কাশ্মীরের আক্ষরিক অনুবাদ জল থেকে শুষ্ক ভূমি: কা (জল) এবং শিমিরা (শুষ্ক করা)। কথিত আছে, কাশ্মীর মূলত একটি হ্রদ ছিল যা প্রাচীন ভারতের মহান সাধক কাশ্যপ নিষ্কাশন করেছিলেন। বলা হয়, পৃথিবীতে যদি স্বর্গ থেকে থাকে, তবে তা কাশ্মীর। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি এই কাশ্মীরের আছে বহু বছর পুরনো সংঘাতের ইতিহাস।
ধর্মান্তরকরণ
কাশ্মীর উপত্যকার বাসিন্দাদের ইসলামে ধর্মান্তরিত হওয়া শুরু হয় চতুর্দশ শতাব্দীতে, পশ্চিম ইরানের হামেদানের একজন পারস্য সুফি আধ্যাত্মিক মীর সাইয়্যেদ আলী হামাদানির প্রভাবে। তবে সবচেয়ে বড় প্রভাব বিস্তার করেছিলেন, স্থানীয় সুফি সাধক শেখ নুরউদ্দিন নূরানী। মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে তিনি সংস্কৃত ‘নন্দ’ নামে পরিচিত।
দ্বন্দ্বপূর্ণ ইতিহাস
কাশ্মীরি ইতিহাসবিদ খালিদ বশির আহমেদ তার বই, ‘Kashmir: Exposing the Myth Behind the Narrative’-এ কাশ্মীরের ইতিহাসের দ্বন্দ্ব ও অসম্পূর্ণতা তুলে ধরেছেন। কালহানের রচিত ‘রাজতরঙ্গিনী’ বিগত সহস্রাব্দে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক বিবরণ হিসাবে বিবেচিত হয়। কালহানার ঐতিহাসিক বিবরণে দেখানো হয়েছে, কাশ্মীর পাঁচ সহস্রাব্দেরও বেশি সময় ধরে হিন্দু শাসকদের অধীনে ছিল।
কিন্তু খালিদ বশিরের মতে, রাজা অশোকের এই অঞ্চলটি দখল করার পরে কাশ্মীরে বৌদ্ধধর্মের ১০০০ বছরের ইতিহাস পুরোটাই কালহান উপেক্ষা করেছে।
তিনি আরও বলেন যে, কালহানের ইতিহাস ‘তথ্য এবং মিথ’ আশ্রিত। তাই, ইতিহাস হিসাবে এর গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ।
হিন্দু রাজাদের শাসনামল
এই অঞ্চলে হিন্দু রাজাদের শাসনামল শুরু খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দীতে, কার্কোটা নামে একটি রাজবংশের মাধ্যমে। যার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন দুর্লভবর্ধন। কাশ্মীরের শেষ হিন্দু শাসক ছিলেন উদ্যান দেব।
তার প্রধান রাণি, কোটা রাণি ছিলেন রাজ্যের কার্যত শাসক। ১৩৩৯ সালে তার মৃত্যুর সাথে সাথে কাশ্মীরে হিন্দু শাসনের অবসান ঘটে।
মুসলিম শাসনামল
সুলতান শামাস-উদ-দিনের অধীনে কাশ্মীরে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়। তারা ২২২ বছর ধরে উপত্যকা শাসন করেছিল। এই রাজবংশের সর্বশ্রেষ্ঠ শাসক ছিলেন সুলতান জয়ন-উল-আবদিন। তার শাসনামলে, কাশ্মীর সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকভাবে শীর্ষে ছিল। তিনি মূলত ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির একজন মানুষ ছিলেন এবং সকল ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা করতেন।
শিখ শাসনামল
১৮১৯ সালে, রঞ্জিত সিং কাশ্মীরকে শিখ সাম্রাজ্যের একটি অংশ করে তোলে। শিখ এবং রঞ্জিত সিংয়ের মধ্যে সংঘটিত দুটি অ্যাংলো-শিখ যুদ্ধের ফলে কাশ্মীরে শিখ সার্বভৌমত্ব সম্পূর্ণরূপে বিলুপ্ত হয়ে যায়।
ডোগরা শাসনামল
ব্রিটিশরা অমৃতসর চুক্তির অধীনে ৭৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে, ডোগরা প্রধান গুলাব সিংকে কাশ্মীর দিয়েছিল। তিনি লাদাখকে সংযুক্ত করেন। তবে ডোগরা শাসনামলে, শাসকদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে অনেকবার আন্দোলন হয়েছে, যেখানে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়।
রাজনৈতিক দল
১৯৩২ সালে শেখ আবদুল্লাহ কাশ্মীরে প্রথম রাজনৈতিক দল- ‘অল জম্মু ও কাশ্মীর মুসলিম কনফারেন্স’ গঠন করেন। পরবর্তীতে ১৯৩৯ সালে দলটির নাম পরিবর্তন করে ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স’ (NC) রাখা হয়। এটি আজো কাশ্মীরের একটি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে টিকে আছে।
৪০-এর দশকে চৌধুরী গোলাম আব্বাস ‘মুসলিম কনফারেন্স (MC)’ দলটিকে আবার পুনর্জীবিত করেন। ১৯৪৫ সালে জামাত ইসলামী কাশ্মীরে প্রথম সম্মেলন করে। তারা ‘ন্যাশনাল কনফারেন্স’ এবং ‘মুসলিম কনফারেন্স’ উভয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়।
১৯৪৭ সালে ভারতের স্বাধীনতার পর, কাশ্মীর রাজ্যের শাসক মহারাজা হরি সিং, ভারত বা পাকিস্তানের সাথে যোগ দিতে অস্বীকার করেন। পরের বছর পাকিস্তান কাশ্মীর আক্রমণ করলে, কাশ্মীরের শাসক ভারত সরকারের কাছে সাহায্য চান এবং কাশ্মীরকে ভারতের অধীনস্থ করতে রাজি হোন। ১৯৫৬ সালে কাশ্মীর একটি নতুন সংবিধানের অধীনে ভারতীয় ইউনিয়নে একীভূত হয়।
জম্মু গণহত্যা
১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে, হিন্দু মিলিশিয়া এবং ডোগরা সৈন্যরা জম্মুর মুসলমানদের উপর আক্রমণ করে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করে। পুঞ্চে, সদ্য সৃষ্ট পাকিস্তানের সীমান্ত বরাবর, বিদ্রোহীরা ‘আজাদ (মুক্ত) জম্মু কাশ্মীর (এজেকে)’ নামে একটি স্বাধীন রাজ্য তৈরি করে। জম্মুর মুসলমানদের জাতিগত নিধন অব্যাহত থাকায়, অনেকে এজেকে এবং পাকিস্তানে পালিয়ে যায়।
বিচ্ছিন্ন আন্দোলন
১৯৫৩ সালে আবদুল্লাহকে স্বাধীন কাশ্মীর তৈরির চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৬৩ সালে শ্রীনগরের হজরতবল মাজার থেকে পবিত্র নিদর্শন হারিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে আন্দোলন শুরু হয় এবং ১৯৬৪ সালের জানুয়ারিতে রহস্যজনকভাবে উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত চলতে থাকে।
এর মাঝেই ছোট ছোট সশস্ত্র বিপ্লবী গোষ্ঠী আবির্ভূত হয়। এই দলগুলো জম্মু ও কাশ্মীরের পূর্ণ স্বাধীনতার আহবান জানায়।
এদের মধ্যে একটি হলো ‘জম্মু-কাশ্মীর ন্যাশনাল লিবারেশন ফ্রন্ট (জেকেএনএলএফ)’ মকবুল ভাট এবং অন্যরা তৈরি করেছেন।
আরেকটি হলো ‘আল ফাতাহ’ যা একটি শক্তিশালী আন্ডারগ্রাউন্ড নেটওয়ার্ক তৈরি করে।
৮০-এর দশকে, এই দলগুলো সশস্ত্র আন্দোলনের পরিকল্পনা করতে থাকে। এর মাঝে কিছু ছোট ছোট ইসলামপন্থী দল গড়ে উঠে, যাদের বেশিরভাগই কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের নেতৃত্বে।
এই সময় কাশ্মীরে দমন-পীড়ন বাড়তে থাকে। বিদ্যুতের মতো মৌলিক জিনিসের দাবিতে বিক্ষোভকারীদের গুলি করে হত্যা করা হয়।
জেকেএলএফ(JKLF)
JKLF-এর বিরুদ্ধে ভারতের অভিযান তীব্র হয়ে উঠে। অপরদিকে, পাকিস্তানও কাশ্মীরে তার নিজস্ব গোষ্ঠী তৈরি করতে চায়। যেমন, ‘হিজবুল মুজাহিদিন’ (এইচএম)। এর প্রতিষ্ঠাতা জামায়াত ইসলামী কর্মী এবং মাস্টার আহসান দার নামে পরিচিত একজন স্কুল শিক্ষক।
জগমোহন সরকার
৯০-এর দশকে ভারতীয় সামরিক বাহিনী জানুয়ারিতে কাশ্মীর জুড়ে বেশ কয়েকটি গণহত্যা চালায়। প্রতিবাদ তীব্র হয়, এবং হাজার হাজার কাশ্মীরি প্রকাশ্যে ভারতপন্থী দলগুলো থেকে পদত্যাগ করে। ফারুক আবদুল্লাহর সরকারকে বরখাস্ত করে কেন্দ্রীয় শাসন জারি করে। হিন্দু জাতীয়তাবাদী আমলা, জগমোহনকে গভর্নর হিসাবে নিযুক্ত করা হয়।
জগমোহন দ্রুত শহরে সামরিক ক্র্যাকডাউন শুরু করেন। জারি করা হয় তীব্র কারফিউ। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো সরকারি কর্মকর্তা, এনসি কর্মী এবং গোয়েন্দা এজেন্টদের হত্যা করে। ভারতীয় সরকারের সূত্র অনুসারে, ১৯৮৯-২০০৪ সালের মধ্যে, ২১৯ জন কাশ্মীরি হিন্দু সশস্ত্র জঙ্গিদের দ্বারা নিহত হয়েছিল এবং ১৬৫,০০০ জন কাশ্মীর ছেড়ে চলে গিয়েছিল।
২৫ জানুয়ারি হান্দওয়ারা শহরে ২১ জন নিরস্ত্র বিক্ষোভকারীদের ভারতীয় সেনা হত্যা করে। মার্চের শুরুতে, আনুমানিক এক মিলিয়ন কাশ্মীরি বেশ কয়েকদিন ধরে রাস্তায় নেমে আসে এবং হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।
২১ মে, কাশ্মীরের নিহত প্রধান প্রচারক মিরওয়াইজ মৌলভি ফারুকের অন্ত্যেষ্টি যাত্রায় আনুমানিক এক মিলিয়ন লোক যোগ দেয়। একজন এইচএম কর্মীকে এই হত্যার জন্য দায়ী করা হয়। ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনী শ্রীনগরের হাওয়ালের কাছে ৬০ জনকে হত্যা এবং ২০০ জনকে আহত করে।
শুধু তাই নয়, জগমোহন ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরও, ১৯৯১ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় সৈন্যরা উত্তর কাশ্মীরের কুনান এবং পোশপোরা দুটি গ্রামে প্রবেশ করে এবং কয়েক ডজন কাশ্মীরি নারীকে ধর্ষণ করে। ভারত সরকার এই অভিযোগ অস্বীকার করে।
কাশ্মীরি পণ্ডিত উচ্ছেদ
১৯৯০ সালের ১৯ জানুয়ারি, বহুদিন ধরে হামলার শিকার হওয়া কাশ্মীরি পণ্ডিতদের জীবনে নেমে আসে এক কালো রাত। অনেক বিশিষ্ট কাশ্মীরি পণ্ডিতদের দ্বারা প্রকাশিত বিবরণ অনুসারে, মসজিদ এবং রাস্তায় লাউড স্পিকারে হুমকিমূলক স্লোগান ছিল। কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায় চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জানুয়ারি ২০ তারিখে।
২১ জানুয়ারি, সিআরপিএফ গাওকাডাল সেতুতে ১৬০ জন কাশ্মীরি মুসলিম বিক্ষোভকারীকে গুলি করে হত্যা করে, যা কাশ্মীরের সংঘাতের দীর্ঘ ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ গণহত্যা হিসাবে পরিচিত।
কাশ্মীরি পন্ডিত সংগ্রাম সমিতির (KPSS) অনুমানে, ৭০,০০০ এরও বেশি কাশ্মীরি পণ্ডিত ১৯৯০-৯২ সালের মধ্যে চলে গিয়েছিল৷ যা ২০০০ সাল পর্যন্ত অব্যাহত ছিল৷ KPSS এর মতে, ১৯৯০-২০১১ পর্যন্ত ৩৯৯ জন মারা গেছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা
জেকেএলএফকে নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষ বলে দাবি করে কাশ্মীরের ‘একীকরণ ও স্বাধীনতা’ চায়। অন্যদিকে, হিজবুল মুজাহিদিন তখন জামায়াত ইসলামীর সাথে কাজ করছে এবং তাদের আধিপত্য বজায় রাখছে। তারা কাশ্মীরকে ‘পাকিস্তানের সাথে একীভূতকরণ’ করার লক্ষ্যের সাথে নিজেদের একটি ‘ইসলামী’ সংগঠন বলে দাবি করে।
বিজবেহারা হত্যাকাণ্ড
জেকেএলএফ এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মাঝে বিরোধ বাড়তেই থাকে। জেকেএলএফের আক্রমণের জবাবে বিএসএফ ১০০ নিরস্ত্র মানুষকে হত্যা করে এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়। অক্টোবরে তারা বিজবেহারা শহরে, শুক্রবার জুমার পর একত্রিত হওয়া ৫৫ জনকে হত্যা করে।
ওয়ানধামা গণহত্যা
১৯৯৮ সালে ২৫ জানুয়ারি, ওয়ানধামা গ্রামে একটি গণহত্যায় ২৩ কাশ্মীরি হিন্দু নিহত হয়। ভারত ইসলামপন্থী জঙ্গিদের দায়ী করে। অন্য দুটি ঘটনায়, জম্মুর প্রাণকোট এবং চম্পানারিতে এপ্রিল এবং জুন মাসে বেশ কয়েকজন হিন্দুকে হত্যা করা হয়।
ছাটিসিংপোরা হত্যাকাণ্ড
২০০০ সালে ২০ মার্চ, দক্ষিণ কাশ্মীরের ছাটিসিংপোরা গ্রামে অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হাতে ৩৫ জন কাশ্মীরি শিখ নিহত হয়। সরকার ইসলামিক জঙ্গিদের দোষারোপ করে, কিন্তু কাশ্মীরি এবং বিশিষ্ট শিখ নেতারা (এবং পরবর্তীতে মার্কিন কর্মকর্তারা) মার্কিন সহানুভূতি চাওয়ার জন্য ভারতীয় সরকারি সংস্থাগুলোকে এই হামলার জন্য দায়ী করে।
এর কয়েকদিন পর, ভারতীয় বাহিনী পাঁচ স্থানীয় কাশ্মীরিকে অপহরণ করে, হত্যা করে এবং মৃতদেহ বিকৃত করে দাবি করে যে তারা শিখদের হত্যার জন্য দায়ী বিদেশী ইসলামপন্থী জঙ্গিরা। এক সপ্তাহ পর, ইসলামাবাদ/অনন্তনাগের ব্রাকপোরায়, ভারতীয় বাহিনী নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে নয়জন বিক্ষোভকারীকে হত্যা করে। উত্তোলিত মৃতদেহগুলোর পরবর্তী পরীক্ষা প্রমাণ করে যে আসলে স্থানীয় বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।
নদীমার্গ গ্রাম গণহত্যা
২৩শে মার্চ, ২০০৩-এর সন্ধ্যায়, সামরিক পোশাক পরা বন্দুকধারীরা শোপিয়ানের প্রত্যন্ত নদীমার্গ গ্রামে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের হত্যা করে। এতে বেশ কয়েকজন নারী এবং দুই শিশুসহ ২৪ জন নিহত হয়।
এপ্রিলে পুলিশ জানায়, তারা একজন পাকিস্তানি জঙ্গি জিয়া মুস্তাফাকে গ্রেপ্তার করেছে যে অন্যান্য ‘লস্কর-ই-তৈয়বা’ জঙ্গিদের সাথে, পাকিস্তানের এলইটির নির্দেশে গণহত্যা চালিয়েছিল। এক সপ্তাহ পরে, পুলিশ কুলগামের ইয়ারিপোরা গ্রামে তিন পাকিস্তানি জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে এবং বলে যে তারা মোস্তফার সহযোগী।
অক্টোবরে, অভিযুক্ত জঙ্গিদের মধ্যে তিনজনকে হত্যা করা হয় এবং প্রধান আসামি পাকিস্তানি জঙ্গি জিয়া মোস্তফা পুলিশ হেফাজতে মারা যায়। পুলিশ জানিয়েছে, পুঞ্চে জঙ্গি আস্তানা চিহ্নিত করতে মুস্তফাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তল্লাশি চলাকালীন, জঙ্গিরা গুলি চালায় যার ফলে একটি বন্দুকযুদ্ধে মোস্তফা নিহত হয়।
বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধ পর্যন্ত, কাশ্মীর উপত্যকায় বিশ্বাস ও সংস্কৃতির প্রভাবশালী ঐতিহ্যকে আঘাত করা হয়নি একবারও। ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে, মাওলানা আবুল আলা মওদুদীর (১৯০৩-৭৯) শিক্ষায় অনুপ্রাণিত উপমহাদেশের একটি সুন্নি মৌলবাদী আন্দোলন- ‘জামায়াত-ই-ইসলামির (ইসলামিক সমাবেশ, জেআই)’ স্থানীয় শাখা থেকে প্রধান বাধাটি এসেছিল। যা পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনা এবং উপাদান দিয়ে প্রভাবিত হয়ে আজকের এই অবস্থায় উপনীত হয়েছে।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করা হলেও, মূলত বিভিন্ন সময় শুধু একটি একক জাতিগত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে সংখ্যালঘুদের অবহেলা করা হয়েছে। কাশ্মীরিদের মধ্যে তাই গভীর দীর্ঘস্থায়ী অভিযোগ রয়েছে। কারণ তারা কখনও শাসকদের দ্বারা পরিপূর্ণভাবে প্রতিনিধিত্ব পায়নি। এবং এই অনুভূতিটি কাশ্মীরে বহুশতাব্দীর দুঃশাসনের মধ্যে গেঁথে আছে। যা আজ অবধি অব্যাহত রয়েছে।
Feature Image: Wikimedia.commons References: 1. Sufi-Mystics-from-1370s-Changed-Kashmir's-Identity-but-Orthodoxy-of-1970s-is-the-Challenge. 2. Kashmir-was-never-just-a-1947-problem-It-is-a-5000-year-old-battle-of-histories. 3. History. 4. Kashmir-a-Historical-Timeline. 5. When-Kashmiri-Pandits-fled-the-valley. 6. Srinagar/Nadimarg-Kashmiri-Pandit-Massacre.