প্রাচীন বিশ্বের সাত আশ্চর্য

837
0

প্রাচীন বিশ্বের সপ্তাশ্চর্য,রোমাঞ্চকর এই শব্দটি শুনে সবারই মনে অন্য রকম অনুভূতির কাজ করে। কারণ এই শব্দটির মধ্যেই আশ্চর্যজনক বিষয়টি লুকিয়ে আছে। প্রাচীন বিশ্বের সপ্তাশ্চর্য গুলো শুধুমাত্র কল্প কাহিনীই নয় বরং প্রযুক্তির দক্ষতায় এখন মোটামুটি তা সবারই জানা।

যুগ যুগ ধরে প্রাচীন বিশ্বের এই সপ্তাশ্চর্য  গুলো মানুষকে মুগ্ধ করেছে। বিশেষ করে এই সপ্তাশ্চর্য গুলোর নির্মাণশৈলী, ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের দ্বারা একের পর এক সভ্যতার অনন্য উদাহরণ হয়ে দাড়িয়ে আছে । বহুকাল থেকেই ইতিহাসবিদ বা প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাচীন বিশ্বের সপ্তাশ্চর্য গুলোর সন্ধান করে চলেছেন। আর এই আশ্চর্যজনক স্থাপনা বা অবকাঠামোর নির্মাণের পিছনে বহু ঘটনা রয়েছে।

প্রাচীন বিশ্বের এই অসাধারণ সপ্তাশ্চর্য গুলো  পৃথিবীর মধ্যেই কোনো এক আশ্চর্য সুন্দর স্থাপনা। ইতিহাসবিদদের ধারণা, গ্রিকরা ৭ সংখ্যাটিকে নিখুঁত মনে করতো, তাই ৭টি করে বিশ্বয়কর সপ্তাশ্চর্য নিয়েই তারা তালিকা তৈরি করে। তবে সারা বিশ্বের এই সপ্তাশ্চর্য গুলো  মুলত তিনটি যুগে বিভক্ত। যেমন; প্রাচীন যুগ, মধ্যযুগ এবং আধুনিক যুগের সপ্তাশ্চর্য।

তবে আজকে শুধু প্রাচীন যুগের সপ্তাশ্চার্য গুলোই খুঁজে বের করার চেষ্টা করি। যদিও এগুলোর বেশিরভাগই প্রাকৃতিক কারণে ধ্বংস হয়ে গেছে। আবার কোনো কোনোটি সগৌরবে এখনও টিকে আছে। আর কথা না বাড়িয়ে চলুন পৃথিবীর বুকে  এই অসাধারণ  প্রাচীন বিশ্বের সপ্তাশ্চর্য গুলো আদ্যপান্ত জেনে নেই।

১. গিজার মহা পিরামিড (Great Pyramid of Giza) 

Pyramid of Giza এর অবস্থান মিশরের গিজা নামক স্থানে নীল নদের পশ্চিম তীরে অবস্থিত। হাজার হাজার বছর ধরে মিশরের পিরামিড হলো মানুষের তৈরি এক বিস্ময়কর স্থাপনা। খ্রীস্টপূর্ব ২৫৮৪ থেকে ২৪৬৫ অব্দের মাঝামাঝি সময়ে গিজায় এই পিরামিডগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল।

গিজার পিরামিড,মিশর
গিজার মহাপিরামিড, প্রাচীন সভ্যতার অন্যতম সাক্ষী বহন করে।image source :Unplash.com

ইতিহাসবিদদের মতে, রহস্যময় প্রাচীন এই সপ্তাশ্চর্যটি  ৪,০০০ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল। এটি মানবসৃষ্ট বিশ্বের সবচেয়ে  উচুঁ অবকাঠামো।  পিরামিড নির্মাণ করতে পিরামিডের অভ্যন্তরের খননকাজ শুরু হয়েছিল  ১৮ শতকের শেষের দিকে। এমনকি প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুসন্ধানে আর ও জানা যায়, প্রায় ২০ লক্ষ ত্রিশ হাজার (২.৩ মিলিয়ন) চুনাপাথরের ইট দিয়ে এই গিজার পিরামিড নির্মাণ করা হয়েছিল।

প্রাচীন মিশরের ফারাও রাজবংশের রাজারা বেশ কিছু অদ্ভুত বিষয়ে বিশ্বাস করতেন। তাদের ধারণা ছিল পৃথিবীতে মানুষের বাস খুব স্বল্প সময়ের জন্য এবং  মৃত্যুর পরবর্তী জীবন হবে অনন্ত সুখের। আর এই ধারণা থেকেই মৃতদেহকে অক্ষত অবস্থায় সংরক্ষণ করতে তারা গিজার পিরামিড নির্মাণ করেছিল।তবে  স্থানীয় দের কাছে  এই রহস্যময় এই পিরামিড মিশরের সম্রাট ফারাও খুফু’র সমাধি  হিসেবে ও পরিচিত ।

পিরামিড প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের এমন একটি  নিদর্শন, যা  অক্ষত অবস্থায় এখন ও পৃথিবীতে সগৌরবে টিকে আছে । তবে দুঃখের বিষয় হলো কিছু দুর্বৃত্তরা পিরামিডের একাংশের সাদা পাথরগুলো কায়রোতে তাদের  বাড়ি বানানোর উপকরণ হিসেবে খুলে নিয়ে যায়।

২. চীনের মহা প্রাচীর (Great Wall China) 

প্রাচীন বিশ্বের সপ্তাশ্চর্য গুলোর মধ্যে চীনের মহা প্রাচীর হলো অন্যতম, যা মানব প্রকৌশলের এক অনন্য নিদর্শন। অতীতের এই সামরিক প্রতিরক্ষা স্থাপনা সপ্তাশ্চর্যের তালিকায় স্থান পেয়েছে। শুধু তাই নয় যুগের পর যুগ এই মহাপ্রাচীরটি চীনের ঐতিহ্য হয়ে দাড়িয়ে আছে।

চীনের মহা প্রাচীর
চীনের মহা প্রাচীর, এখন পর্যন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ দেয়াল। image source:unplash.com

ইতিহাসে বিদ্যমান রয়েছে চীনের মহা প্রাচীরটি  চীনের বিভিন্ন রাজ বংশের আমলে তৈরি করা হয়। মহাপ্রাচীরের সবচেয়ে প্রাচীন অংশ প্রায় ২৭০০ বছরের পুরনো এবং পুরো  এই স্থাপনাটি  উত্তর চীনের প্রায় ১৫ টি অঞ্চল জুড়ে গড়ে উঠেছে। তবে চীনের এই মহা প্রাচীর বলতে একক কোন স্থাপনা নয়,  বরং একাধিক  দেয়ালের একত্রে সমম্বয় করে গঠিত মহাপ্রাচীরটিই বা ( great wall of চায়না) নামে পরিচিত।

এই প্রাচীরটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে  পাহাড় এবং পর্বতের চূড়ার রেখা চিহ্নিত করে। আর  এটি উপর থেকে দেখতে সাপের মত দেখায়। এমনকি মহা প্রাচীরটি দৈর্ঘ্যের প্রায় এক-চতুর্থাংশ শুধুমাত্র নদী এবং পর্বত শৈল-শিলার মতো প্রাকৃতিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে গঠিত।  বাকি প্রায় পুরোটাই (মোট দৈর্ঘ্যের প্রায় ৭০ শতাংশ) প্রকৃত নির্মাণ করা প্রাচীর। আর বাকি ছোট অংশগুলি খাদ  বা পরিখা গঠন করা হয় ।

যদিও প্রাচীরের দীর্ঘ অংশগুলি এখন ধ্বংসস্তূপে বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে গেছে, তবুও এটি পৃথিবীর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দৈর্ঘ্য স্থাপনাগুলির মধ্যে একটি।  এই মহা প্রাচীর নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল চীনের উত্তর প্রদেশকে বাইরের শত্রুদের হাত থেকে রক্ষা করা।

৩. ব্যাবিলনের  ঝুলন্ত উদ্যান (Hanging Gardens of Babylon) 

ব্যাবিলনের  ঝুলন্ত উদ্যান প্রাচীন যুগের অন্যতম আকর্ষণীয় সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে একটি। প্রত্নতাত্ত্বিক অনুসন্ধানে জানা যায়,  অতিথের বিখ্যাত এই ঝুলন্ত  উদ্যানটি খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ সালে ইরাকের ইউফ্রেটিস নদীর তীরে নির্মিত হয়।

প্রাচীন বিশ্বের সাতটি আশ্চর্যের মধ্যে একমাত্র এই সপ্তাশ্চর্যটি যার অস্তিত্ব নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে এখন পর্যন্ত বিতর্ক রয়েছে।সবচেয়ে মজার বিষয় হলো কারো কারো মতে এই উদ্যানটি অদ্য ছিল কিনা তা নিয়েই সন্দেহ প্রকাশ করেন।

ব্যবিলনের ঝুলন্ত উদ্যাননানান প্রজাতির গাছ-পালা নিয়ে গড়ে উঠেছিল ব্যবিলনের ঝুলন্ত উদ্যানটি।image source:National Geographic.com

তবে যত বিতর্কই হোক, এই উদ্যানটির নাম শুনেনিন এমন লোক খুজে পাওয়া দুস্কর।বহু পন্ডিত, গবেষকের মতে ব্যবিলনীয় সভ্যতার অন্যতম দৃষ্টান্ত এই উদ্যানটি ৬০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নির্মানের পর  ৬২৬ খ্রিস্টাব্দেই ভূমিকম্পে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।

বহু বিতর্কিত  এই উদ্দ্যানটির নাম ঝুলন্ত উদ্যান হলে ও বাস্তবে মোটে ও ঝুলন্ত নয় বরং বিস্তৃত সমতল ভুমির মাঝে সুউচ্চ পর্বতের  স্তম্ভ সাদৃশ্য। যার উচ্চতা প্রায় ৮০ মিটার বা চল্লিশতলা ভবনের সমান উঁচু । ব্যবিলনীয় সভ্যতার অন্যতম দৃষ্টান্ত এই উদ্যানটি ভুমির সংস্পর্শ ছাড়া পাচঁ হাজার উদ্ভিদ নিয়ে বাগান গড়ে উঠেছিল।

কথিত আছে, ব্যবিলনীয় সভ্যতার অন্যতম দৃষ্টান্ত এই ঝুলন্ত উদ্যান সম্রাট দ্বিতীয় নেবুচাদনেজার তার স্ত্রীকে ভালবেসে উপহার হিসাবে তৈরি করেছিলেন। প্রাচীন লেখক ডিওডোরাস সিকুলাস এগুলিকে বহিরাগত উদ্ভিদ এবং প্রাণীজগতের নিজস্ব-জলবাহী প্লেন হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

৪. অলিম্পিয়ার জিউসের মূর্তি (Statue of Zeus at Olympia) 

Statue of Zeus at Olympia পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম এক আশ্চর্যজনক স্থাপত্য।অলিম্পিয়াতে জিউসের মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন মহান গ্রীক ভাস্কর ফিডিয়া।  যিনি খ্রিস্টপূর্ব ৫ ম শতাব্দীতে প্রাচীন বিশ্বের সেরা ভাস্কর হিসাবে পরিচিতি লাভ করেন ।

স্ট্যটু অফ জিউস
স্ট্যটু অফ জিউস প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের অন্যতম প্রতিক। image source:National Geographic

বলা হয়ে থাকে, কল্পিত দেবতা জিউসকে তার সিংহাসনে উদযাপন করার উদ্দেশ্যে একটি যোগ্য মূর্তি তৈরি করা হয়। মূর্তিটি  হাতির দাতঁ চামড়া,মূল্যবান রত্ন ও কাঠের কাঠামোর উপর নির্মিত হয়েছিল।

অলিম্পিয়াতে জিউসের মন্দিরে আগত উপাসকদের মধ্যে বিস্ময় জাগানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল।জিউসের মূর্তিটি  হাতুড়িযুক্ত সোনার পোশাক এ মোড়ানো  এবং ১২-মিটার লম্বা আর ৪ ফুট ব্যসার্ধ।এটি তৈরি করতে  সাতজন মিস্ত্রির আড়াই বছর সময় লেগেছিল।

জিউস তার ডান হাতে বিজয়ের দেবী নাইকির একটি মূর্তি ধারণ করেছিলেন। আর তার বাম হাতে একটি ঈগলের সাথে শীর্ষে একটি রাজদণ্ড ছিল।খ্রিস্টধর্মের উত্থান এবং ‘পৌত্তলিক আচার’ হিসাবে অলিম্পিক গেমস নিষিদ্ধ হওয়ার পরে মন্দিরটি ধ্বংসের মুখে পড়ে।  তাই মূর্তিটি কনস্টান্টিনোপলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল যেখানে পরবর্তীতে ৫ম বা ৬ষ্ঠ শতাব্দীতে ভূমিকম্পে এটি ধ্বংস হয়ে যায়।

৫. আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর (Lighthouse of Alexander) 

প্রাচীন বিশ্বের সপ্তাশ্চর্য গুলোর মধ্যে  আলেকজান্দ্রিয়ার বাতিঘর হল ঐতিহাসিক সভ্যতার আরেক বিস্ময়। বহু পুরনো এই বাতিঘরটি একটি প্রযুক্তিগত মাস্টারপিস হিসাবে বিবেচিত যা পরবর্তী সমস্ত বাতিঘরের জন্য মডেল হিসাবে কাজ করে। এটি মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ার বন্দরে অবস্থিত একটি দ্বীপের ফারোসে নির্মিত হয়েছিল।

আলোকজান্দ্রার ঘড়ি
আলোকজান্দ্রিয়ার ঘড়ি বা বাতিঘর নামে পরিচিত।image source :Unplash.come

খ্রিস্টপূর্ব ২৮০ অব্দের ৩য় শতাব্দীতে মিশরের আলেকজান্দ্রিয়ায় দ্বিতীয় টলেমীর রাজত্বকালীন সময়ে  এ লাইটহাউজটি  তৈরি করা হয়। এই বাতিঘরটি  প্রাচীন নাগরিকদের দ্বারা কেমেট নামে পরিচিত ছিল। এটি ২৮৫ এবং ৪৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে সম্পন্ন হয়েছিল।

১০৭  মিটার (৩৫০ ফুট) বেশি লম্বা যা একটি ৪০ তলা ভবনের সমান।  আশ্চর্যজনক হলেও সহজ সত্যি মিশরীয় উপকূলে এই বাতিঘর নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল নাবিকদেরকে সমুদ্র বন্দরের  দিক-নির্দেশনা দেয়া। তবে পরবর্তীকালে এটি ভ্রমণকারীদে গাইড করতে ব্যবহৃত হত।

কিন্তু ১৩২৩ খ্রিস্টাব্দে ভূমিকম্পে বাতিঘরটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। ধারণা করা হয়,  ১৪৮০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল এবং এর ধ্বংসাবশেষ গুলো এখনও ভূমধ্যসাগরের তলদেশে রয়েছে।

৬. আর্টেমিসের মন্দির (Temple of Artemis) 

Temple of Artemis খ্রিস্টপূর্ব ৫৫০ অব্দে ইফেসাস অঞ্চলে আর্টফেসির মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়। দুর্দান্ত সুন্দর  এই মন্দির টি নির্মাণে লিডিয়ার ধনী রাজা ক্রোয়েসাস এর অনেক অবদান রয়েছে এবং নির্মাণ ব্যয়ে কোন রকম কার্পণ্য করেনিন।মন্দিরের প্রতিটি দেয়াল জুড়ে বসানো ছিল নামি দামী মণি, মুক্তা, রুবি, পান্না আর হীরক সহ সব মহামূল্যবান রত্নরাজি।

টেম্পল আর্টমেসির মন্দির
টেম্পল আর্টমেসির মন্দির,যদি ও ভূমিকম্পে বেশিরভাগ  অংশই ধ্বংস হয়ে গেছে।image source

আশ্চর্যজনক এই কাঠামোটি নির্মাণ করতে ১২০ বছরের ও বেশি সময় লেগেছিল।ধারণা করা হয় ৫৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মন্দিরের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়।১৮০ ফুট চওড়া  ও ১২৭ টি স্তম্ভ নিয়ে গঠিত বিখ্যাত মন্দিরটির প্রত্যেকটির উচ্চতা প্রায়  ৬০ ফুট।

খ্রিস্টপূর্ব ৩৫৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হেরোস্ট্রাটাস নামে একজন ব্যক্তি মন্দিরে আগুন লাগিয়েছিলেন।আর একই রাতে মন্দিরটি পুড়ে যায়।পুরাতাত্ত্বিকদের গবেষণা মতে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে এই মন্দিরটি ধ্বংস হয়ে যায় এবং এটির ধ্বংসাবশেষ এখনও তুরস্কে পাওয়া যায়। যদি সেই সময়ের রাজা ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরটি পুনর্নির্মাণের প্রস্তাব দেন, কিন্তু ইফিসিয়ানরা তা প্রত্যাখ্যান করে।

৭. হ্যালিকারনেসাসের সমাধি মন্দির (Mausoleum of Halicarnassus) 

মোসোলিয়াম যার অর্থ জাঁকজমকপূর্ণ সমাধি।আর প্রাচীন এই সমাধিটি তুরস্কের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে অবস্থিত। খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০ অব্দে কারিয়া রাজ্যে নির্মিত হয়েছিল। প্রন্ততাত্ত্বিকদের ধারণা মতে, এটি পার্সিয়ান সাম্রাজ্যের গভর্নর মাউসোলোস  মৃত্যুর পরে সমাধি সংরক্ষনের উদ্দেশ্যে তার স্ত্রী নির্মাণ শুরু করেছিলেন।

হেলিকার্লানাসের মূর্তির
হেলিকার্নাসের মূর্তির একাংশ।image source :pexel.com

সমাধিটি প্রায় ৪১ মিটার (১৩৫ ফুট) উঁচু ছিল এবং বাইরের  জটিল বাহ্যিক খোদাই এবং  মূল্যবান শৈল্পিক  দিয়ে সজ্জিত ছিল। তিন স্তরের বিভক্ত সমাধিটির তৃতীয় স্তরটি ছিল সোজা, যা দেখতে বিশালাকৃতির পিরামিডের গম্বুজের   মতো । ১৩৫ ফুট  উচ্চতা বিশিষ্ট সমাধিটির শুধু মাত্র  গম্বুজের  উচ্চতাই ছিল ৫০ ফুট।

এই অসাধারণ সুন্দর নির্মাণ শৈলির জন্য প্রাচীন কালে  এই স্থাপনাটি অনেক সুনাম কুড়িয়েছিল । কয়েক শতাব্দী ধরে দাঁড়িয়ে থাকা এবং  ম্যাসেডোনিয়ার আলেকজান্ডারের আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকা সত্ত্বেও, একের পর এক ভূমিকম্প এর মূল স্তম্ভটি কে ধ্বংস করে দেয়।যা অবশিষ্ট আছে তা সমাধিটির  কয়েকটি বিক্ষিপ্ত টুকরো মাত্র ।

 

Feature Image: pinterest.com 
Source:

1. Seven wonder of the incient of world.
2. National geographic.com. 
3. Britanica.com.