বিশ্বের অন্যতম ১০টি বিস্ময়কর জাদুঘর

665
0

ভ্রমণ মানুষকে পরিমিত করে তোলে। আপনি দেখতে পান যে আপনি পৃথিবীতে কত ছোট জায়গা দখল করেছেন।
– গুস্তাভে ফ্লুবার্ট

প্রাচীনতম নিদর্শনগুলো আমাদের সভ্যতার পরিচায়ক। প্রতিটি জাতির নিজস্ব ইতিহাস, নিজস্ব সংস্কৃতি, নিজস্ব ঐতিহ্য রয়েছে। আর এই সকল স্মৃতিগুলো যুগ যুগ ধরে বহন করে আসছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক জাদুঘরগুলো। জাদুঘর ইতিহাসের ধারক ও বাহক। ইতিহাস জানতে চাইলে জাদুঘরের বিকল্প নেই। জাদুঘর জ্ঞান আহরণের স্থান। যেখান থেকে আপনি ইতিহাসকে আরো কাছ থেকে জানার সুযোগ পাবেন।

জাদুঘর শব্দটা শুনতেই সর্বপ্রথম মাথায় আসে অদ্ভুত সব সংগ্রহে ভর্তি এমন একটি স্থান। যেখানে সারিবদ্ধভাবে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন প্রাচীনতম ইতিহাস ও সংস্কৃতি। যা সভ্যতার বিবর্তনবাদের দৃশ্য তুলে ধরে। জাদুঘর ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বিশ্বের কাছে পরিচয় করিয়ে দেয়। বিশ্বে কিছু জাদুঘর পাবেন যেখানে নিজ দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে ধারণ করা হয়। আবার বেশ কিছু জাদুঘর আছে যারা বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতিকে তুলে ধরে। জাদুঘর ইতিহাসকে জানার ক্ষেত্রে অন্যতম একটি উৎস। আর তাই আজকের আয়োজনে থাকছে বিশ্বনন্দিত ১০টি জাদুঘরের কথা।

১. মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট, নিউইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র

নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত এই মিউজিয়ামটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বৃহৎ শিল্প মিউজিয়াম। এটি ‘দ্য মেট’ নামেও পরিচিত। প্রায় ১৫১ বছর আগে এই মিউজিয়াম স্থাপিত হয়েছিল। প্রায় ২ মিলিয়নেরও বেশি দর্শনীয় বস্তু এই মিউজিয়ামে শোভা পাচ্ছে। দর্শকমহলে সৌন্দর্যের বিচারে বেশ আলোচিত এই মিউজিয়াম। মানবজাতির প্রায় ৬ হাজার বছরের ইতিহাসের ধারক মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট। প্রস্তর যুগের বিভিন্ন শিল্পকর্মের দেখা মিলবে এখানে। এতে প্রাচীন যুগ থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের বিশাল এক মেলবন্ধনের দেখা মিলবে।

মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট, Image Source: cnn.com

ইউরোপীয় ইতিহাস-সংস্কৃতির পাশাপাশি এখানে ইসলামিক ইতিহাস-সংস্কৃতিরও দেখা মিলবে। যেখান থেকে শেখার আছে অনেক কিছুই। বিভিন্ন প্রজন্ম যার রূপে মুগ্ধ। প্রতিবছর বিভিন্ন থিমে সেলিব্রেটিদের আগমনে অনুষ্ঠিত ‘মেট গালা’ এর কারণেও এটি সুপরিচিত। যেখানে বিভিন্ন শিল্প-সংস্কৃতির আসর বসে। এছাড়াও বিভিন্ন বিখ্যাত ইউরোপিয়ান শিল্পীর আঁকা চিত্রকর্ম এই মিউজিয়ামের সৌন্দর্য অনেকগুণে বৃদ্ধি করেছে। আর আমেরিকান শিল্পগুলো একে করেছে মনোমুগ্ধকর। বিখ্যাত জার্মান পেইন্টার আলব্রেসট দ্যুরের খোদাই করা অ্যাডাম এবং ইভের মূর্তির জন্যই এই জাদুঘরটি আরো বেশি বিখ্যাত।

২. ল্যুভর মিউজিয়াম, প্যারিস, ফ্রান্স

ফরাসিরা বেশ শিল্পমনা। শিল্পের দিকে তারা যেকোন জাতি থেকে বরাবরই এগিয়ে। তারই পরিচয় বহন করে ল্যুভর মিউজিয়াম। প্যারিসের বিখ্যাত এই মিউজিয়াম দাগ কেটেছে অনেক ভ্রমণপিপাসুর মনে। প্রায় ৮ লক্ষ বর্গফুট জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এই মিউজিয়াম প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে সভ্যতার বিভিন্ন নিদর্শনের পরিচয় বহন করে আসছে। এটি মূলত রাজপ্রাসাদ থেকে পর্যায়ক্রমে স্থাপত্য নিদর্শন সংরক্ষণের কাজে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। খ্রিস্টপূর্ব ১২শ শতাব্দীতে ল্যুভর প্রাসাদে এই জাদুঘরের গোড়াপত্তন হয়। পরবর্তীতে যারাই উত্তরসূরী এসেছেন সবাই একটু একটু করে এর সংগ্রহশালা সমৃদ্ধ করেছেন। “তৃতীয় নেপোলিয়ন” এর সময়কালে তিনি ল্যুভর মিউজিয়ামকে জন সাধারণেরর জন্য উন্মুক্ত করে দেন।

ল্যুভর মিউজিয়াম, Image Source: britannica.com

মতান্তরে সর্বাধিক ভ্রমণকৃত জাদুঘরের তালিকায় ল্যুভর মিউজিয়াম সবার চেয়ে এগিয়ে। প্রতিবছর লক্ষ লক্ষ পর্যটকে মুখরিত থাকে ল্যুভর। শিল্পানুরাগীদের কাছে এটি শিল্পচর্চার, প্রাচীন শিল্পকে জানার অন্যতম স্থান। ল্যুভরের মাঝখানে কাঁচের তৈরী অপরূপ লুভ্যর পিরামিড রয়েছে। একে কেন্দ্র হিসেব করে একে ৩ ভাগে ভাগ করা হয় – Sully: পিরামিডের ডানপার্শ্বের অংশ; Richelieu: পিরামিডের উত্তর পার্শ্ব এবং Denon: পিরামিডের দক্ষিণ পার্শ্ব।

ল্যুভরে প্রায় ৩৫ হাজার শিল্পকর্ম রয়েছে।  মেসোপটেমীয় আর্ট, মুঘল তথা মুসলিম সাম্রাজ্য এর নিদর্শন রয়েছে। ল্যুভরে মূল আকর্ষণের কেন্দ্রে আছে লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির আঁকা চিত্রকর্ম মোনালিসা। যা দর্শণার্থীদের কাছে বিরাট বিস্ময়। এছাড়াও পাওল ভেরোনাসের The wedding feast at cana চিত্রকর্ম, The Winged Victory of Samothrace সহ অনেক বিখ্যাত চিত্রকর্ম রয়েছে। শিল্পী জ্যান ভ্যারমারের আঁকা চিত্রকর্ম, বিশ্ব বিখ্যাত চিত্রশিল্পী মাইকেলএঞ্জেলোর তৈরি ভাস্কর্য, রাজা লুইস পঞ্চদশের মুকুট, ফ্রেঞ্চ জুয়েলারি, রিজেন্ট নামের অপরূপ সুন্দর একটি হীরাও রয়েছে। এসব বিখ্যাত শিল্পকর্মের কারণে ল্যুভর সারাবিশ্বে নন্দিত।

৩. গিমে মিউজিয়াম, প্যারিস, ফ্রান্স

ফ্রান্সের প্যারিসে অবস্থিত এই মিউজিয়াম এমিল গিমের সংগ্রহে গঠিত হয় বলে তার নামেই নামান্তরিত করা হয়েছে। এমিল গিমে একজন শৌখিন শিল্পপতি ছিলেন। ব্যবসা সূত্রে বিদেশ বিভুইয়ে তিনি বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ করে গড়ে তোলেন সংগ্রহশালা। যা থেকে আজকের গিমে মিউজিয়াম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

গিমে মিউজিয়াম, Image Source: Cultural Heritage.com

স্বল্প পরিসরে বিশ্বভ্রমণ হবে এই মিউজিয়ামে। এমিল গিমে বিশ্বভ্রমণকালে যা দেখেছেন এর অনেকটাই এখানকার সংগ্রহশালায় বন্দী করেছেন। বলা চলে, শিল্পকলা ও প্রত্ন সংগ্রহের এমন সমারোহ পৃথিবীর আর কোথাও নেই।

৪. মাদাম তুসো মিউজিয়াম, লন্ডন, যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত মাদাম তুসো মিউজিয়াম বিখ্যাত মিউজিয়ামগুলোর একটি। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৩৫ সালে। লোকজনের মোমের মূর্তি এবং মমির বিশাল সংগ্রহশালার কারণে এটি বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত। জাদুঘরটির প্রধান আকর্ষণ এর ‘ভোতিক কক্ষ‘। সেখানে ঘুরতে গিয়ে পছন্দের সব তারকার মোমের মূর্তি দেখে পর্যটকের চোখে থাকবে বিশাল বিস্ময়। স্বপ্নের নায়ক, স্বপ্নের ফুটবলারসহ বিখ্যাত সব ব্যক্তির মোমের মূর্তি মিলবে সেখানে। মনে হবে কাছ থেকেই দেখছেন স্বপ্নের মানুষকে। তাদের মূর্তির পাশে বাস্তবে তারকাকে উপস্থিত রাখলেও তফাৎ বোঝা কষ্টকর হবে।

মাদাম তুসো মিউজিয়াম, Image Source: Shutterstock.com

১৭৬৫ সালে ডা. ফিলিপ ফ্রান্সের সম্রাট পঞ্চদশ লুইসের শেষ উপপত্নী ‘মাদাম দু ব্যারী’র মোমের ভাষ্কর্য তৈরী করেন। যা বর্তমানে মাদাম তুসো জাদুঘরে প্রাচীনতম ভাষ্কর্য হিসেবে প্রদর্শিত হচ্ছে। বর্তমানে বিভিন্ন দেশে এর শাখা রয়েছে। মোমের তৈরি এই জাদুঘরটিতে ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত ব্যক্তিবর্গ, রাজকীয় ব্যক্তিত্ব, চলচ্চিত্র তারকা, খেলোয়াড়, স্বনামধন্য গায়ক-গায়িকা, রাজনৈতিক নেতাদের ভাস্কর্য এবং খ্যাতনামা খুনী ব্যক্তিদের মূর্তি রয়েছে।

৫. ব্রিটিশ মিউজিয়াম, লন্ডন, যুক্তরাজ্য

যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থিত ব্রিটিশ মিউজিয়াম মানবসভ্যতার ইতিহাস এবং সংস্কৃতির সংগ্রহশালা। এটি বিশ্বের প্রথম জাতীয় জাদুঘর যা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। সভ্যতার শুরু থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রায় ১৩ মিলিয়ন সাংস্কৃতিক নিদর্শন রয়েছে এই মিউজিয়ামে। এটি বিশ্বের শীর্ষ জাদুঘরগুলোর একটি। এখানকার প্রবেশদ্বারে কোন প্রবেশমূল্য নেই। এটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। এখানে গ্রেট ব্রিটেন ও সারা বিশ্বের পুরাকীর্তি ও ইতিহাস সংগৃহীত আছে। মূলত বিশ্ব সংস্কৃতি ও ইতিহাসকে সবার কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যেই এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

ব্রিটিশ মিউজিয়াম, Image Source: Wallpaper Cave

প্রায় ২ মিলিয়ন বছর বয়সী স্টোন চপ টুলটি সেখানকার সবচেয়ে প্রাচীনতম সংগৃহীত বস্তু। চিত্রকর্ম, জীবাশ্ম, বিভিন্ন সংস্কৃতি ও সভ্যতার নিদর্শন এই মিউজিয়ামের প্রধান আকর্ষণ। ‍‍‍‍‍‍‍‘দি রোজেটা স্টোন’, ১৮০টি ধাতব টুকরার সমন্বয়ে তৈরি ‘দি এক্সেস ট্রেজার’ এই মিউজিয়ামের অন্যতম আকর্ষণ। পুস্তক, উদ্ভিদের দেহাবশেষ, উল্কার ধ্বংসাবশেষ, বিভিন্ন প্রাণীর কঙ্কাল, জীবাশ্ম এবং বিভিন্ন প্রত্নসম্পদ এর অন্তর্ভুক্ত। যা পরিদর্শনে প্রায় ১দিন সময় অতিবাহিত হবে। এখানে সংগৃহীত হাজার বছরের সভ্যতার ইতিহাস দর্শকদের প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করে। এখানে রয়েছে মিশরীয় এবং গ্রীক সভ্যতার বিশাল সংগ্রহের সমাহার। প্রতিবছর লাখো লাখো দর্শকের সমাগম হয় এই মিউজিয়ামে।

৬. ভ্যাটিকান মিউজিয়াম, ভ্যাটিকান সিটি

ভ্যাটিকান সিটিতে  অবস্থিত এই মিউজিয়াম সমাজ ও সংস্কৃতির এক বিশাল সংগ্রহশালা। খ্রিষ্টান ক্যাথলিকদের জন্য তৈরী হলেও বর্তমানে এটি সকলের জন্য উন্মুক্ত। বিভিন্ন  মানচিত্র, ধর্মীয় চিত্রকর্ম, বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতা থেকে মিশরীয় সভ্যতার বিভিন্ন শিল্পকর্ম এখানে রয়েছে। এখানে রয়েছে শিল্পচর্চার বিশাল সমাহার।

ভ্যাটিকান মিউজিয়াম, Image Source: Wallpaperaccess.com

সিসটেইন চ্যাপল এবং র্যাফেল-এর জন্য তৈরী সংগ্রহশালা দর্শনার্থীদের প্রবলভাবে আকৃষ্ট করে। এখানে মোট ২২টি সংগ্রহশালা রয়েছে। বছরে লাখো লোকের সমাগম ঘটে এই মিউজিয়ামে।

৭. ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম, কায়রো, ইজিপ্ট

কায়রো শহরে ভ্রমণের তালিকায় সবসময় ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম অন্যতম। ইজিপশিয়ানদের ঐতিহাসিক ইতিহাস ও সংস্কৃতির সংগ্রহশালা এটি। যা কায়রোর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। এখানে বিভিন্ন চিত্রকর্মের পাশাপাশি ঊনিশ শতকের অনেক মমি সংরক্ষিত আছে। এর প্রথম ফ্লোর আপনাকে গ্রীক-রোমীয় সভ্যতার শুরু থেকে ইজিপশিয়ানদের ঐতিহাসিক ইতিহাস এবং সংস্কৃতিকে পরিচয় করিয়ে দিবে।

ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম, Image Source: Commons.Wikimedia.org

নিচের তলায় তুতেনখামুনের সমাধিসহ ট্যানিসের রয়্যাল টম্বে প্রদর্শিত অলংকারাদি রয়েছে। বিখ্যাত ইজিপশিয়ানদের মমির সংগ্রহশালা এখানকার বিশেষ আকর্ষণ। এখানে অনেক চিত্রকর্ম, মমি, কফিন, পাথর, ঐতিহাসিক প্রত্নসম্পদ এবং রাজাদের সাথে সমাহিত করা তাদের খাদ্যসামগ্রী পুঁতে রাখা আছে। ইজিপশিয়ানরা বিশ্বাস করেন মৃত্যু পরবর্তী ভক্ষণের জন্য এসব প্রয়োজন হবে। যুগ যুগ ধরে এই মিউজিয়াম ইজিপশিয়ানদের ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে সবার কাছে তুলে ধরছে৷

৮. প্রাদো মিউজিয়াম, মাদ্রিদ, স্পেন

এটি মাদ্রিদের অন্যতম একটি মিউজিয়াম। রাজা সপ্তম ফার্দিনান্দের স্ত্রী কুইন মারিয়া ইসাবেলের সহায়তায় এটি গড়ে উঠে। এখানে ৮৬০০ চিত্রকর্ম, ৭০০ ভাস্কর্য, স্প্যানিশ-ইতালীয় শিল্পের বিশাল সংগ্রহ রয়েছে। এখানকার বিখ্যাত সংগ্রহের মধ্যে  ভেলাজকুয়েজের ‘লাস মেনিনাস’, গয়ার ‘দ্য থার্ড অব মে ১৮০৮’, এল গ্রেসোর ‘এডোরেশন অব দ্য শেপার্ডস’ অন্যতম।

প্রাদো মিউজিয়াম, Image Source: britannica.com

এখানে স্পেনের বিখ্যাত চিত্রকর্মের পাশাপাশি ইউরোপীয় বিখ্যাত চিত্রকর্মসমূহ রয়েছে। বিখ্যাত জুয়ান দে ভিলানুয়েভার মাধ্যমে এই জাদুঘরটির ডিজাইন করা হয়েছে। এই জাদুঘরের প্রধানতম আকর্ষণ হল রুবেন্সের ‘দ্য থ্রি গ্রেসেস’। যার ফলে এটি বিশ্বজোড়া খ্যাতি লাভ করেছে।

৯. উফিজি গ্যালারী মিউজিয়াম, ফ্লোরেন্স, ইতালি

ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে অবস্থিত উফিজি গ্যালারী ইতালির ঐতিহ্যের বিশাল এক শিল্প সংগ্রহশালা। এখানে বিভিন্ন অঞ্চলের চিত্রকর্ম ও ভাস্কর্য রয়েছে। এর প্রবেশদ্বার হতেই বিভিন্ন ভাস্কর্য চোখে পড়বে। পাথরে খোদাই করা সব ভাস্কর্য যে কাউকে মুগ্ধ করবে। একে ইউরোপের রেনেসাঁর সংগ্রহশালা বলা হয়ে থাকে। এটি ইতালির বিখ্যাত শিল্প জাদুঘরগুলোর একটি।

উফিজি গ্যালারী মিউজিয়াম, Image Source: en.wikipedia.org

বিখ্যাত চিত্রকর মাইকেলএঞ্জেলা ও লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির মত বিখ্যাত সব ব্যক্তিদের চিত্রকর্ম রয়েছে এখানে। বিখ্যাত ভাস্কর বতিচেল্লির ‘বার্থ অব ভেনাস’ এবং ‘প্রিমাভেরা’সহ অন্যান্য কালজয়ী ভাস্কর্য এখানে সংগৃহীত আছে। প্রতিবছর মতান্তরে ১.৯ মিলিয়ন পর্যটক এই মিউজিয়াম পরিদর্শনে আসেন।

১০. হার্মিটেজ মিউজিয়াম, সেন্ট পিটার্সবার্গ, রাশিয়া

এটি রাশিয়ায় অবস্থিত বিখ্যাত শিল্প ও সংস্কৃতি জাদুঘর। ১৮৫২ সালে একে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। রাণী দ্বিতীয় ক্যাথেরিনের সময়ে এটি প্রতিষ্ঠিত হয় বলে প্রতিবছর সেন্ট ক্যাথেরিন দিবসে এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা হয়। এই মিউজিয়ামে প্রায় ৩০ লক্ষ ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। শশকিন, আইভাজোতুস্কি, কুইনজি, রোপিনসহ অনেক শিল্পীর চিত্রকর্ম এখানে প্রদর্শিত রয়েছে।

হার্মিটেজ মিউজিয়াম, Image Source: hdnicewallpaper.com

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই মিউজিয়ামে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। যা রাশিয়ার ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বিশ্বের দর্শনার্থীদের কাছে তুলে ধরে। প্রস্তরযুগ থেকে পর্যায়ক্রমে বর্তমান পর্যন্ত সংস্কৃতি ও শিল্পের সংগ্রহশালা এটি। নিকোলাস দ্বিতীয় এর ব্যক্তিগত সংগ্রহ এখানে শোভা পাচ্ছে।

Feature Image: cnn.com
তথ্যসূত্র:
01. https://www.nationalgeographic.com/…/museum-galleries
02. https://www.history.com/this-day-in…/louvre-museum-opens