অনলাইনে সফল হওয়ার জন্য ব্র্যান্ডগুলিকে তাদের ভিন্নধর্মী চাহিদা এবং আগ্রহের ভিত্তিতে তাদের ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছানোর উপর গুরুত্ব দিতে হয়। সাম্প্রতিককালে ই-কমার্স খাত এই পরিবর্তনগুলি অনুভব করেছে।
গত কয়েক বছরে ই-কমার্স সেক্টরের প্রচুর প্রসার হয়েছে এবং আরও ব্র্যান্ড তাদের প্রত্যাশিত ক্রেতাদের কাছে তাদের পণ্য ও পরিষেবাগুলি বিক্রি করার জন্য অনলাইনে পথ তৈরি করছে।
আর এরকম একটি ই-কমার্স জায়ান্ট হলো (Amazon) আমাজন। যা বিশ্বের বৃহত্তম অনলাইন খুচরা বিক্রেতা এবং উন্নত ক্লাউড পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। কিন্ত ই-কমার্স সাইট হিসেবে কিভাবে আমাজন দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠলো তা নিয়েই আজকের এই লেখা।
ই-কমার্স সাইট আমাজনের পরিচয়
আমাজন প্রথম এবং সর্বাগ্রে একটি মার্কেটপ্লেস। এটি বিশ্বের বৃহত্তম অনলাইন রিটেইল ওয়েবসাইট এবং বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে মূল্যবান রিটেইলার হিসাবে স্থান পেয়েছে। মার্কিন ধনকুবের জেফ বেজোস এই কোম্পানিটি ১৯৯৪ সালের ৫ জুলাই ওয়াশিংটনের সিয়াটলে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ৩০ বছর বয়সী বেজোস চাকরি ছেড়ে এই কোম্পানি চালু করেন যা আজ বিশ্বজুড়ে প্রতিষ্ঠিত।
প্রথমে আমাজনকে মূলত বই বিক্রির জন্য অনলাইন মার্কেটপ্লেস হিসাবে ডিজাইন করা হয়েছিল। তবে পরবর্তীতে ভিডিও গেম, ইলেকট্রনিকস, আসবাবপত্র, খাবার এবং আরও অনেক পণ্য বিস্তৃত পরিসরে সংযোজিত হয়েছে। আজ আমাজনের অনেকগুলি সহযোগী প্রতিষ্ঠান রয়েছে এবং রিটেইলারের বাইরেও বিস্তৃত পরিষেবা দিচ্ছে। যার মধ্যে কিন্ডল, ই-বুক এবং তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডের ইলেকট্রনিক পণ্য রয়েছে৷ পাশাপাশি এটি বিশ্বের বৃহত্তম ক্লাউড পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানও বটে।
বর্তমানে আমাজন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি শিল্পখাতের বড় পাঁচটি কোম্পানির মধ্যে একটি। কোম্পানিটি ফেসবুক, মাইক্রোসফট, অ্যাপল এবং গুগলের পাশাপাশি স্থান পেয়েছে। এছাড়াও এটি বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচিত এবং বর্তমানে অনলাইন কেনাকাটা করার পদ্ধতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে।
কীভাবে আস্থার প্রতীক হয়ে উঠলো?
অনলাইন কেনাকাটায় বিশ্বব্যাপী আস্থার নাম আমাজন। আমাজন তার সাংগঠনিক দক্ষতা এবং পণ্য ও পরিষেবার বিস্তৃত পরিসরের মাধ্যমে এমন অনেক কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যার জন্য আজকের এই পর্যায়ে আসতে পেরেছে।এরকম কিছু পদক্ষেপ হলো:
১. কোয়ালিটি সম্পন্ন পণ্য সরবরাহ:
আমাজনের উপর মানুষের আস্থা বাড়ার প্রথম কারণ হলো মানসম্পন্ন ও আসল পণ্য সরবরাহ করা। কারণ যেকোনো ব্যবসার প্রাণ হলো ভালো মানের পণ্য বা সেবা। যদি দাম একটু বেশিও হয় তারপরেও গ্রাহক ভালো মানের পণ্যটি হাতে পেলে অতিরিক্ত দামের কথা ভুলে যাবে।
অনেকসময় দেখা যায় বড় বড় ব্র্যান্ড যারা মানসম্পন্ন পণ্য উচ্চ মূল্যে বিক্রি করে তাদের মতোই কিন্তু নিম্নমানের নকল পণ্য বাজারে পাওয়া যায়। এসব কারণে আমাজন তার ট্রান্সপারেন্সি এবং প্রোডাক্ট কনট্রোল প্রোগ্রাম চালু করেছে। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে গ্রাহকরা একটি ট্রান্সপারেন্সি কোড সিস্টেমের মাধ্যমে আসল পণ্য পান। আর বিক্রেতারাও তাদের পণ্য নথিভুক্ত করে।
নিবন্ধিত ব্র্যান্ডগুলি বা বিক্রেতারা তাদের প্রতিটি পণ্যের জন্য ট্রান্সপারেন্সি কোড পায়। শিপিংয়ের সময় আমাজন নিশ্চিত করে যে কোডগুলি শুধুমাত্র মানসম্পন্ন ব্র্যান্ডের পণ্য পাঠানোর জন্য স্ক্যান করা হচ্ছে। গ্রাহকরা তাদের ট্রান্সপারেন্সি অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে প্রাপ্ত পণ্যটি খাঁটি কিনা তা পরীক্ষা করতে পারেন।
এছাড়া পণ্যটির কোড স্ক্যান করলে সঠিক দাম এবং উৎপাদন তারিখ,কোম্পানির নাম ইত্যাদি তথ্য পাওয়া যায় যা নকল পণ্যতে থাকে না। গ্রাহক প্রতিটি সঠিক পণ্যের জন্য একটি সবুজ চেকমার্ক দেখতে পারে। পণ্য সরবরাহের এমন পলিসির জন্য আমাজনের উপর আস্থা ও বিক্রয় বাড়ছে।
২. ভালো মানের ওয়েবসাইট:
যেহেতু আমাজন ই-কমার্স সাইট আর ই-কমার্স মানেই ওয়েবসাইট কেন্দ্রিক ব্যবসা। তাই এক্ষেত্রে আমাজনের সফলতার অন্যতম জিনিসটা হলো ভালো ওয়েবসাইট। তাদের ওয়েবসাইটে কেউ ভিজিট করলে যেন সব কিছু সহজে হাতের কাছে পায় (বিশেষ করে পন্য কেনার সময় পন্যবিষয়ক যাবতীয় তথ্য, মূল্য ইত্যাদি বিষয়) তেমন করেই সাজানো হয়েছে।
এছাড়া ওয়েবসাইটে গ্রাহক প্রবেশ করলে কোনো ওয়েবসাইটজনিত ত্রুটির জন্য যেন তার সময় নষ্ট না হয় সেই ব্যাপারে আমাজন সবসময় তৎপর। আমাজনের ওয়েবসাইটের কিছু সুবিধা হলো:
- সিম্পল ইউজার ইন্টারফেস (UI)-
গ্রাহকদের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরির জন্য একটি সহজ এবং গোছালো ইউজার ইন্টারফেস অপরিহার্য। যেন তথ্য ব্যবহারকারীর কাছে তা সহজবোধ্য হয়।এর মানে হল যে আইকন এবং বাটনগুলি অবশ্যই তথ্যপূর্ণ হতে হবে, সমস্যা চিহ্নিত হলে তা প্রকাশ করবে এবং সাধারণভাবে ব্যবহারযোগ্য হতে হবে। আমাজনের এই বৈশিষ্ট্য এটিকে তার গ্রাহকদের জন্য একটি দুর্দান্ত শপিং ওয়েবসাইট হিসেবে গড়ে তুলেছে।
- রেসপন্সিভ ও মোবাইল-বান্ধব-
একটি ভাল ডিজাইন যেকোনো ওয়েবসাইটকে রেসপন্সিভ করে তোলে। বর্তমানে গ্রাহকরা বেশিরভাগই মোবাইলের মাধ্যমে ওয়েবসাইট ব্রাউজ করেন, তাই ওয়েবসাইট মোবাইল-বান্ধব হওয়া খুবই প্রয়োজনীয়৷
আমাজনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটের ডিজাইন খুবই রেসপন্সিভ। এই সাইটে গ্রাহকদের যেকোনো ডিভাইস, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেটের মাধ্যমে প্রবেশ করা সহজ।
- ওয়েবসাইট পেজ দ্রুত লোড হওয়া-
যখন কোনো সাইটের পেজ লোড হতে অনেক সময় নেয়, তখন গ্রাহকদের ক্ষতি হতে পারে মানে সময় নষ্ট হয় এবং এজন্য বিক্রয় হ্রাস পেতে পারে। ইন্টারনেটের গতি যাই হোক না কেন ওয়েবসাইট যেন ৩ সেকেন্ড বা তার চেয়েও কম সময়ের মধ্যে লোড হতে পারে সেই ব্যাপারে খেয়াল রাখা উচিত। আমাজন ওয়েবসাইটও তেমনি একটি ই-কমার্স সাইট যেখানে পেজ লোড নেয় খুব দ্রুত। এতে গ্রাহক দ্রুত তার ফলাফল পায়।
- ব্রাউজার সামঞ্জস্যতা-
যেকোন সাইটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ব্রাউজার সামঞ্জস্যতা। মানে একটি ওয়েবসাইট পুরানো বা নতুন যাই হোক না কেন প্রতিটি ব্রাউজারে যেন কাজ করতে পারে। আর আমাজনের ওয়েবসাইটের এই ক্ষমতাটি সাইট টিকে আরও জনপ্রিয় করেছে।
৩. গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জন:
আমাজনের সফলতার অন্যতম প্রধান কারণ হলো গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জন। আমাজন প্রতিষ্ঠার শুরুতেই জেফ বেজোস বলেছিলেন তার কোম্পানিটি হবে গ্রাহক কেন্দ্রিক। আর এখন পর্যন্ত তার কথার গুরুত্ব দিয়ে যাচ্ছে কোম্পানিটি।
আমাজনে নিযুক্ত সব কর্মজীবীদের শুরুতেই দুদিনের কল সেন্টারের ট্রেনিং দেওয়া হয়। কারণ এতে তারা শিখবে গ্রাহককে এবং তার কি প্রয়োজন। ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে শেখানো হয় শুনতে অর্থাৎ গ্রাহকের কথা আগে মনোযোগের সাথে শুনতে হবে। না শুনলে ক্রেতা কি চায় তা জানা ও বোঝা যাবে না। আর এজন্য আমাজন গ্রাহকের চাহিদা বুঝতে পেরে তাদের বিজনেস মডেল সাজাতে পারে।
গ্রাহক একটি কোম্পানির সুনাম বাড়ানো বা নষ্ট করার ক্ষমতা রাখে। গ্রাহক যদি খারাপ অভিজ্ঞতা অর্জন করে আর সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে তাহলে কোম্পানির ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়। আমাজন এসব ব্যাপারে অতি-সচেতন এবং তাদের সমস্ত গ্রাহকদের খুশি করার জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার তাই নেয়।
আমাজনের গ্রাহকদের সন্তুষ্টির আরেকটি মূল উপাদান হলো তাদের ক্রমাগত জিজ্ঞাসা করা এবং তাদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়া। আর এজন্য আমাজন প্রতিটি ডেলিভারির পরে গ্রাহকদের অনুরোধ করে একটি রিভিউ-এর জন্য। এসব রিভিউ থেকে তারা গ্রাহকের মতামত জেনে নেয়।
৪. মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি:
আমাজন দুনিয়ার বেশিরভাগ মানুষের কাছে আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠার আরেকটি বড় কারণ এর মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি। কোম্পানিটি কয়েক ভাবে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে। এটি বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম দিনে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন বার পরিবর্তন করে। মানে এখানে তালিকাভুক্ত একটি পণ্য প্রতি ১০ মিনিটে মূল্য পরিবর্তন করবে! মূল্য নির্ধারণের এই গতিশীল প্রক্রিয়া কোম্পানিকে পণ্যের দামগুলিকে প্রতিযোগিতামূলক রাখতে এবং গড়ে ২৫% লাভ বাড়াতে সাহায্য করে৷
আমাজন তার দামগুলিকে প্রতিযোগিতামূলক রাখতে এবং আরও গ্রাহকদের আকর্ষণ করার জন্য মনস্তাত্ত্বিক মূল্য নির্ধারণ কৌশল ব্যবহার করে । কোম্পানিটি সর্বাধিক বিক্রিত এবং জনপ্রিয় পণ্যের উপর বিশাল ছাড় দেয় আবার অস্বাভাবিক পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়।যখনই একজন গ্রাহক আমাজনে সবচেয়ে সাধারণ পণ্যগুলি খোঁজে , তখন তারা সবচেয়ে সাশ্রয়ী দামের পণ্যগুলিই খুঁজে পাবেন।এতে করে গ্রাহক ভাবে যে আমাজন প্ল্যাটফর্মে সামগ্রিকভাবে পণ্যের সর্বনিম্ন দাম রয়েছে৷
৫. পণ্যের দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য ডেলিভারি সিস্টেম:
আমাজনের উপর গ্রাহকের আস্থা বাড়ার আরেকটি কারণ হলো পণ্যের উন্নত ডেলিভারি ব্যবস্থা। কোম্পানিটি উন্নত পরিবহন নেটওয়ার্ক তৈরি করতে দুই দশকেরও বেশি সময় কাটিয়েছে। যার ফলে গ্রাহকদের জন্য দ্রুত, নির্ভরযোগ্য ডেলিভারি এবং কর্মচারী ও অংশীদারদের কাজ করার জন্য একটি উপযুক্ত জায়গা প্রদান করতে পেরেছে।
আমাজন বিশ্বব্যাপী এক মিলিয়নেরও বেশি কর্মচারীর জন্য বিশ্বব্যাপী ফুলফিলমেন্ট সেন্টার, রিটেইল লোকেশন, ডেটা সেন্টার, কর্পোরেট অফিস, টেক হাব উদ্ভাবন করছে গ্রাহকদের পরিষেবা দেওয়ার জন্য। এগুলোর মাধ্যমে কর্মীরা পণ্য বাছাই করে, প্যাক করে। তারপর চূড়ান্ত গন্তব্য অনুসারে গ্রাহকের অর্ডারগুলিকে বাছাই করে এবং দ্রুত ডেলিভারির জন্য ট্রাকে সাজিয়ে রাখে।
এরপর আমাজনের নিজস্ব প্লেনে পণ্যগুলো উঠানো হয়। প্লেন থেকে আবার সর্ট সেন্টারে প্যাকিংয়ের উপর জিপ কোড অনুসারে সাজিয়ে রাখা হয়। সেখান থেকে প্রথমে ট্রাকে ডেলিভারি স্টেশনে ও পরে নিজস্ব রিসিভ সেন্টারে পণ্য গিয়ে পৌঁছে। এখান থেকে গ্রাহকের ঠিকানা অনুযায়ী পণ্য পৌঁছে। আর এমন সুন্দর গোছানো ডেলিভারি সিস্টেম আমাজনকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
৬. পন্যের ভালো মানের ছবি:
যেহেতু আমাজন ই-কমার্স সাইটের মূল উদ্দেশ্য অনলাইনে পণ্য বিক্রি। তাই পণ্যটি বাস্তবে না ধরতে পারলেও অন্তত ছবিতে দেখে যেন সেটির ব্যাপারে সুন্দর ধারণা তৈরি হয় সেজন্য তারা সব পণ্যের ভালো মানের ও বড় সাইজের ছবি তুলে আপলোড করে।
এছাড়াও ছবিগুলোতে হোভার জুম এর অপশন থাকায় গ্রাহক পণ্যটিকে নিবিড়ভাবে দেখতে পারে। যা পণ্যের ব্যাপারে গ্রাহককে আগ্রহী করে তোলে।
৭. সহজে চেক আউট করার প্রক্রিয়া:
যখন একজন গ্রাহক কোনো ব্র্যান্ডের চেক আউট প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হয়, তখন সেই ব্র্যান্ডের উপর আস্থা হারাতে পারে। এই কারণেই চেকআউট প্রক্রিয়াটিকে ঝামেলামুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ।
আর আমাজন এর ব্যবহারকারীদের জন্য এরকম ঝামেলা-মুক্ত চেকআউট ব্যবস্থা অফার করে–যেমন কার্ড, নেট ব্যাঙ্কিং, ওয়ালেট এবং ক্যাশ অন ডেলিভারি।
৮. সোশ্যাল মিডিয়ায় একটিভ থাকা:
এখন সবারই সোশ্যাল মিডিয়ায় একাউন্ট থাকে।শুধু ব্যাক্তিগত নয় কোম্পানিগুলোও এক্ষেত্রে অনেক এগিয়ে। কারণ এটা একটা প্রচার মাধ্যম। আর নিজের প্রচারণা চালাতে আমাজনও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। সব ধরণের সোশ্যাল সাইটে কোম্পানিটি একটিভ আছে। যেমন- ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার,ইউটিউব, লিংকড-ইন, পিন্টারেস্ট ইত্যাদি। এসব সাইটের মাধ্যমেও আমাজন প্রচুর গ্রাহক পেয়ে থাকে।
৯. ব্লগিং করা:
সাইটের একটি পৃথক ব্লগ বিভাগ গ্রাহকদের যেকোনো সাইটে বারবার ফিরে আসার এবং সেইসাথে ওয়েবসাইটের ট্রাফিক ও র্যাঙ্কিং বাড়ানোর অন্যতম কারণ। যা প্রতিযোগিতামূলক অনলাইন স্পেসে একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ড তৈরি করতে সহায়তা করে।
আমাজন একটি ই-কমার্স জায়ান্ট হওয়া সত্ত্বেও এর গ্রাহকদের জন্য একটি ব্লগিং সাইট চালু রেখেছে শুধুমাত্র বিক্রির সম্ভাবনা এবং এর বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ানোর জন্য।
১০. আমাজন গ্লোবাল স্টোর রিটার্ন নীতি:
আমাজনের গ্লোবাল স্টোর রিটার্ন নীতি অনুসারে রিটার্নস সেন্টারের মাধ্যমে প্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে পণ্যগুলি ফেরত দেওয়া যাবে। একবার ফেরত দিলে পণ্যটি স্টোরে আসতে ২৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। তবে গ্রাহককে নিজের খরচে পণ্য রিটার্ন করতে হবে। আর পণ্য প্রাপ্তির পরে আমাজন স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্রাহককে শিপিং খরচের জন্য ২০ মার্কিন ডলার পর্যন্ত রিটার্ন ফেরত দেবে।
যদি রিটার্ন শিপিং খরচ ২০ মার্কিন ডলারের বেশি হয়, তাহলে বাকি শিপিং খরচ ফেরত দেওয়ার জন্য আমাজনের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
কেউ যদি একটি ত্রুটিপূর্ণ, ক্ষতিগ্রস্থ বা ভুল পণ্য ফেরত দেয় সেক্ষেত্রে গ্রাহকের ফেরত প্রক্রিয়া হয়ে গেলে আমাজন সম্পূর্ণ শিপিং খরচ ও আমদানি শুল্ক ফেরত দিয়ে থাকে। আর এই ধরণের পদক্ষেপের জন্য গ্রাহকরা আমাজনে ফিরে আসে ও বিশ্বাস করে।
Feature Image: amazon.co Reference: 01. How Amazon Became The Largest E-Commerce Store. 02. How Amazon is Leading the way in E-Commerce Segment. 03. Amazon Success Story. 04. 3 Reasons Why Amazon will likely continue to gain E-commerce market-share.