্যানদের ইংল্যান্ড জয় করার পূর্বে এই শহরের নিয়ম-কানুন, আইন, অধিকারসমূহ ইংল্যান্ডের সেই সময়ের সদ্য মুকুট-প্রাপ্ত রাজা ইউলিয়াম ডিউক অফ নর্মান্ডি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ছিল। রাজা উইলিয়ামের সময়েই লন্ডনের বিখ্যাত স্থাপনা ‘টাওয়ার অফ লন্ডন’ প্রতিষ্ঠিত হয়।
১১৯৯ শতাব্দীর দিকে রাজা জন শহরের শাসনভার শক্তিশালী করার লক্ষ্যে শহরগুলোকে স্ব-শাসনের আওতাভুক্ত করে। সেই সাথে ১২১৫ সালের দিকে প্রতিবছর শহরগুলোতে আলাদা নির্বাচনের ব্যবস্থা করে।
প্রায় অনেক বছর ধরে ইংল্যান্ডে কোন রাজধানী ছিল না। কেন্দ্রীয় সরকারের যত প্রতিষ্ঠান রয়েছে সকল প্রতিষ্ঠানগুলো ওয়েস্টমিনিস্টার শহরে স্থানান্তরিত হয়। ফলে লন্ডনকে রাজধানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার ক্ষেত্রে এই সিদ্ধান্তটি বেশ প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছিল।
জনসংখ্যা
ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে জনবহুল এবং নগরকেন্দ্রিক শহর হিসেবে পরিচিত যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহর। প্যারিস, মেক্সিকো, টোকিও-এর মতো রাজধানীর তুলনায় লন্ডনের জনসংখ্যা প্রায় ৩ গুন বেশি। যুক্তরাজ্যের বেশ কিছু শহরের অনুপাতে লন্ডনের জনসংখ্যা অনেক বেশি।
১৮৯১ সালের মধ্যে মোট জনসংখ্যার তুলনায় ৫.৬ মিলিয়ন জনসংখ্যা বিদ্যমান ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে মাত্র ৩ মিলিয়ন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। যুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পর ২ মিলিয়ন সংখ্যা হ্রাস পায়। যা ১৯৮০ সালে ৬.৬ মিলিয়ন জনসংখ্যায় রূপান্তরিত হয়।
অত্যধিক ব্যয়বহুল জীবনধারা এবং অর্থ সংকট জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়ার কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অবসর সময় বৃদ্ধি, কর্মক্ষেত্রে সময় কমানো এবং অতিরিক্ত অটোমোবাইল-এর কারণে ধীরে ধীরে মানুষ এই শহরে কাজের প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে।
অত্যধিক মানুষ উন্নত জীবনযাত্রার কারণে শহর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে। শিল্পকারখানাগুলো নিজেদের ব্যয় কমাতে এবং জনবল পেতে অন্যত্র নিজেদের প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে নিচ্ছে। জনসংখ্যার ঘনত্ব কমাতে এবং সঠিক আবাসন ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে আবাসন কোম্পানিগুলো এগিয়ে এসেছে।
সংস্কৃতি
পারস্পরিক প্রতিযোগিতা, জীবনমুখী ভাবনা কিংবা অর্থনীতির উত্থান পতনের ক্ষেত্রে লন্ডন ব্যতিক্রমমুখী তার সংস্কৃতি চর্চাকে কেন্দ্র করে। তাই ব্যতিক্রমী সাংস্কৃতিক চর্চার জন্য এর পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠানসমূহ বরাবরই সাধারণ মানুষদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়। ব্রিটিশ রাজপরিবারের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে রয়েল আলবার্ট হল যা প্রতি গ্রীষ্মকালে বছরের সেরা সংগীত উৎসব ‘হেনরি উড প্রমেনার্ড’ নামক কনসার্ট আয়োজন করে। যা স্থানীয়দের কাছে ‘প্রমোস’ নামে পরিচিত।
এছাড়াও, গ্রেটার লন্ডন কাউন্সিল এবং লন্ডন কাউন্টি কাউন্সিল পৌরসভা একত্রিত হয়ে লন্ডনের ব্যবসায়িক এবং প্রশাসনিক কেন্দ্রে ওয়াটারলু নদীর পাশে গড়ে তুলেন ‘সাউথ ব্যাংক আর্ট কমপ্লেক্স’। এই কমপ্লেক্সের মধ্যে রয়েল ফেস্টিভাল হল, কুইন এলিজাবেথ হল, হাওয়ার্ডস গ্যালারি অন্যতম। এছাড়াও, এই কমপ্লেক্সে ন্যাশনাল ফিল্ম থিয়েটার, রয়েল ন্যাশনাল থিয়েটার বিদ্যমান রয়েছে।
এই হলের পাশেই ইম্পেরিয়াল ওয়ার মিউজিয়াম, দ্য লন্ডন অ্যাকুরিয়াম, দ্য লন্ডন আই অবস্থান করছে। তবে এখানেই শেষ নয় লন্ডনের সিটি কর্পোরেশন-এর উদ্যোগে বার্বিক্যানে নির্মাণ করা হয় স্কয়ার মল যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমার শক্তি-ক্ষমতা রোধক করে তৈরি করা হয়েছে। এই বারবাকিয়ান কনসার্ট সিনেমা হলে অবস্থিত আর্ট গ্যালারি, লাইব্রেরি, থিয়েটার এবং সেই সাথে লন্ডনের সিফোনি অর্কেস্ট্রা অবস্থিত।
প্রায় প্রতিটি সেন্টারের মধ্যে নিজেদের উৎসব এবং বিশেষ অনুষ্ঠানগুলো আয়োজন করা হয়। তবে অবশ্যই ইউরোপের কোন দেশের তরুণ অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা, গায়ক, চলচ্চিত্র নির্মাতাগণ এই সকল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করার খুব বেশি সুযোগ নেই। লন্ডন শহর এতটাই সংস্কৃতপরায়ণ যে জাতীয় কর্মসংস্থানের একটি বড় অংশজুড়ে বিরাজ করে সংস্কৃতি। তাই তালিকাভুক্ত করা আর্টগুলো প্রতি শুক্র এবং শনিবার প্রদর্শন-এর জন্য নির্ধারণ করা হয়।
লন্ডনের দর্শনীয় স্থানসমূহ
লন্ডন এমন একটি শহর, যে শহরের নাম শুনলেই কেবল আভিজাত্যের ছাপ লক্ষ্য করা যায়। আভিজাত্যে আর প্রাচুর্যে ঘেরা এই শহরে প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভ্রমণ-পিয়াসিরা ভ্রমণে আসে লন্ডনে। তাই ভ্রমণপ্রেমীদের সুবিধার্থে, লন্ডনের কিছু জনপ্রিয় এবং দর্শনীয় স্থান সম্পর্কে কিছু বিবরণ তুলে ধরা হলো।
দ্য লন্ডন আই (The London Eye)
দ্য লন্ডন আই’কে আধুনিক স্থাপত্যকলার এক অন্যতম নিদর্শন বলা হয়। প্রায় ৩৬০ ডিগ্রি এঙ্গেলে লন্ডন শহরের অসাধারণ ভিউ যে কেউ উপভোগ করতে পারবে। বিশ্বের সুউচ্চ বড় খিলানে ধরা দর্শনীয় একটি কেন্দ্র এটি।
লন্ডন আই থেকে পরিষ্কার আবহাওয়াতে শহরের ৪০ কিলোমিটার দূরের স্থাপনাও দেখা যায়। আর সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো এর মাধ্যমে আপনি ১৩৫ মিটার উচ্চতা পর্যন্ত উচ্চতায় উঠতে পারবেন। এছাড়াও বিগ ব্যান, বাকিংহাম প্যালেস, এবং হাউজ অফ পার্লামেন্ট দেখা যায় এর উপর থেকে।
এর চারপাশ ৩২টি পড দিয়ে সুবিন্যস্ত। যা লন্ডনের ৩২টি নগর পৌরসভার সংখ্যা নির্দেশ করে। একইসাথে সৌন্দর্য এবং আভিজাত্যকে কাছে থেকে দেখতে চাইলে এটি হতে পারে কাঙ্ক্ষিত একটি মাধ্যম।
মাদাম তুসো মিউজিয়াম (Madame Tussauds London)
লন্ডনের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে কাছে থেকে দেখতে চাইলে মাদাম তুসো মিউজিয়াম হতে পারে একটি উপযুক্ত স্থান। এর প্রবেশদ্বারেই দর্শনার্থীদের জন্য লাল গালিচা রয়েছে। তাই এখানে প্রবেশের মাধ্যমে এক ধরণের রাজকীয় ভাব অনুভব হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয়, স্বনামধন্য এবং গুণী ব্যক্তিদের সাথে পরিচয় ঘটবে এই স্থানে। অবাক হচ্ছেন? বিশ্বের সকল জনপ্রিয় ব্যক্তিত্বের মোমের মূর্তি স্থান পেয়েছে এই জাদুঘরে। আর এই মূর্তিগুলো এতটাই নিখুঁত যে জীবন্ত বলে ভ্রম হতে পারে যে কারোরই।
পুরো জাদুঘর ঘুরে যে কেউই শহরটির আজকের লন্ডন হয়ে উঠার জানা-অজানা অনেক ইতিহাস জানতে পারবে। প্রায় দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগতে পারে জাদুঘরটি ঘুরে দেখতে। তাই লন্ডনের পর্যটকদের কাছে আকর্ষণের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু হলো এটি।
ওয়ার্নার ব্রোস স্টুডিও (Warner Bros Studio)
মুভি লাভারদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ হলো এই স্টুডিও। ব্রিটিশ শৈল্পিকতা, কল্পনা এবং সৃষ্টিশীলতার অন্যতম নিদর্শন এই স্টুডিওটি। স্টুডিওটির ভেতরে প্রবেশের পর এর অসম্ভব সুন্দর স্থাপনায় মুগ্ধ না হয়ে উপায় নেই। এমনকি যে কেউই ফিরে যেতে পারে হ্যারি পটার কিংবা বিখ্যাত কোনো মুভির দৃশ্যে।
এই স্টুডিওতে বিখ্যাত হোগায়ার্টস গ্রেট ওয়াল এবং সেই সাথে ফরবিডেন ওয়াল উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও হগওয়ার্টস প্লাটফর্মে বসে দিয়া গোন এলে ভ্রমণে বেরিয়ে আসা যাবে এই স্টুডিও।
বাকিংহাম প্যালেস (Buckingham Palace)
সারা বিশ্বের অবশিষ্ট কয়েকটি রাজপ্রাসাদের মধ্যে অন্যতম হলো বাকিংহাম প্যালেস। গ্রীষ্মের সময়ে নির্দিষ্ট কিছু তারিখে বিশেষ করে নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের সময়ে দর্শনার্থীরা বাকিংহাম প্যালেস পরিদর্শন করার সুযোগ পায়। এই সময়ে তারা প্যালেসের প্রায় ১৮টি ষ্টেট রুম ঘুরে দেখার সুযোগ পায়, যা পুরোপুরি কেন্দ্রে অবস্থিত।
এই রুমগুলোতে রাজসিক আসবাবপত্র, রাজসিক জিনিসপত্র দেখে দর্শনার্থী তাদের জীবনধারা সম্পর্কে খানিকটা আঁচ করে নেওয়ার সুযোগ পায়। বিশ্বের জনপ্রিয় চিত্রকর্মের স্থাপনা রয়েছে এখানে।
দ্য রয়েল মিউস এবং কুইন্স গ্যালারি বাকিংহাম প্যালেসের মধ্যে অবস্থিত। তবে এই স্থাপনাতে সাধারণ দর্শনার্থী প্রবেশের জন্য আলাদা প্রবেশপথ রয়েছে। উভয় স্থাপনাই বছরের বেশিরভাগ সময় সাধারণ দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।
টাওয়ার অব লন্ডন (Tower Of London)
লন্ডন শহরের অন্যতম দর্শনীয় স্থাপনা হচ্ছে এইচ এম টাওয়ার অফ লন্ডন। এটি এক ধরণের দুর্গ যা প্রাচীনকালে রাজপ্রাসাদের পাশাপাশি কারাগার হিসেবে ব্যবহৃত হত। এইখানে দুর্গ দেখার পাশাপাশি ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ রয়েছে। জুন মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এই সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
Feature Image: lonelyplanet.com References: 01. City of London. 02. London. 03. London Attraction.