দীর্ঘ ৫,০০০ বছর ধরে নারীর রূপে ভিন্ন মাত্রা যোগ করছে শাড়ি। উপমহাদেশের কয়েক মিলিয়ন নারী প্রতিদিন শাড়ি পরিধান করে থাকেন। একবিংশ শতাব্দীর নারীর পছন্দ হিসাবেও শাড়ির রয়েছে আকর্ষণীয় চাহিদা। প্রতিটি শাড়ির তৈরি এবং পরার পদ্ধতির পেছনে রয়েছে ঐতিহাসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং ব্যবহারিক কারণ ও গল্প। আজ শাড়ির বুননের সেই গল্পই তুলে ধরবো।
উৎপত্তি ও বিকাশ
দিল্লি ভিত্তিক ডিজাইনার সঞ্জয় গর্গের মতে,
শাড়ি সম্ভবত সবচেয়ে পুরানো সেলাইবিহীন পোশাক। এটি একই সাথে সবচেয়ে বহুমুখী, প্রচলিত এবং সমসাময়িক পোশাক।”
সংস্কৃতে ‘শাড়ি’ শব্দের অর্থ ‘কাপড়ের টুকরো’। কিন্তু এই উপমহাদেশের নারী এবং কিছু ক্ষেত্রে পুরুষ, যারা সহস্রাব্দ ধরে সিল্ক, তুলা বা লিনেন দিয়ে নিজেদের আবৃত রেখেছেন; তাদের জন্য এটি সাধারণ পোশাকের চেয়ে বেশি। শাড়ি জাতীয় গর্ব, ঐতিহ্যবাহী (এবং অত্যাধুনিক) নকশা এবং কারুশিল্পের প্রতীক।
শাড়ির প্রথম উল্লেখ পাওয়া যায় ৩,০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের হিন্দু স্তোত্রের বই ‘ঋগ্বেদে’। ১ম-৬ষ্ঠ শতাব্দী পর্যন্ত ভারতীয় ভাস্কর্যগুলোতে পেঁচানো পোশাক দেখা যায়। এটি ভারতের জলবায়ু এবং হিন্দু ও মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের জন্য উপযুক্ত ছিল।
শাড়ির অনুরূপ একটি পোশাকের উল্লেখ সিন্ধু সভ্যতায় পাওয়া যায় যা ২৮০০-১৮০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে আজকের উত্তর-পশ্চিম ভারতে বিকাশ লাভ করেছিল। এটি মূলত একটি থ্রি-পিস পোশাকের অংশ ছিল। যার মধ্যে একটি ছিল নিচের পোশাক, একটি বুকের অংশ এবং অপরটি কাঁধ এবং মাথা ঢেকে রাখার জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল।
বলা হয়ে থাকে, তুলা এবং তা বুননের শিল্প মেসোপটেমিয়ান সভ্যতা থেকে ভারতে এসেছে। তবে শুধু মেসোপটেমিয়া বা সিন্ধু উপত্যকায় তা সীমাবদ্ধ ছিল না। এটি মিশর, সুমের এবং অ্যাসিরিয়াতেও ছিল। এই সমস্ত সভ্যতার ধ্বংসাবশেষ এখন সিল এবং মূর্তিগুলোতে পাওয়া যায়। এই ধরনের বেশিরভাগ সভ্যতার নারীরা শরীরের উপরের অংশ খালি রেখে শুধু এই ধরনের কাপড় পরতেন।
শীতকালে কঠোর আবহাওয়া থেকে সুরক্ষার জন্য পশুর চামড়া বা পশমি শালের মতো পোশাক ব্যবহার করা হতো। শাড়ির বিকাশের পরবর্তী পর্যায়ে গ্রিকদের প্রভাবে বেল্ট ও পার্সিয়ানদের প্রভাবে প্রথম ভারতে সেলাই শিল্পের প্রবর্তন হয়। মধ্য এশিয়া থেকে অভিবাসী উপজাতি বাহিনী, রাজপুতানার মরুভূমি, পাঞ্জাব ও গঙ্গার সমভূমিতে বিভিন্ন আকারের জ্যাকেট এবং কোট পরার চল নিয়ে আসে।
মোগল যুগে নারীদের পোশাক আরও একটি বড় বিপ্লবের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল। মোগলরা সেলাইয়ের শিল্পকে নিখুঁত করেছিল। ফলে তারা যে সমৃদ্ধ শহরগুলো গড়ে তুলেছিল, সেখানকার অধিবাসীরা তাদের জীবনযাপনের ধরন এবং পোশাকের পদ্ধতি অনুকরণ করেছিল। শাড়ি তার আধুনিক রূপে আসে মোগল পরবর্তী সময়ে।
শাড়ি পরার পদ্ধতি
দিল্লি ভিত্তিক টেক্সটাইল ইতিহাসবিদ আরতা কাপুর চিশতির মতে, অঞ্চল, ফ্যাব্রিক, পোশাকের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ এবং পরিধানকারী সেদিন কী করছেন তার উপর নির্ভর করে শাড়ি পরার শতাধিক উপায় রয়েছে। তিনি এর উপর একটি ভিডিও সিরিজ তৈরি করেছেন।
ঐতিহ্যগতভাবে শাড়ি ব্লাউজ ছাড়া পরা হতো এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পেটিকোটের পরিবর্তে শাড়ির নিচে একটি লম্বা আন্ডারস্কার্ট পরা হতো। শাড়ি পরার আধুনিক নিয়মটি পার্সি সম্প্রদায় থেকে এসেছে। যেখানে পেটিকোট এবং ব্লাউজ এর সাথে কোমরের চারপাশে কয়েকবার পেঁচিয়ে পরা হয়। এটি ১৮৭০-এর দশকে জ্ঞানদানন্দিনী দেবীর মাধ্যমে বাঙালি নারীদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়েছিল।
শাড়ি ও ঐতিহ্য
শিক্ষাবিদ এবং বর্তমানে হংকং-এর বাসিন্দা আরাধনা চন্দ্রের কাছে, শাড়ি একটি পোশাকের চেয়ে অনেক বেশি। এটি তার পারিবারিক ইতিহাসের ভান্ডার এবং নিজের পরিচয়ের একটি অংশ।
শাড়ির প্রতি আমার ভালোবাসা আমার মায়ের কাছ থেকে এসেছে। এটি সম্ভবত একমাত্র পোশাক যা আমি তাকে পরতে দেখেছি।
বেঙ্গালুরু-ভিত্তিক সুগন্ধি প্রস্তুতকারক অহল্যা মাথানকে শাড়ি তার নিজের সম্পর্কের অনুভূতি দেয়। মাথান তার অসুস্থ দাদীর কাছ থেকে ৪৭টি কাঞ্জিভরম সিল্ক উপহার পেয়েছিলেন। তিনি নারীদের শাড়ি পরতে এবং তাদের গল্প শেয়ার করতে উৎসাহিত করার জন্য অঞ্জু মুডগাল কদমের সাথে ‘100sareepact’ নামে একটি সোশ্যাল মিডিয়া আন্দোলন শুরু করেন।
অঞ্চলভেদে শাড়ির রকম
তাঁতের শাড়ি (পশ্চিমবঙ্গ)
এই জনপ্রিয় শাড়ির ধরন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে এসেছে। এটি তুলো দিয়ে তৈরি এবং দৈনন্দিন পরিধানের জন্য উপযুক্ত।
বেনারসি (বারাণসী)
বারাণসীর গঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত শহরটিতে, তাঁতিরা পুরানো কাঠের তাঁতের উপর বেনারসি সিল্ক তৈরি করে। সাধারণত উজ্জ্বল লাল রঙে, ধাতব জরি সুতো দিয়ে ছাঁটা এই শাড়ি কনেদের কাছে অতি মূল্যবান।
বলা হয়ে থাকে যে, প্রতিটি টুকরো তৈরির পিছনে যে বিশদ বিবরণ রয়েছে তা এতই জটিল এবং বিস্তারিত যে কখনো কখনো একটি শাড়ি তৈরি করতে এক বছর সময় লাগতো।
ফুলকারি (পাঞ্জাব)
‘ফুলকারি’ বা ‘ফুলের কাজ’ করা এই শাড়ি তুলা বা খাদি মিশ্রিত। এর সুতার কাজটি ফুলের আকারে উজ্জ্বল রঙে তৈরি করা হয়।
বাঁধনি শাড়ি (গুজরাট)
শাড়ির নামটি ‘বন্ধন’ শব্দ থেকে এসেছে, যা এই ক্ষেত্রে শাড়িটি তৈরি করার সময় বাঁধা এবং ডাই করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। গুজরাটের পাশাপাশি রাজস্থানও এই শাড়ির জন্য জনপ্রিয়।
কাঞ্জিভরম (তামিলনাড়ু)
‘শাড়ির রানি’ বলে পরিচিত এই শাড়ি একটি বিশেষ বুনন কৌশল ব্যবহার করে এটিকে স্থায়ী করে তোলে। শাড়িতে সোনালি বুনন এবং ফুল, ময়ূর এবং হাতির মতো গাঢ়, রঙিন মোটিফ থাকে।
এর উৎপত্তি, তামিলনাড়ুর একটি মন্দির শহর কাঞ্চিপুরম থেকে। শাড়ির বর্ডার ডিজাইনের সাথে উজ্জ্বল রঙের বৈপরীত্য রয়েছে এবং আঁচল শাড়ির বাকি অংশ থেকে আলাদা।
সম্বলপুরি শাড়ি (উড়িষ্যা)
সাধারণত হাতে বোনা সম্বলপুরি শাড়িতে বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করা হয়, যেখানে শাড়ির জন্য ব্যবহৃত সুতোগুলো বোনার আগে রং করা হয়। উড়িষ্যার সম্বলপুরি শাড়িগুলো তাদের জটিল বুননে প্রতিফলিত টাই-ডাই শিল্পের জন্য বিখ্যাত, যা ‘ইক্কাত’ নামে পরিচিত।
বালুচরী শাড়ি (পশ্চিমবঙ্গ)
পশ্চিমবঙ্গে পোড়ামাটির মন্দিরের দেওয়ালে পাওয়া নকশার উপর ভিত্তি করে বালুচরী শাড়ির ছাঁট দেখা যায়। এটি মহান ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণ এবং মহাভারতের পৌরাণিক কাহিনিগুলোর উপর ভিত্তি করে নকশা করা হয়।
ঐতিহাসিক মসলিন (পূর্ব বাংলার সোনারগাঁও)
বর্তমান ইরাকি শহর মসুল থেকে মসলিন নামটি এসেছে। বলা হয় যে, মধ্যযুগের ভারতের ধনী, রাজ পরিবারগুলো দরবারের প্রধান তাঁতিদেরকে এমন সূক্ষ্ম মসলিন এবং সিল্ক তৈরি করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন যা একটি আংটির মধ্য দিয়ে যেতে পারে।
ফুটি কর্পাস নামক তুলা দিয়ে তৈরি খুব পাতলা সুতো দিয়ে মসলিন তৈরি করা হতো। হাতে বোনা মসলিনের জন্য ন্যূনতম সুতার সংখ্যা ৩০০, যা একটি থ্রেড স্পিনার থেকে কাটা হয়েছিল। যার ফলে মসলিন কাচের মতো স্বচ্ছ হয়। ১৭ শতকে মসলিন মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপে রপ্তানি করা হয়েছিল।
মোগলরা এমন চমৎকার মানের ফ্যাব্রিক পরতেন যে সারা বিশ্বে একে ‘কিনখোয়াব বা গোল্ডেন ড্রিম’ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল। ইউরোপে যারা এই ফ্যাব্রিকটি আমদানি করেছিল তারা এই নামটিকে ‘কিঙ্কোবে’ পরিণত করেছিল। যা আজ অবধি ইউরোপের অনেক ভাষায় প্রচলিত।
মসলিন সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়, এই বাণিজ্য কোম্পানিগুলোর নথি এবং সমসাময়িক ইউরোপের লেখকদের বর্ণনায়। ১৭৫৭ সালে ব্রিটিশরা পলাশির যুদ্ধে জয়ী হলে বাংলা থেকে ধীরে ধীরে মসলিন বিলুপ্ত হতে শুরু করে। ছয় বছরের চেষ্টার পর ২০২০ সালে হারানো মসলিনকে পুনরায় ফিরিয়ে এনেছে মসলিন তৈরির একটি প্রকল্প।
জামদানি (ঢাকা)
বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের শাড়ির মধ্যে জামদানি অনন্য। এই শাড়িটি একটি ভিন্ন বুনন পদ্ধতিতে কার্পাস তুলা থেকে তৈরি করা হয়। জামদানি বুননের সময় নকশা এবং প্যাটার্নগুলো তৃতীয় ধরনের সুতো দিয়ে করা হয়। এটি সাধারণত একটি সুতা দিয়ে বোনা হয়, যার থ্রেড কাউন্ট ৬০-৭০ থাকে।
মুঘল আমলে জামদানির জনপ্রিয়তা চরমে পৌঁছেছিল। তখন নারী-পুরুষ উভয়ই জামদানির তৈরি পোশাক পরতেন। ১৫-১৬ শতকে রাজদরবারেও জামদানি ব্যবহার করা হতো।
জামদানির আবেদন আজও অধরা। এর কারণ নকশায় জ্যামিতিক প্যাটার্ন। জামদানি শিল্প তার আগের গৌরব হারিয়ে ফেললেও ঢাকার রূপগঞ্জ, সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জের ১৫০টি গ্রাম এখনও এই শিল্পকে বাঁচিয়ে রেখেছে। জামদানি বুননের অনন্য পদ্ধতিকে ইউনেস্কো সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
জামদানি প্রধানত দুই প্রকার-হাফ সিল্ক জামদানি এবং সুতি জামদানি। বাংলাদেশের বিভিন্ন জামদানির মধ্যে কালকা, আংটি, শামুক, ময়ূর পেখম, কাজল লতা, সন্দেশ, পানপাতা ইত্যাদি বিখ্যাত।
কাতান শাড়ি (ঢাকা)
বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের শাড়ির মধ্যে বেনারসি ও কাতান তাদের নিজস্ব মহিমায় উজ্জ্বল। সবচেয়ে জনপ্রিয় এই দুটি শাড়ি সিল্কের বোনা। বিভিন্ন ধরনের মোটিফ একটি একক রং ব্যবহার করে পুরো শাড়ি তৈরি করে। রুপালি এবং সোনালি সুতা সব মোটিফে ব্যবহার করা হয়। এই শাড়িগুলো অন্যান্য ধরনের শাড়ির তুলনায় ভারী হয়ে থাকে, যা অভিনবত্ব এবং গাম্ভীর্যকে তুলে ধরে।
সিল্ক শাড়ি (রাজশাহী)
বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের শাড়ির তালিকায় রয়েছে ‘সিল্ক শাড়ি’ বা ‘রাজশাহী সিল্ক’। রাজশাহীর সিল্ক খুবই সূক্ষ্ম ও নরম। এই শাড়ির সুতাকে পিউপা বলা হয়, যা মালবেরি সিল্ক থেকে আসে। সাধারণত তিন ধরনের সিল্ক থাকে: মালবেরি সিল্ক, ইরি (বা ইন্ডি) সিল্ক এবং তসর সিল্ক। জটিলভাবে ডিজাইন করা মালবেরি সিল্ক বা তসর সিল্ক সাধারণত উৎসবে পরা হয়।
সুতি শাড়ি (পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও টাঙ্গাইল)
কর্মক্ষেত্রে, বাড়িতে বা ভ্রমণের সময় বেশিরভাগ নারীই সুতির শাড়িতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। বাংলাদেশে পাবনা, সিরাজগঞ্জ এবং টাঙ্গাইলে তাঁতে বোনা সুতির শাড়ি উৎপাদিত হয়। তা ছাড়া ঢাকা ও কুমিল্লায়ও অল্প পরিমাণে সুতি শাড়ি উৎপাদিত হয়। টাঙ্গাইলের সুতির শাড়ি বাঙালি নারীদের কাছে সুপরিচিত এবং জনপ্রিয়।
মণিপুরি শাড়ি (সিলেট, মৌলভীবাজার)
মণিপুরি নারীরা তাদের হাতে-তাঁতে বোনা কাপড়ের জন্য বিখ্যাত। তাদের নিজস্ব তাঁত রয়েছে। বাংলাদেশে, সিলেট, শ্রীমঙ্গল এবং মৌলভীবাজার এলাকা জুড়ে মণিপুরি শাড়ি বোনা হয়। আরামদায়ক এবং হালকা ডিজাইনের এই শাড়িটি মূলত এর স্বতন্ত্রতার কারণেই জনপ্রিয়।
অনলাইন রিটেলার ‘ইন্ডিয়ান সিল্ক হাউস এজেন্সির’ চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার দর্শন দুধোরিয়া বলেন,
প্রতিটি শাড়িরই সমাজ এবং তার চারপাশের মানুষদের নিয়ে একটি গল্প থাকে৷
টেক্সটাইল, অন্য সব কিছুর মতোই, সময়ের সাথে সাথে বিকশিত হতে থাকবে। শুধু এর পুনরুজ্জীবন প্রয়োজন। একটি শাড়ি একটি জীবন্ত শিল্পের অংশ। এটি একটি সমগ্র উপমহাদেশের ইতিহাস, এর কারিগরদের দক্ষতা এবং পরবর্তী প্রজন্মের স্মৃতিকে ধারণ করে। সময়ের সাথে এর পরিবর্তন হবে, কিন্তু এর চাহিদা রয়ে যাবে আজীবন।
Feature Image: www.indoindians.com References: 01. The-Story-of-the-Sari-in-India. 02. History-Sari-Ancient-India. 03. THE-ORIGIN-OF-THE-SAREE. 04. Most-Popular-Sarees-in-the-World. 05. Types-Sarees-Bangladesh.