ডায়াবেটিস কি? কেন হয়? বাঁচার উপায়?

466
0
ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ,Image Source:mouthhealthy.org

ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র বর্তমান সময়ের সবচেয়ে পরিচিত একটি রোগ। মানুষের রক্তে গ্লুকোজ বেড়ে গেলে এই রোগের সৃষ্টি হয়। অর্থাৎ মানবদেহ যখন তার কোষে চিনি (গ্লুকোজ) গ্রহণ করতে এবং শক্তির জন্য ব্যবহার করতে অক্ষম হয় তখনই ডায়াবেটিসের সৃষ্টি হয়। আর তখন এই চিনি (গ্লুকোজ) রক্তে জমা হয়।  

ডায়াবেটিস হলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন-হার্ট, কিডনি, চোখ, স্নায়ু এবং টিস্যুর ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যার কোনও প্রতিকার নেই। তবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর অবহেলায় রোগী মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়।  

ডায়াবেটিস কত প্রকার?

ডায়াবেটিসেরও কয়েকটি ধরণ আছে। ডায়াবেটিসকে ৪ ভাগে ভাগ করা যায়। 

  • টাইপ ওয়ান 
  • টাইপ টু 
  • গর্ভকালীন ডায়াবেটিস
  • প্রি-ডায়াবেটিস
Diabetes Mellitus: Symptoms, Causes, Types & Treatment
ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যায় নিমিষেই। Image Source: narayana health

টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস 

টাইপ ১ ডায়াবেটিস একটি অটো ইমিউন প্রতিক্রিয়া দ্বারা সৃষ্ট ডায়াবেটিস বলে মনে করা হয়। যার মানে হলো শরীর ভুল করে নিজেকে আক্রমণ করে। এই প্রতিক্রিয়া শরীরে ইনসুলিন তৈরি করা বন্ধ করে দেয়। ডায়াবেটিস আছে এমন প্রায় ৫-১০% লোকের টাইপ ১ ডায়াবেটিস আছে। টাইপ ১ ডায়াবেটিস সাধারণত শিশু, কিশোর এবং অল্প বয়স্কদের মধ্যে হতে দেখা যায়।  এখনও টাইপ ১ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করার কার্যকর উপায় আবিষ্কৃত হয়নি।

টাইপ টু ডায়াবেটিস 

যদি মানবদেহ ভালোভাবে ইনসুলিন ব্যবহার করতে না পারে এবং রক্তে শর্করাকে স্বাভাবিক মাত্রায় রাখতে না পারে তখন ঐ অবস্থাকে টাইপ ২ ডায়াবেটিস বলে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রায় ৯০-৯৫% লোকের টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে। এটি সাধারণত প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হতে দেখা যায়। 

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস 

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস গর্ভবতী মহিলাদের হয়ে থাকে যাদের কখনও ডায়াবেটিস হয়নি। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলে শিশুর স্বাস্থ্যের ঝুঁকি হতে পারে। এই ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত শিশুর জন্মের পরে চলে যায়। তবে এটি পরবর্তী জীবনে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।   

প্রি-ডায়াবেটিস 

প্রিডায়াবেটিস হলো ইম্প্যায়ারড গ্লুকোজ টলারেন্স (আইজিটি)। যখন একজন সুস্থ মানুষের সুগার নরমাল স্টেজে না থেকে কোন কারণে সামান্য বেড়ে গেলে তিনি প্রি-ডায়াবেটিস স্টেজে থাকেন। কারণ এই স্টেজ পার হলেই মানুষ পুরোপুরি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। অধিকাংশ মানুষই তার প্রি-ডায়াবেটিসের কথা জানে না। এজন্য এই ধরনের ডায়াবেটিস আরও ঝুঁকিপূর্ণ। 

ডায়াবেটিস চার ধরনের হয়ে থাকে। Image Source: weatrust.com

ডায়াবেটিসের ইতিহাস 

ডায়াবেটিকস রোগটির সাথে মানুষ গত কয়েক দশক ধরে বেশি পরিচিত হলেও এটি কোন নতুন রোগ নয়। বরং অতীতের অনগ্রসর চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে মানুষ এই রোগটি সহজে শনাক্ত করতে পারতো না। ডায়াবেটিসের ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় প্রাচীনকালে মিশরীয়, ভারতীয়, চীনা এবং আরবরা ডায়াবেটিস মেলিটাসের অনেকগুলো ক্লিনিকাল লক্ষণ বর্ণনা করেছিল।

যেমন-১৫৫২ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মিশরীয় চিকিৎসক হেসি-রা ঘন ঘন প্রস্রাবকে ডায়াবেটিকস রোগের লক্ষণ হিসাবে নথিভুক্ত করেছিলেন যা ক্ষয় সৃষ্টি করে। এই সময়ের কাছাকাছি প্রাচীন রোগ নিরাময়কারীরা উল্লেখ করেছেন যে পিঁপড়ারা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রস্রাবের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকে। ১৫০ খ্রিস্টাব্দে গ্রীক চিকিৎসক অ্যারেটাস বর্ণনা করেছিলেন যে ডায়াবেটিস হলো-

প্রস্রাবে মাংস এবং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের গলে যাওয়া। 

তারপর থেকে চিকিৎসকরা ডায়াবেটিস সম্পর্কে আরও ভাল ধারণা অর্জন করতে শুরু করেন। খ্রিস্টীয় ১১ শতকে বিখ্যাত আরব চিকিৎসক ইবনে সিনা তার চিকিৎসা বিষয়ক গ্রন্থ আল-কানুনে (ক্যানন অফ মেডিসিন) ডায়াবেটিসের কথা বর্ণনা করেছেন এবং গ্যাংগ্রিন ও যৌন দূর্বলতাকে এর জটিলতা হিসাবে উল্লেখ করেছেন।  

ইবনে সিনার গ্রন্থ আল-কানুনে। Image Source: muslimheritage.com

বহু বছর পরে মধ্যযুগীয় পণ্ডিত ময়েসেস মাইমোনাইডস অ্যাসিডোসিসের লক্ষণসহ বিস্তারিত ডায়াবেটিস বর্ণনা করেছেন। কয়েক শতাব্দী পরে ‘ওয়াটার টেস্টার’ নামে ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ হিসেবে সন্দেহভাজন লোকদের প্রস্রাব পরীক্ষা করে দেখা হয়।  প্রস্রাবের স্বাদ মিষ্টি হলে ডায়াবেটিস ধরা পড়ে।

এই বৈশিষ্ট্যটি স্বীকৃতি পাওয়ার পরে ১৬৭৫ সালে ‘মেলিটাস’ (যার অর্থ মধু) ‘ডায়াবেটিস’ নামের সাথে যোগ করা হয়েছিল।১৮০০ সালের মধ্যে বিজ্ঞানীরা প্রস্রাবে চিনির উপস্থিতি শনাক্ত করতে রাসায়নিক পরীক্ষা তৈরি করতে পেরেছিলেন।

১৯১৬  সালে বোস্টনের বিজ্ঞানী এলিয়ট জোসলিন ডায়াবেটিস মেলিটাসের চিকিৎসার পাঠ্যপুস্তক রচনা করেছিলেন। তিনি তার বইতে উল্লেখ করেছিলেন যে, নিয়মিত ব্যায়ামের সাথে যদি নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস মেনে চলা যায় তাহলে ডায়াবেটিস রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেতে পারে।

আজকের দিনেও ডাক্তার এবং ডায়াবেটিস শিক্ষাবিদরা ডায়াবেটিস পরিচালনার জন্য তাদের রোগীদের জীবনধারার পরিবর্তন সম্পর্কে শেখানোর সময় বিজ্ঞানী এলিয়ট জোসলিনের এই নীতিগুলি ব্যবহার করেন। এরপরে কানাডার অন্টারিওর একজন চিকিৎসক, ফ্রেডেরিক ব্যান্টিং, ১৯২২ সালে সফলভাবে ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসার জন্য ইনসুলিন আবিষ্কার করে এবং পরের বছর তাকে চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।

জসলিন এক শিশুর সঙ্গে। Image Source: joslin diabetes center

ডায়াবেটিস কেন হয়?

ডায়াবেটিস হলে ঘন ঘন প্রস্রাব হয়। এর কারণ এই রোগের জন্য শরীর প্রস্রাব ধরে রাখতে পারে না। শরীরের ক্ষয় শুরু হয়। কিন্তু ডায়াবেটিস কেন হয়?

মানুষের শরীরের শক্তির প্রধান উৎস হলো রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করা। যা দৈনন্দিন খাবার থেকে আসে। আর রক্তে শর্করা বেড়ে গেলে শরীর অগ্ন্যাশয়কে ইনসুলিন মুক্ত করার জন্য সংকেত দেয়। 

ইনসুলিন অগ্ন্যাশয় দ্বারা তৈরি একটি হরমোন যা পেটের পিছনে অবস্থিত একটি অঙ্গ। এটা খাদ্য থেকে গ্লুকোজকে শরীরের কোষে রক্তের শর্করাকে শক্তি হিসাবে ব্যবহারের জন্য একটি চাবিকাঠির মতো কাজ করে।

কিন্ত কখনো কখনো শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে ইনসুলিন তৈরি করে না বা তৈরি করলেও স্বাভাবিকভাবে ব্যবহার করতে পারে না।  তখন রক্তে অনেক বেশি শর্করা থেকে যায়। মানব শরীরে তখন ডায়াবেটিস রোগের সৃষ্টি হয়।  

Diabetes overview: symptoms, causes, treatment, management and more
ডায়াবেটিস কেন হয়। Image Source: netdoctor.co.uk

ডায়াবেটিকস রোগী কারা? 

ডায়াবেটিকস রোগটি সংক্রামক নয়। এটি স্বামী-স্ত্রীর মিলন বা রক্তদানের মাধ্যমে একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায় না। তাহলে ডায়াবেটিস কীভাবে হয় বা ডায়াবেটিকস রোগী কারা? আসলে ডায়াবেটিস হতে বয়স সবসময় বিবেচ্য হয় না।কারণ শিশুরাও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। 

সাধারণত শারীরিকভাবে স্থুল ব্যক্তি, অলস জীবন যাপন করে অথবা কাজ-কর্ম করে না বা বসে বসে কাজ করে এমন ব্যক্তি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে দ্রুত। কারো পারিবারিক ইতিহাসে যদি এই রোগটি থেকে থাকে তাহলেও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এছাড়া অস্বাস্থ্যকর খাবার, ফাস্টফুড, মিষ্টিজাতীয় খাবার বেশি পরিমাণ গ্রহণ করলেও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় নারীদের এই রোগটি হয়ে থাকে; যা বাচ্চা জন্মদানের পর আবার ঠিক হয়ে যায়। আবার অনেক নারী বাচ্চা জন্মানোর পরেও রোগটি থেকে মুক্তি পায় না। 

অনেক সময় মানুষ শিশুকালেই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে আবার বয়স ৪৫ হওয়ার পরে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাছাড়া পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম থাকা, ধূমপায়ী হলে, উচ্চরক্তচাপ, স্ট্রোক বা হৃদরোগ থাকলে, অগ্ন্যাশয়ে আঘাত পেলে, অটোঅ্যান্টিবডির উপস্থিতি, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেশি এবং এইচডিএলের মাত্রা কম থাকলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন কারো রক্তে কয়েক মাসের শর্করার গড় পরিমাণ নির্ধারণ করে এই ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়। ডায়াবেটিসের এই পরীক্ষা দিনের যেকোনো সময় করা যায় এবং এর জন্য রক্তের নমুনা দিতে হয়। এ পরীক্ষার নাম এইচবিএ১সি। 

এই পরীক্ষায় যদি কারো রক্তে শর্করা বা গ্লুকোজের পরিমাণ ৫.৭ এর নিচে থাকে তবে তার ডায়াবেটিস নেই ধরা হয়। আর যদি এর মাত্রা ৫.৭-৬.৫ এর মাঝে থাকে তবে প্রি-ডায়াবেটিস অবস্থা বুঝায়। আর গ্লুকোজের পরিমাণ ৬.৫ হলে বা অতিক্রম করলে তখন পুরোপুরি ডায়াবেটিস আছে বলে মনে করা হয়।  

এইচবিএ১সি পরীক্ষার নমুনা। Image Source: lashkar.com

লক্ষণ ও করণীয় কি?

লক্ষণ:  

  • বার বার প্রস্রাব হয়
  • তৃষ্ণা বাড়ে
  • দুর্বল, ক্লান্ত অনুভূতি হয়
  • দৃষ্টি ঝাপসা হয়
  • হাত, পায়ে অসাড়তা বা ঝিনঝিন করে
  • ঘা বা ক্ষত ধীরে ধীরে নিরাময় হয়
  • ওজন হ্রাস পায় 
  • মহিলাদের ত্বকে শুষ্কতা,  চুলকানি এবং মূত্রনালীর সংক্রমণ হয়
  • পুরুষদের মধ্যে যৌনক্ষমতা হ্রাস, ইরেক্টাইল ডিসফাংশন, পেশী শক্তি হ্রাস পায়। 

করণীয়:

ডায়াবেটিসের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগীর ডায়াবেটিসের ধরন, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কত এবং স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থার ওপর।এজন্য এরকম লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। ডাক্তার যেমন চিকিৎসা দেবে সেই অনুযায়ী চলতে হবে। 

টাইপ ১ ডায়াবেটিস: এই ধরনের ডায়াবেটিসের জন্য অবশ্যই প্রতিদিন ইনসুলিন নিতে হবে। কারণ অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন তৈরি করে না বলেই কৃত্রিম উপায়ে ইনসুলিন শরীরে প্রবেশ করাতে হবে।  

5 Insulin Facts That Diabetic Activists Wish Everyone Knew | SELF
ইনসুলিন। Image Source: self.com

টাইপ ২ ডায়াবেটিস: এই ধরনের ডায়াবেটিস হলে ওষুধ, ইনসুলিন এবং জীবনযাত্রার পরিবর্তন যেমন-ওজন কমানো, স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ এবং শারীরিকভাবে আরো ফিট থাকতে ব্যায়াম করতে হবে। 

গর্ভকালীন ডায়াবেটিস: যদি এই ধরনের ডায়াবেটিস থাকে এবং গ্লুকোজের মাত্রা খুব বেশি না হয়, তাহলে প্রাথমিক চিকিৎসা হতে পারে খাদ্য পরিবর্তন করা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করা। যদি লক্ষ্যমাত্রা তখনো পূরণ না হয় বা শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা খুব বেশি হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে ইনসুলিন বা ওষুধ গ্রহণ শুরু করতে হবে। 

প্রি-ডায়াবেটিস: প্রি-ডায়াবেটিস থাকলে ডায়াবেটিস যেন না বাড়ে সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। এই রোগ বৃদ্ধির কারণগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা উচিত। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করা উচিত।

এছাড়াও, সাবধানে কাজকর্ম করা উচিত যেন শরীরের কোন অঙ্গ না কাটে বা আঘাত না পায়। আবার কোন গুরুতর অপারেশন যেন না করতে হয়। কারণ ডায়াবেটিকসের রোগীর ঘা সহসা সারতে চায় না। 

বর্তমান বিশ্বে ডায়াবেটিসে মৃত্যুর হার 

ডায়াবেটিস বর্তমান সময়ের একটি মহামারি রোগ যা নীরবে ছড়িয়ে পড়ছে। এই রোগে মৃত্যুহারও বাড়ছে। বিশ্বে মৃত্যুর প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ডায়াবেটিস আছে সপ্তমে। কারণ এই রোগ শরীরের অন্যান্য অঙ্গকে দ্রুত আক্রান্ত করে। ২০২১ সালে সারা বিশ্বে এই রোগে মৃতের সংখ্যা ছিল ৬৭ লাখ। 

Diabetes deaths number worldwide by region 2021 | Statista
ডায়াবেটিস রোগে মৃত্যুহার। Image Source: Statista

২০২১ সালে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫৩.৭ কোটি। বর্তমানে বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লাখ। এর মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যা ১৭ হাজার। প্রতিবছর এই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী এই ধারা চলতে থাকলে বিশ্বে ২০৩০ সালের মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৬৪.৩ কোটিতে এবং ২০৪৫ সালে ৭৮.৩ কোটিতে পৌঁছাতে পারে। 

ডায়াবেটিস জয়ের গল্প 

ডায়াবেটিস হওয়ার আগেই যদি এই রোগে আক্রান্ত না হওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় তবে সেটা সবচেয়ে ভালো হয়। তবে এই রোগে একবার আক্রান্ত হলে সারাজীবন একে নিয়েই বাঁচতে হয়। ৭০% ডায়াবেটিকস রোগী পরিকল্পিত জীবনযাপনের মাধ্যমে এই রোগকে নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে পারেন। বর্তমানে নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে যার দ্বারা আশা করা হয় এই রোগ সারবে। 

তাই এই রোগ হলে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ইনসুলিন ও অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করতে হবে।ভিটামিন, ফাইবার এবং কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় যোগ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। অ্যালোভেরা, করলা, আমলা এবং আমের রস এই রোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে মানসিক চাপ বজায় রাখতে হবে।

নিয়ম মানলে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। Image Source: pinterest.com

তবে ডায়াবেটিকস জয়ে নতুন করে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। এটা হলো নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি মেটাবলিক এবং ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি। প্রায় কয়েক বছর আগে পর্যন্ত ডায়াবেটিস চিকিৎসার জন্য কোনো স্থায়ী নিরাময় ছিল না। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে যে এই সার্জারির মাধ্যমে ডায়াবেটিসের স্থায়ী নিরাময় পাওয়া সম্ভব।

 

Feature Image: mouthhealthy.com
References: 

01. Diabetes. 
02. Diabetes. 
03. Diabetes Mellitus an overview.