উত্তর কোরিয়া: গোটা পৃথিবী থেকে বিচ্ছিন্ন একটি দেশ

790
1

উত্তর কোরিয়া-গোটা বিশ্ব থেকে একপ্রকার বিচ্ছিন্ন এই দেশটিকে ‘বিশ্বের উন্মুক্ত কারাগার’ বলে অভিহিত করেছেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়ান ডিরেক্টর ব্র্যাড অ্যাডামস। কিম পরিবারের তিন পুরুষ ধরে শাসন করে আসা এই দেশটি পূর্ব এশিয়ার একটি ক্ষুদ্রতম দেশ। ১৯৪৮ সালে জাপানের কাছ থেকে স্বাধীনতাপ্রাপ্ত দেশটি আয়তনে বাংলাদেশের চেয়েও ছোট। কোরিয়ান পেনিনসুলা বা কোরীয় উপদ্বীপে অবস্থিত দেশটির আয়তন মাত্র ১,২০,৫৪০ বর্গ কিলোমিটার।

ক্ষুদ্র এই দেশটিই কালক্রমে হয়ে উঠে বিশ্বের অন্যতম পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। বিশ্বের যে অতি অল্পসংখ্যক দেশের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে উত্তর কোরিয়া তাদের মধ্যে অন্যতম।

এই দেশটির একনায়ক সরকার, না করে মানবাধিকারের তোয়াক্কা, আর না করে বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি আমেরিকার তোয়াক্কা। কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে থাকা দেশটির জনগণের নেই কোনো বিদেশি সংবাদপত্রে সাক্ষাৎকার দেওয়ার অধিকার। এমনকি পাশ্ববর্তী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ার টিভি সিরিজ দেখলেও তাদেরকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হয়। এমন আজব দেশের বিস্তারিত নিয়েই আজকের আলোচনা।

অবস্থান

উত্তর কোরিয়া বা গনতান্ত্রিক কোরিয়া সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমেই জেনে নিতে হবে এর অবস্থান। উত্তর কোরিয়ার উত্তরে চীন, দক্ষিণে দক্ষিণ কোরিয়া, পূর্বে জাপান সাগর, পশ্চিমে পীত সাগর এবং উত্তর-পূর্বে রাশিয়া অবস্থিত।

কোরিয়ার মানচিত্র। Image source: polgeonow.com

১৯৫০-৫৩ সালে সংঘটিত হওয়া কোরীয় যুদ্ধের পর কোরীয় উপদ্বীপের উত্তর অর্ধাংশ (৫৫%) নিয়ে গঠিত হয় উত্তর কোরিয়া। রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর পিয়ং ইয়ং পশ্চিম উপকূলের কাছে একটি প্রধান শিল্প ও পরিবহন কেন্দ্র। অন্যান্য শহরগুলো হচ্ছে: শিনুইজু, কুমকানসান, রিয়াগাং, চাকাং, নামপো, কাংউন ইত্যাদি। দেশটির প্রায় ৮০% পাহাড়ি অঞ্চল। মোট জনসংখ্যা ২ কোটি ৫০ লাখের বেশি। প্রধান ভাষা কোরিয়ান।

ইতিহাস

কোরিয়া উপদ্বীপের ইতিহাস চীনের সাথে জড়িত। শত শত বছর ধরে কোরিয়ানরা চীনের অধীনে স্বাধীনসত্তা বজায় রেখেই চলছিল। উনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে চীন দুর্বল হয়ে পড়লে এশিয়া অঞ্চলের নব্য পরাশক্তি জাপানের চোখ পড়ে কোরিয়ার উপর। ১৯১০ সালে জাপান পুরোপুরিভাবে কোরিয়া গ্রাস করে নেয়। তখন কোরিয়ানরা হয়ে পড়ে জাপানের আশ্রিত এক অসহায় জাতি।

১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে জাপান অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠে। জাপানিদের দুর্বার আক্রমণে যুদ্ধে নামে আমেরিকা। রাশিয়া আর আমেরিকা মিলে সমগ্র কোরিয়াকে ৩৮ ডিগ্রী অক্ষরেখায় বিভক্ত করে জাপানের বিরুদ্ধে রণপরিকল্পনা সাজায়। রাশিয়া নিয়ন্ত্রণ করে ‘উত্তর কোরিয়া’ আর আমেরিকা নিয়ন্ত্রণ করে ‘দক্ষিণ কোরিয়া’।

যুদ্ধে মিত্রশক্তির জয় হলে আমেরিকার নিয়ন্ত্রণাধীন অংশে ১৯৪৮ সালের মে মাসে সিংম্যান রি এর নেতৃত্বে রিপাবলিক অব কোরিয়া নামে ‘দক্ষিণ কোরিয়া’ রাষ্ট্রের জন্ম হয়। তার কিছুদিন পর ‘কিম জং ইল’ রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণাধীন অংশে ‘উত্তর কোরিয়া’ রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন করেন।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট নেতা কিম উল সুং সমগ্র কোরিয়াকে একত্রিত করে সমাজতন্ত্র কায়েম করার সেই উদ্দেশ্যে ১৯৫০ সালের ২৫ জুন দক্ষিণ কোরিয়া আক্রমণ করে বসে। যুদ্ধে দুই কোরিয়ার অন্তত ৩০ লাখ লোক নিহত হয়। অবশেষে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট আইজেন হাওয়ারের মধ্যস্থতায় ১৯৫৩ সালের ২৫ জুন যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষর হয়। এভাবেই আলাদা হয়ে যায় দুই কোরিয়া।

দুই কোরিয়ার যুদ্ধাবস্থা। Image Source: history.com

অর্থনীতি

উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি বিশ্বের স্বতন্ত্র অর্থনীতিগুলোর মধ্যে একটি। এটি মূলত কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত। দেশটির অর্থনীতি কিছু বিষয়ের উপর নির্ভর করে। সেগুলো হলো:

১. চীনের সঙ্গে বানিজ্য
২. কেসং শিল্পপার্ক
৩. বিভিন্ন দেশে জনশক্তি রপ্তানি
৪. ট্রিলিয়ন ডলার মূল্যমানের খনিজ সম্পদ
৫. পর্যটন
৬. হ্যাকিং
৭. মাদকদ্রব্য চোরাচালান ও জাল ডলার
৮. নাগরিকত্ব প্রত্যাহার ইত্যাদি।

আর্থ-সামাজিক অবস্থা

কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রকৃত চিত্র জানা খুবই কঠিন। কারণ দেশটি কখনো সম্পদের পরিমাণ জানায় না। তারপরও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান মারফত কিছু তথ্য থেকে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতির একটা চিত্র তুলে ধরে দক্ষিণ কোরিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মিডিয়ার তথ্যানুসারে দেশটিতে বর্তমানে খাদ্য সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সাধারণ মানুষের খাদ্য, জ্বালানিসহ বিভিন্ন বিষয়গুলোতে ভয়াবহ সংকট চলছে। স্বয়ং প্রেসিডেন্ট কিম জং উন সেটা স্বীকার করে ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক উন্নতির দিকে নজর দেওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন।

বৈশ্বিক ক্ষুধা সূচক অনুযায়ী, উত্তর কোরিয়ার সাধারণ মানুষের ৪০ শতাংশের বেশি পুষ্টিহীনতায় ভোগে। ইউনিসেফের মতে, উত্তর কোরিয়ার দুই লাখ শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। দেশটিতে খাদ্য সংকট এতই চরমে যে, ন্যূনতম খাদ্য চাহিদা মেটাতে জাতিসংঘের ওপর নির্ভর করতে হয়। প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে প্রায়শই খাদ্য সংকট দেখা দেয়।

কিন্তু শুরুর দিকে উত্তর কোরিয়ার অর্থনীতি কখনোই এত খারাপ ছিল না। কোরীয় যুদ্ধের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত কোরিয়ার অর্থনীতিকে টেনে তুলতে মরিয়া হয়ে উঠে দেশটির সাধারণ জনগণ। যার ফলশ্রুতিতে মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই উত্তর কোরিয়ার মানুষ তাদের অবস্থা বদলে ফেলে।

উত্তর কোরিয়ার গ্রামাঞ্চলে প্রায়শই খাদ্য সংকট দেখা দেয়। Image Source: reuters.com

কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া সীমান্তে ২৮,০০০ মার্কিন সেনার উপস্থিতি উত্তর কোরিয়ার মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কিম ইল সাং একে তার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করেন। তিনি আশঙ্কা করছিলেন, তিনি সম্ভবত হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু। তাই তিনি নিজের দেশের সুরক্ষার জন্য পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কথা চিন্তা করেন।

যার ফলে তাদের অর্থনীতির একটা বিশাল অংশ ব্যয় হচ্ছে পরমাণু এবং ক্ষেপনাস্ত্র কর্মসূচিতে। যার ফলাফল সাধারণ মানুষের করুণ জীবনযাপন। তাই তো হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক ব্র্যাড অ্যাডামস বলেছেন,

উত্তর কোরিয়া একটি সর্বগ্রাসী রাষ্ট্র। পরমাণু কর্মসূচির পিছনে অর্থ ঢালতে গিয়ে সরকার দেশের ক্ষুধার্ত মানুষের খাবার কেড়ে নিচ্ছে।

খাদ্যাভ্যাস

ভৌগলিক কারণে উত্তর এবং দক্ষিণ কোরিয়ার খাবারের অনেক মিল রয়েছে। কিছু খাবার আছে যা উভয় দেশেই প্রধান। যেমন কিমচি, সোজু এবং বিভিন্ন ধরনের রাইস জাতীয় খাবার। উত্তর কোরিয়ার মানুষ ভাত বেশি পছন্দ করে। তবে তারা সবচেয়ে বেশি খায় ভুট্টা। কারণ, এটি দামে সস্তা।

উত্তর কোরিয়ার বেশিরভাগ খাবার ভাত এবং নুডলস দিয়ে তৈরি করা হয়। মাংসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চলে শুকরের মাংস। তবে খরগোশ এবং ছাগলের মাংসও খাওয়া হয়। খাবারের স্বাদ বৃদ্ধির জন্য আদা, রসুন, সয়া সস এবং তেল ব্যবহার করা হয়। তবে, উত্তর কোরিয়ার খাবারে সাধারণত দক্ষিণ কোরিয়ার তুলনায় কম মশলা ব্যবহার করা হয় এবং এগুলো দক্ষিণ কোরিয়ার তুলনায় বেশি টক হয়।

উত্তর কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী খাবার কিমছি। Image Source: pinterest.com

এছাড়া, উত্তর কোরিয়ার মানুষের পছন্দের তালিকায় রয়েছে সী ফুড। সামুদ্রিক খাবারের মধ্যে ঝিনুক উত্তর কোরিয়ায় খুবই জনপ্রিয় খাবার। বিশেষ করে উপকূলবর্তী এলাকায়। উত্তর কোরিয়ার কিছু ঐতিহ্যবাহী খাবার হচ্ছে: কিমছি, সোজু, নায়িংমিয়ন, ডোয়িংজাং জিগে, পানসাংগী, মানডু, বোসাম কিমছি ইত্যাদি।

সংস্কৃতি

হাজার হাজার বছর ধরে কোরিয়ানদের সমৃদ্ধ সংস্কৃতির ইতিহাস ছিল। সেই সুদূর প্রাচীনকাল থেকেই কোরীয় উপদ্বীপে মানবজাতির বসবাস ছিল। বিভিন্ন সময়ে সাম্রাজ্যবাদী বিদেশী শক্তির প্রভাব কোরিয়ান সংস্কৃতিতে পড়লেও কোরিয়ানরা নিজেদের স্বতন্ত্রতা বজায় রাখতে পেরেছে। রাজনৈতিক কারণে বর্তমানে দুই কোরিয়া পৃথক হলেও দুই কোরিয়ার সংস্কৃতি, তাদের ভাষা ও অনন্য রীতিনীতি মূলত অভিন্ন।

কোরিয়ান সংস্কৃতির মূলে রয়েছে বৌদ্ধধর্ম ও কনফুসিয়ানিজম। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দখলদার সোভিয়েতরা কোরিয়ান ঐতিহ্যবাহী পরিবার ব্যবস্থা বা কনফুসীয় দর্শনকে স্বীকৃতি না দেওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত জীবন এবং স্বাধীনতা অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়ে।

কোরীয় যুদ্ধের পর থেকে কোরিয়ানরা পুনরায় তাদের সংস্কৃতিকে বিকশিত করতে মনোযোগী হয়। উত্তর কোরিয়ার ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছে কোরিয়ানদের বিখ্যাত পোশাক, নাচ, আর্ট এবং তাদের অনন্য ভাষারীতি। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের মুখরোচক খাবার, কোরিয়ান সঙ্গীত এই সংস্কৃতির একটা বড় অংশ দখল করে আছে।

দুই কোরিয়ার সংস্কৃতি অভিন্ন। Image Source: worldatlas.com

পর্যটন

বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার আয়ের একটি বড় উৎস হচ্ছে পর্যটন খাত। ট্যুরিস্টদের সিংহভাগই হচ্ছে চীনের পর্যটক। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৪ সালে প্রায় এক লাখ পর্যটক উত্তর কোরিয়া ঘুরতে গিয়েছিল।

উত্তর কোরিয়ার পর্যটন কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে,কুমগানসান’ নামের পর্বত ও অরণ্যময় এলাকাটি। সাগরের কোল ঘেঁষে অবস্থিত এই জায়গাটি পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়।

কোরিয়ার দর্শনীয় স্থানগুলো হচ্ছে: জুছে টাওয়ার, পাইকতু পর্বত, মানসুদা হিল গ্র্যান্ড মনুমেন্ট, মানসু ওয়াটার পার্ক, কিম ইল সাং স্কয়ার, কুমসুসান প্যালেস অব দ্যা সান। এছাড়াও, রাজধানী পিয়ংইয়াং-নেও পর্যটকদের জন্য অনেক দর্শনীয় স্থান আছে।

যদিও মাঝেমধ্যে দেশটির সরকার গুপ্তচর বৃত্তির সন্দেহে পর্যটকদের আটক করে। তথাপি উত্তর কোরিয়ার পর্যটন শিল্প তার নিজস্ব গতিতে এগোচ্ছে।

উত্তর কোরিয়ার সৌন্দর্য। Image source : nknews.org

পারমানবিক উচ্চাকাঙ্খা

বর্তমানে উত্তর কোরিয়ার যে অবস্থা তার জন্য দায়ী যেমন তাদের পারমাণবিক উচ্চাশা। ঠিক তেমনই বিশ্বের বুকে দেশটির একটি শক্তিশালী অবস্থার সৃষ্টির পেছনেও রয়েছে এই পারমানবিক বোমার ভূমিকা। বর্তমান বিশ্বের একমাত্র পরাশক্তি আমেরিকার নিষেধাজ্ঞার ভয়ে যেখানে সবগুলো দেশ লেজ গুটিয়ে পালায়, সেই আমেরিকাকে মুখের উপর জবাব দিতে সবসময় প্রস্তুত থাকে উত্তর কোরিয়া। আমেরিকা যে দেশটিকে সমঝে চলে তার নাম উত্তর কোরিয়া। আর এসব সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র তাদের কাছে থাকা পারমাণবিক বোমার কারণে।

তবে প্রথমে উত্তর কোরিয়ার নেতাদের পারমাণবিক বোমা বানানোর কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। কিম ইল সাং ভেবেছিলেন আমেরিকা তাদেরকে আক্রমণ করলে প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদেরকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে।

কিন্তু স্ট্যালিনের মৃত্যুর পর নিকিতা ক্রুশ্চেভের উদারমুখী সংস্কার নীতি তাকে আশাহত করে। তাই তিনি বাধ্য হয়েই নিজের দেশে পারমাণবিক অস্ত্র বানানোর কথা চিন্তা করেন।

যাইহোক, উত্তর কোরিয়া সর্বপ্রথম পারমাণবিক বোমার পরীক্ষা চালায় ৯ অক্টোবর ২০০৬ সালে অষ্টম দেশ হিসেবে। এবং এ পর্যন্ত মোট ছয়বার তারা পারমাণবিক পরীক্ষা চালিয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক বোমার মহড়া। Image Source: bbc.com

অদ্ভুত কিছু নিয়ম

যেখানে উত্তর কোরিয়া দেশটিই অদ্ভুত সেখানে এই দেশের নিয়মকানুনও অদ্ভুতই হবার কথা। চলুন জেনে আসি এমন কিছু অদ্ভুদ নিয়ম সম্পর্কে-

১. বাইবেল পড়া উত্তর কোরিয়াতে সবচেয়ে বড় অপরাধ।

২. উত্তর কোরিয়ায় ছেলে এবং মেয়েদের জন্য সরকার কর্তৃক ২৮টি চুলের স্টাইল আছে নির্ধারণ করা। এর বাইরে কোনো হেয়ার কাট দেওয়া যাবে না।

৩. উত্তর কোরিয়াতে মাত্র ৩টি টিভি চ্যানেল আছে।

৪. বিদেশি মুভি দেখা এবং গান শোনা তাদের জন্য নিষিদ্ধ।

৫. উত্তর কোরিয়ার রয়েছে নিজস্ব ক্যালেন্ডার। এটা পৃথিবীর অন্য সব দেশের ক্যালেন্ডারের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।

৬. এখানকার স্কুলে বাচ্চাদের পড়ার খরচের সাথে সাথে স্কুলের চেয়ার, টেবিলের খরচও দিতে হয়।

৭. আইফোন এবং ল্যাপটপ এদেশে নিষিদ্ধ।

৮. এখানে ইন্টারন্যাশনাল কল করা যায় না।

এছাড়াও, আরো অনেক অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে দেশটির সাধারণ জনগণের উপর। এসব কারণে উত্তর কোরিয়াকে পৃথিবীর অন্যতম জনবিচ্ছিন্ন দেশ বলা হয়ে থাকে।

Feature Image: bbc.com
References:

01. North Korea’s human rights. 
02. North Korea. 
03. গল্পে গল্পে বিংশ শতাব্দী। লেখক-আমিনুল ইসলাম। অ্যাডভেঞ্চার প্রকাশনী। 
04. North Korean Food. 
05. Shocking laws in North Korea.

1 COMMENT

  1. প্রেসিডেন্টের হেয়ারকাট কেউ ফলো করতে পারবে না 😀 এটাও যোগ করতে পারতেন।
    গল্পে গল্পে বিংশ শতাব্দী কেনার ইচ্ছে আছে। 😀