এখন অবধি ২০২৩ সালের সেরা ৫টি গ্যাজেট

351
0
Image Sources: Pixabay

গ্যাজেট নিয়ে আমাদের আজকের এই গল্প। আজ থেকে ২০-৩০ বছর আগেও কী কেউ ভাবতে পেরেছিল স্মার্টওয়াচ কিংবা হাতের মোবাইল ডিভাইস এত উন্নত হবে? ইলেকট্রিক ব্রাশ থেকে শুরু করে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার জীবনের সবখানে এখন উন্নতমানের গ্যাজেটের দেখা পাবেন। 

ডোরামনের গ্যাজেট বলতে এখন আর অবিশ্বাস্য কোন বস্তু নয় বরং বাস্তবে তার কিছু না কিছু দেখা মিলে যাচ্ছে। আমাদের জীবনযাত্রাকে কত সহজ করে দেয় এই সব গ্যাজেট। হাতের হাত ঘড়ি কিংবা মোবাইল ফোন অথবা ডিজিটাল রিডার সব কিছু আমাদের জীবন আজকে সেরা ৫ গ্যাজেট নিয়ে কথা বলব। 

আমাদের চারপাশে প্রতিনিয়ত এত চমৎকার গ্যাজেট ম্যানুফ্যাকচার হচ্ছে, সবগুলো মানুষের সময় যেমন বাঁচিয়ে দিচ্ছে, কমিয়ে দিচ্ছে কষ্ট, দিচ্ছে আরাম। কাজে কর্মে আসছে বেগ। সবকিছুর মধ্যে থেকে সেরা ৫ গ্যাজেট বেছে নেয়া দুষ্কর এবং দুঃসাধ্য। তবুও চলুন দেখে আসি ২০২৩ এর জন্য সেরা ৫ গ্যাজেট কী হতে পারে।

অ্যাপেল ওয়াচ আল্ট্রা 

২০১৫ সালে অ্যাপেল প্রথমে বাজারে নিয়ে আসে তাদের স্মার্টওয়াচ। এর ধারাবাহিকতায় এসেছে অ্যাপেল ওয়াচ আল্ট্রা। ২০২২ সালে বাজারে আসে এই সর্বাধুনিক স্মার্টওয়াচ, প্রায় ১৮ ঘন্টার ব্যাটারি ব্যাকআপ দিতে পারবে এই ডিভাইস। কোন কোন ক্ষেত্রে এটি ৩৬ ঘন্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দিতে সক্ষম।

ডিজাইন এবং ফিচার থেকে শুরু করে বর্তমানে এটা সবচাইতে বেশি জনপ্রিয় এবং অ্যাথলেট, স্কুবা ড্রাইভার এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় মানুষের জন্য। স্কুবা ডাইভিং এর জন্য আছে আলাদা অ্যাপস, আছে ফ্রি ডাইভিং অ্যাপস, আধুনিক রিডিজাইন্ড কম্পাস এবং আরো অনেক দুর্দান্ত ফিচার। 

আগের ফিচারগুলো আরো বেশ উন্নত এখন, যেমন টাইটেনিয়াম জেস, ডুয়েল ফ্রিকুয়েন্সিসহ জিপিএস। এছাড়া হার্ট রেট মনিটর থেকে শুরু করে অক্সিজেন লেভেল পরিমাপ, ইমার্জেন্সি কল করার অপশন, তাপমাত্রা সেন্সরসহ সব সেন্সর পাবেন। যদি আপনি অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় হোন, তাহলে অনায়াসে টাকা জমিয়ে এটা কিনে ফেলতে পারেন। 

Image Sources: Pixabay

অ্যাপল এয়ারপড জেন ৩

প্রতি বছরের মাঝামাঝিতে অ্যাপেল তাদের নিত্য নতুন গ্যাজেট নিয়ে আসে, পুরানো ডিভাইস আবার নতুন কিছু। ২০১৬ সালের ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালে বাজারে আসে অ্যাপেলের এয়ার পড ৩। একবার চার্জ দিলে ৬ ঘন্টা শুনতে পাবেন গান, কথা বলতে পারবেন ৪ ঘন্টা। আছে ঘাম এবং পানি রেজিস্ট্যান্ট ব্যবস্থা। একবার কিনলে ২ থেকে ৩ বছরের বেশি টিকে যেতে পারে।

চার্জিং কেইস এর মাধ্যমে ফাস্ট চার্জিং এর ব্যবস্থা। লাইটিং চার্জিং কেস এর সাথে আসা এয়ারপডে পাবেন ৩০ ঘন্টা লিসেনিং টাইম এবং ২০ ঘন্টা টক টাইম। প্রায় ৩০.৭৯ মিমি পর্যন্ত কানেকশন পেতে পারে। অডিও টেকনোলোজিতে পাবেন অ্যাপেলের সর্বাধুনিক হাই এক্সকারশন ড্রাইভার, রেঞ্জ এমপ্লিফায়ার। 

অ্যাপেলের ম্যাকবুক, আইপড, ওয়াচ, আইফোনসহ সবকিছুর সাথে অনায়াসে এটি ব্যবহার করতে পারবেন। নয়েজ রিডাকশনের সাথে এবং এইচ ১ হেডফোন চিপের সাথে আপনার দৈনন্দিন এক্সপেরিয়েন্স হবে দুর্দান্ত।   

Image Sources: Pixabay

স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোল্ড ৪ 

স্যামসাং এর সবচাইতে দামী ফোন সম্ভবত এটি। ২,০০,০০০ এর বেশিবার এটাকে ফোল্ড করে খোলা হয়েছে। কোন ত্রুটি দেখা যায়নি। ওয়াটার রেজিসট্যান্ট এই ফোন স্যামসাং গ্যালাক্সি যেড ফোল্ড ৪, হলো ৪র্থ এডিশন। ইলেকটিক বা ই-সিম বা ডুয়েল ন্যানো সিম ব্যবহার করতে পারবেন। ডিসপ্লে সাইজ ৭.৬ ইঞ্চি। ব্যাক ক্যামেরা দুর্দান্ত কারণ এখানে আছে ৫০, ১০ এবং ১২ এম পি এর ক্যামেরা। 

সে তুলনায় ফ্রন্ট ক্যামেরা কিছুটা কম মেগা পিক্সেলের, মাত্র ৪ এম পি। র‍্যাম ১২ জিবির, রম ১ টেরাবাইট পর্যন্ত হতে পারে।  তবে মাইক্রোফোনের জ্যাক নেই, রেডিও নেই, মাইক্রো এসডি স্লট নেই বলে কিছুটা পিছিয়ে পড়তে পারে। তবে এর ভালো দিক অনেক বেশি বলেই মানুষের আগ্রহের তালিকায় আছে। স্যামসাং এর একটি বিশেষ ফিচার গোল ডি ই এক্স।

এটির মাধ্যমে এই ফোল্ডিং ডিভাইসটি মিনি ল্যাপটপে পরিণত করতে পারবেন। এস পেন সাপোর্ট করে এবং নোটপ্যাডেও পরিণত হতে পারে হাতের এই ছোট্ট মোবাইলটি। 

Image Sources: Istock

ডিজেআই অসমো মোবাইল ৬ 

ক্যামেরা ইকুইপমেন্ট হিসেবে ইতোমধ্যে বেশ নাম করে ফেলেছে তারা। ড্রোন, মোবাইল এক্সেসরিজ তৈরিতে বেশ এক ধাপ এগিয়ে আছে ডিজেআই। ডিজেআই অসমো মোবাইল ৬ হলো, স্মার্টফোনের গিম্বল। এটির প্রস্তুতকারক টেক জায়ান্ট কোম্পানি অ্যাপেল।  

ছবি তোলা বা ভিডিও করার সময় স্থির রাখা কতটা জরুরী সে আর বলে দেয়া লাগবে না। যখন হেঁটে যাচ্ছেন, দৌড়াচ্ছেন, ড্রাইভিং করছেন বা যেকোন কাজ করছেন যাতে নড়াচড়া করবেন, এটি আপনার ভিডিও বা ছবি তুলতে সাহায্য করবে, ব্লার হয়ে যাবে না।

অবজেক্ট নড়ে ছবি কিংবা ভিডিও হবে না অন্যরকম। প্রায় ৩০৯ গ্রামের এই ডিভাইসে আছে ট্রাইপড, পাওয়ার কেবল। ফেস ডিটেকশন, স্টিল ফটোস, ভিডিও তুলতে পারবেন অনায়াসে। প্যানারোমা, স্লোমো ভিডিও, টাইমল্যাপ্স তৈরিতে এই ইকুইপমেন্ট এর তুলনা হয় না। তাই ভ্লগার, ফটোগ্রাফারদের জন্য অন্যতম সেরা সহায় হলো এই গ্যাজেটটি। এটির ব্যাটারি লাইফ ৬ থেকে ৭ ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।  

Image Sources: Pixabay

আমাজন কিন্ডল স্ক্রাইব

যারা বই পড়তে ভালোবাসেন, তারা কম বেশি সবাই জানেন আমাজনের এমাজিং গ্যাজেট কিন্ডল এর কথা। ২০০৭ সাল থেকে পাঠক মহলে বহুল আলোচিত এবং ব্যবহৃত এই ডিভাইস দেখতে নোটপ্যাডের মতো। এতে আপনি যেকোন স্থানে বই পড়তে পারবেন। সফটকপি বইগুলো কিনতে পারবেন আমাজন স্টোর থেকে, উপরন্তু কিছু ফ্রি বইও আছে।  

কিছুদিন আগে আমাজন কিন্ডল বাজারে এনেছে কিন্ডল স্ক্রাইব। এই ডিভাইসে আপনি হাজার হাজার বই সংরক্ষণও করতে পারবেন আগের মতোই, সাথে নিতে পারবেন প্রয়োজনীয় নোটস, তৈরি করতে পারবেন দরকারি জার্নাল। কাগজ কলমের ব্যবহারের মতোই অভিজ্ঞতা হবে এই স্ক্রাইবে। তবে হ্যাঁ আপনার হাতে লেখা টেক্সটগুলো এখনই সফট কপিতে পরিণত করতে পারবে না স্ক্রাইব। 

তবে এইগুলো আপডেট এর কাজ চলছে। অনেক ক্ষেত্রে কিন্ডল ওয়াটার প্রুফ হলেও স্ক্রাইব এখনও ওয়াটারপ্রুফের তালিকায় নাম লেখাতে পারেনি। তবে আশা করা যায়, সে দিন খুব বেশি দূরে না যেদিন স্ক্রাইবও কিন্ডলের মত জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। বই পড়ার সেরা সঙ্গী হবে। 

Image Sources: Pixabay

উপরে উল্লেখিত গ্যাজেট ছাড়াও আরো হাজার খানেক জীবন সহজ করে দেয়া গ্যাজেট আছে। যেমন ভ্যাকুয়াম ক্লিনার থেকে শুরু করে ডিশওয়াশার। কমান্ড দিলে তৈরি হয়ে যাবে রুটি কিংবা পিঠে। আছে এআই চালিত রোবট কিংবা গাড়ি। 

আজকাল মুখ থেকে শব্দ বের হবার সাথে সাথেই কাজ সমাধা হয়ে যায়। জীবনকে সহজ করে দিচ্ছে এরা এটা ঠিক তবে, অপব্যবহার যেন আমাদের কোন ক্ষতি না করে কিংবা আমরাই যেন অতি ব্যবহার না করে ফেলি তা লক্ষ্য রাখতে হবে।

 

 

Feature Image: pinterest.com 
References: 

01. 10 Futuristic Gadgets. 
02. Future Technology Cool Gadgets.