ইতালির অন্যতম মনোমুগ্ধকর শহরের নাম হলো ফ্লোরেন্স। রেনেসাঁর জন্মস্থান বলে খ্যাত এই শহর দেখতে ছবির মতো ঝকঝকে ও পরিপাটি। চমৎকার এই শহরটি স্থাপত্য এবং শিল্পকলার পাওয়ার হাউস হিসেবে পরিচিত যা যেই কাউকেই মুগ্ধ করবে। এখানে দেখার মতো অসংখ্য জাকঁজমক ও ঐতিহাসিক স্থান রয়েছে।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো শতাব্দী প্রাচীন ক্যাথেড্রাল ও মিউজিয়াম; যার মধ্যে বারগেলো গুচি গার্ডেন এবং বিখ্যাত মেডিসি পরিবারের প্রাক্তন প্রাসাদ। এই স্থানগুলো শুধু মাত্র দর্শনীয় স্থান নয় এর সাথে জড়িয়ে আছে অতীতের স্মৃতি রোমন্থন কাহিনী।
ইতালির এই ফ্লোরেন্স শহরটি আপনাকে কোন দিক দিয়ে হতাশ করবে না, শহরের অলিগলিতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে চিত্তাকর্ষক প্রাচীন সাম্রাজ্যের শৈল্পিক বিকাশ। তাই, ফ্লোরেন্স সবচেয়ে বেশি পরিদর্শন করা শহরগুলির মধ্যে অন্যতম।
প্রতি বছর প্রায় দশ মিলিয়ন পর্যটক ফ্লোরেন্স শহরটি ভ্রমণ করতে আসেন৷ ফ্লোরেন্স পরিদর্শন করার জন্য পর্যটকদের সবচেয়ে আনন্দদায়ক ঋতু হলো বসন্তের শেষের দিকে, যখন আকাশ নীল মেঘে ছেয়ে থাকে এবং সূর্য উজ্জ্বল হয় কিন্তু উত্তাপ ছড়ায় না।
জনসংখ্যা ও আয়তন
বহু পন্ডিত মনিষীর এই শহরকে ১৯৮২ সালে ইউনেস্কো কর্তৃক একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে ঘোষণা করা হয়। নান্দনিক এই ফ্লোরেন্স শহরটি ইতালির আর্নো নদীর তীরে অবস্থিত। ফ্লোরেন্স মধ্য ইতালির টাস্কানি অঞ্চলে রোমের উত্তর-পশ্চিম থেকে প্রায় ১৪৫ মাইল দূরে অবস্থিত।
ফ্লোরেন্স শহরটির গোড়াপত্তন হয় খ্রীস্টপূর্ব ৫৯ সালে; যা জুলিয়ান সিজার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই শহরকে ইউরোপীয় শহরের আতুরঘরও বলা হয়। ৩ লক্ষ ৮০ হাজার জনসংখ্যা নিয়ে ফ্লোরেন্স শহর গঠিত। চারদিকে পাহাড় বেষ্টিত এই শহরটির আয়তন প্রায় ১০২.৪১ বর্গ কিলোমিটারের বা ৩৯.৫৪ বর্গমাইল।
ইতিহাস
ফ্লোরেন্স শহরটি ইতিহাস ইতালির অন্যান্য শহরের চেয়ে আলাদা। একসময় এই শহর ইতিহাসের একটি অশান্ত রাজনৈতিক শহর নামে পরিচিত ছিল। তখন ছিল শক্তিশালী মেডিসি পরিবারের সদস্যদের শাসনামল। এই শহর মূলত ধর্মীয় এবং প্রজাতন্ত্রী বিপ্লব-এর অন্তর্ভুক্ত। ইতিহাস খুঁজে জানা যায়, এই শহর ১৮৭০ সাল পর্যন্ত ইতালি রাজ্যের রাজধানী ছিল।
তবে, ফ্লোরেন্স খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতাব্দীতে একটি রোমান সামরিক উপনিবেশ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর দীর্ঘ ইতিহাসে এটি একটি প্রজাতন্ত্র, টাস্কানির ডাচির একটি আসন এবং ইতালির রাজধানী (১৮৬৫ -৭০)ছিল। এই শহরের সাংস্কৃতিক পন্ডিত মনিষীদের মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত হলেন লিওনার্দো দা ভিঞ্চি, মিশেল অ্যাঞ্জেলো, দান্তে, ম্যাকিয়াভেলি, গ্যালিলিও এবং এর সবচেয়ে বিখ্যাত শাসক, মেডিসি পরিবারের প্রজন্ম।
ফ্লোরেন্স শহর জুড়ে রয়েছে শিল্প স্থাপত্য ও ভাস্কর্য। এছাড়াও, বিপ্লব ও ইতিহাসের শহর ফ্লোরেন্স যেখানে রয়েছে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা চোখ ধাঁধানো শতাব্দী প্রাচীন বড় বড় প্রাসাদ। এই প্রাসাদগুলোর গায়ে জড়িয়ে আছে নগরসভ্যতার অসংখ্য চমকপ্রদ কল্প কাহিনী। যে কারণে ভ্রমণ পিপাসুদের আগ্রহের তালিকায় এই শহরটির নাম থাকবেই। ফ্লোরেন্সে রয়েছে কয়েক ডজন চার্চ যা যেকোনো একটি ছোট শহরের পর্যটকদের কাছে আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।
স্বপ্নের এই শহরে রয়েছে বহু দর্শনীয় স্থান যা ইতালির সবচেয়ে পরিচিত আইকন হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে-পন্টে ভেচিও, মাইকেলেঞ্জেলোর ডেভিড, ব্রুনেলেসচির গম্বুজ। এছাড়া, পুরো শহরটি হলো ইতালীয় রেনেসাঁর একটি শোকেস, মানবতাবাদী শৈল্পিক আন্দোলন যা ইউরোপকে অন্ধকার যুগ থেকে ভেঙে দিয়েছিল। এখানে প্রাসাদ, গির্জা, জাদুঘর এবং ল্যান্ডমার্কের এমন অনন্য বর্ণাঢ্য সংগ্রহ রয়েছে; যা ফ্লোরেন্সকে ইউরোপের অন্যতম জনপ্রিয় শহর বানিয়েছে।
ফ্লোরেন্স শহর শুধু ইতিহাস, ঐতিহ্য বা সংস্কৃতির দিক দিয়ে নয় সঙ্গীত, স্থাপত্য, শিক্ষা, রন্ধনপ্রণালী, ফ্যাশন, দর্শন, বিজ্ঞান এবং ধর্মের দিক দিয়েও অনেক শহর থেকে এগিয়ে রয়েছে। ইতালির অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় ফ্লোরেন্স শহরে রয়েছে গর্ব করার মতো শিল্পের বিস্তৃত সংগ্রহ যা সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু।
শিল্প ও বাণিজ্য
ফ্লোরেন্স একটি মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় বাণিজ্যকেন্দ্র এবং সেই প্রাচীনকাল থেকেই অন্যতম ধনী শহর। ফ্লোরেন্স শহরটি পর্যটনকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। সুতরাং হাজার হাজার ফ্লোরেনটাইন শিল্প বানিজ্য প্রসার ঘটাতে শহরতলিতে কাজ করে। তারা নিজেদেরকে আসবাবপত্র, রাবার পণ্য, রাসায়নিক এবং খাদ্য উৎপাদনে নিযুক্ত রাখে।
যেমন ঐতিহ্যবাহী হস্তশিল্প—কাঁচের পাত্র এবং সিরামিক, লোহা, চামড়ার তৈরি পণ্য, মূল্যবান ধাতুর জিনিসপত্র, শিল্পের পুনরুৎপাদন করে। এমনকি এখানে কিছু উচ্চ-ফ্যাশনের পোশাক এবং জুতা উৎপাদন ও গুরুত্ব নিয়ে তৈরি করা হয়।
ফ্লোরেন্সর প্রধান ফ্যাশন কোম্পানিগুলির মধ্যে রয়েছে গুচি এবং ফেরগামো। এখানে বছরের অধিকাংশ সময় জুড়ে অসংখ্য মেলার আয়োজন হয়, যার মধ্যে আন্তর্জাতিক মেলা অন্যতম। এই মেলাগুলোতে প্রাচীন জিনিসের প্রদর্শনী, আন্তর্জাতিক ফ্যাশন শো এবং অন্যান্য কারিগরদের প্রদর্শনী করা হয়ে থাকে।
শুধু ইতিহাস ঐতিহ্য বা সংস্কৃতির দিক দিয়ে সমৃদ্ধ নয়। পঞ্চদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে ফ্লোরেন্স বস্ত্র শিল্প ও ব্যাংকিং খাতে ইউরোপের প্রাণকেন্দ্র হয়ে ওঠে। শহরের চারপাশের অঞ্চলে ছোট শিল্প উৎপাদনের উপর ভিত্তি করে একটি আধুনিক এবং গতিশীল অর্থনীতি রয়েছে।
ফ্লোরেন্সের আবহাওয়া
ফ্লোরেন্সের জলবায়ু পরিবর্তনশীল। তাই গ্রীষ্মকাল অত্যন্ত গরম এবং আর্দ্র থাকে আর শীতকালে শীতল এবং আর্দ্র থাকে। এই শহর চারপাশে পাহাড় দ্বারা বেষ্টিত। জুলাই এবং আগস্টের গড় মাসিক তাপমাত্রা প্রায় ৭৩ থেকে ৭৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (২৩ থেকে ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। দিনের গড় সর্বোচ্চ প্রায় ৯৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস); জানুয়ারি মাসে গড় মাসিক তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস)।
শীতকালে দিন খুবই কম সময় স্থায়ী হয়। যা মার্চের মাঝামাঝি সময়ে শেষ হয়। ফ্লোরেন্সের তুষারপাতের পরিবর্তে বৃষ্টি দেখা যায় এবং অপ্রীতিকরভাবে ঠান্ডা এপ্রিল পর্যন্ত থাকে। এবার ঘুরে আসি ফ্লোরেন্সের দর্শনীয় সব স্থানগুলো থেকে।
আর্নো নদী
ফ্লোরেন্সের শহরের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে আর্নো নদী অন্যতম। বৃহত্তম এই নদীটির আয়তন ২৪১ কিলোমিটার। ফ্লোরেন্স শহরের মধ্যে বয়ে যাওয়া আর্নো নদীর উপর বিখ্যাত পন্টে ভেচিও সেতু যা পুরো ইতালির শহরের মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো সেতু। এখানে শুধু ভ্রমণেই আনন্দ নয়, চাইলেই ইচ্ছে মতো কেনা-কাটা করার সুযোগও রয়েছে।
কারণ, আর্নো নদীর তীরের দক্ষিণ দিকে গড়ে ওঠা দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো কাঠের পণ্য, গয়না এবং ধাতব ফুলদানি। অন্যদিকে পশ্চিম প্রান্তে রয়েছে হাতে তৈরি রৌপ্যপাত্র, হাতে তৈরি জুতা এবং প্রাচীন কাচের পাত্রের মতো ঐতিহ্যবাহী ও নানাবিধ ঐতিহ্যবাহী সামগ্রী ভ্রমণের আনন্দকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে তোলে।
আর্নো নদী শহরের পানি সরবরাহ একটি সম্পদ হিসেবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এমনকি এই নদীর পানিতে কাপড় ধোয়া, পূর্ণ করা এবং রং করা সম্ভব হয়েছে, যার ফলে একটি বড় শিল্পের বিকাশ ঘটেছে।
ফ্লোরেন্স ক্যাথেড্রাল
ফ্লোরেন্সের ক্যাথেড্রাল অপরুপ সৌন্দর্যে বিস্তৃত যা মিস করা অসম্ভব। এর অপূর্ব, লাল গম্বুজ এবং গোলাপী, সবুজ এবং সাদা মার্বেল সম্মুখভাগের সাথে, এটি একটি শহরের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এর ভিতরটি কম বিস্তৃত হলেও, ভাসারি এবং জুকারির ফ্রেস্কো এবং ৪৪টি দাগযুক্ত কাচের জানালা আপনাকে মুগ্ধ করবে। ক্যাথেড্রাল-এর কমপ্লেক্স বিল্ডিংগুলো ইতালির সর্বশ্রেষ্ঠ শৈল্পিক সম্পদ সংগ্রহ; যা অপেক্ষাকৃত একটি ছোট এলাকায়।
কেউ যখন ব্যাপটিস্ট্রি, বেল টাওয়ার, ক্যাথেড্রাল এবং এর যাদুঘর ভ্রমণ করে তখন ইতালীয় রেনেসাঁর সেরা শিল্পীদের শিল্প ও স্থাপত্যের কিছু বিখ্যাত মাস্টারপিস দেখতে পায়। যেমন–ঘিবার্টি, ব্রুনেলেচি, ডোনাটেলো, জিওত্তো এবং মাইকেলেঞ্জেলোর অমর সব শিল্পকর্ম।
স্কোয়ারের চারপাশে হেঁটে মার্বেল-এর তৈরি বাহ্যিক জিনিসগুলির প্রশংসা করতেই হবে। এমনকি স্টেইনড-গ্লাসের শিল্পকর্মগুলিকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে দেখতে ভিতরে প্রবেশ করতে হবে।
উফিজি গ্যালারি
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় শিল্প জাদুঘরগুলির মধ্যে মুষ্টিমেয় উফিজিতে স্থান নিয়ে নিয়েছে। উফিজি গ্যলারি আদতে একটি অফিস। এখানে প্রাক্তন সরকারী অফিসগুলিতে রেনেসাঁর সময়কার শিল্পকর্মগুলো সংরক্ষন করে রাখা হয়েছে।
এর দুর্দান্ত সংগ্রহটি ১৭৪৩ সালে মেডিসির শেষ রাজ্যকে উপহার দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে রয়েছে কারাভাজ্জিওর আঁকা মেডুসা, বতিচেল্লির বিখ্যাত বার্থ অফ ভেনাস এবং তিতিয়ানের টাইটিলেটিং ভেনাস অফ আরবিনো।
উজিফি গ্যলারির নদীর ধারে রয়েছে বিস্তৃত বিশাল বিল্ডিং যা মেডিসি প্রাসাদগুলির মধ্যে একটি। কিন্তু এটি শুধু বাসস্থান হিসাবে নয়, বরং সরকারি অফিস, বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন এবং তাদের ক্রমবর্ধমান শিল্প সংগ্রহের অংশ হিসাবে তৈরি করা হয়েছিল।
এর সবচেয়ে সুন্দর স্থানগুলির মধ্যে একটি, অষ্টভুজাকার ট্রাইবুনা; বিশেষ করে ফ্রান্সেস্কো প্রাথম এখানে মেডিসির সবচেয়ে মূল্যবান পেইন্টিং এবং গহনা প্রদর্শনের জন্য কমিশন করেছিলেন। উফিজি গ্যালারিতে গেলে ফ্লোরেন্সের ১৪ থেকে ১৬ শতকের চিত্রশিল্পীরা কীভাবে পশ্চিমা শিল্পের চেহারা পরিবর্তন করেছিল তার স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
বোবলি গার্ডেন
বোবলি গার্ডেনে রয়েছে সৃজনশীল ও ঐতিহ্যের ছোঁয়া। অতীতে এটি ছিল ফ্লোরেনটাইন ইতালীয় রাজা নেপোলিয়নের প্রাক্তন বাড়ি। এই বাগানের রেনেসাঁ প্রাসাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস ১৪৫৮ সালের। এই বাগানটিতে ১৬ থেকে ১৯ শতক পর্যন্ত চীনামাটির বাসন, গহনা এবং শিল্পে ভরা অসাধারন স্থাপত্য ও ভাস্কর্য সংগ্রহ রয়েছে। এছাড়াও, বাগান জুড়ে রয়েছে ঝর্ণা, মূর্তি, এবং একটি গুহা, যা সম্পুর্ণ স্ট্যালাকটাইট এবং স্ট্যালাগমাইট দিয়ে খোদাই করা।
দর্শনীয় বাগান ছাড়াও হাঁটার জন্য রয়েছে প্রশ্যস্ত রাস্তা। হাঁটতে হাঁটতে চোখে পড়বে দৃষ্টিনন্দন রাজকীয় উদ্যান যা খুব সুন্দরভাবে ম্যানিকিউর করা। উদ্যানগুলি এতটাই নান্দনিক যা শহরের উপর ক্রমবর্ধমান সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করে।
এখানে প্রাসাদ নির্মাণের জন্য পাথর অপসারণ থেকে বাকি কোয়ারি গর্তে একটি অ্যাম্ফিথিয়েটার সবই বিদ্যমান রয়েছে। এর সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে কাফিহাউসের সোপান, এবং ক্যাসিনো দেল ক্যাভালিয়ারে মেডিসি এবং স্যাভয়সহ শাসক পরিবারের মালিকানাধীন চীনামাটির বাসনগুলির একটি সমৃদ্ধ সংগ্রহ রয়েছে।
পিয়াজ্জা দেলা সিনোরিয়া
পিয়াজ্জা দেলা সিনোরিয়ার বিস্তৃত চত্বরটি ১৪ শতাব্দী থেকে ফ্লোরেন্সের ক্ষমতার কেন্দ্র ছিল। এমনকি এটি বহু বছর ধরে ফ্লোরেন্সের রাজনৈতিক ও সামাজিক কেন্দ্রও ছিল বট। এছাড়াও, এটি স্থানীয়দের একটি প্রিয় মিলনস্থল।
এখানে একদিকে রয়েছে নেপচুন ফোয়ারা, অন্যদিকে পালাজো ভেচিও যা শহরের সরকারের আবাসন। এর ফুটপাথের নীচে এট্রুস্কান এবং রোমান দেহাবশেষ পাওয়া গেছে। তাই এই স্থান স্থানীয়দের কাছে আলাদা বিশেষত্ব বহন করে।
উফিজির প্রাচীরের বিপরীতে, যা পিয়াজ্জার একপ্রান্ত হতে তৈরি হয়েছে। একটি বহিরঙ্গন ভাস্কর্য গ্যালারি যেখানে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য অংশ রয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক স্বীকৃত হলো বেনভেনুটো সেলিনি শিল্পকর্ম। পিয়াজ্জা দেলা সিনোরিয়া এমন একটি সুপরিচিত জায়গা, যেখানে একজন পর্যটক হিসাবে শুধু ঘুরে বেড়ানো নয় এই স্কোয়ারে থাকা সমস্ত সুন্দর জিনিস উপভোগ করতে পারে।
পিয়াজ্জা দেলা সিনোরিয়া মূর্তিসহ সুপরিচিত এই স্থান শহরের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং গুরুত্বপূর্ণ মিথের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এছাড়াও, নেপচুনের ফোয়ারা, পালাজো ভেচিওর প্রবেশদ্বার, ডেভিডের প্রতিরূপ, বিখ্যাত ব্রোঞ্জের অশ্বারোহী মূর্তি এবং গুচি যাদুঘর দেখতে পাওয়া যায় এখানে।
পিয়াজ্জালে মাইকেলেঞ্জেলো
ফ্লোরেন্সের পিয়াজ্জালে মাইকেলেঞ্জেলোর উপভোগ করতে শ্রেষ্ঠ সময় বিকেল বা সন্ধ্যার প্রথম দিকে। কারণ এর প্রকৃতরুপ দেখতে পাওয়া যায় সুর্যাস্তের সময়। পর্যটন মৌসুমে এখানে উপচে পড়া ভিড় থাকে। এই জায়গা থেকে ফ্লোরেন্সের আদি ও অকৃত্রিম সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় বলেই বিশ্বাস করে স্থানীয়রা।
Feature image:pixabay.com References: 01. 22Top Rated Tourist Attraction in Florence, Italy. 02. What’s Florence Most Famous For? 03. Visit Florence.