নব্বই দশকের জাগরণ উঠিয়ে এনেছিল এক বৈপ্লবিক প্রজন্মের। যারা চোখে অফুরান স্বপ্নের স্রোতে ভেসে যাচ্ছিল আগামীর পথে। রাজনীতি থেকে সাহিত্য সর্বক্ষেত্রে অভ্যুত্থানে ভরা এক চির বসন্তের নাম ‘নব্বই দশক’।
শুধু প্রযুক্তি বা জিও-পলিটিকসে নয়, খেলার জগতেও এই দশক ছিল অনবদ্য। এই সময়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাস্কেটবল খেলোয়াড় মাইকেল জর্ডানের আবির্ভাব হয়।
শিকাগো বুলসের হয়ে খেলে তার একটি বিশাল সফল বাস্কেটবল ক্যারিয়ার ছিল এই সময়ে। তারপর বেসবল খেলায়ও নিজেকে শীর্ষে নিয়ে যায় এই কিংবদন্তি।
এত কিছুর মধ্যে খাবারের কথা ভুললে কীভাবে চলে? এই দশকের স্ন্যাকস এবং পানীয় ছিল এক একটি বোমা। প্রথমে আবির্ভাব হয় ক্রিস্টাল পেপসির যেটি প্রথম পরিষ্কার এবং ক্যাফিন-মুক্ত কোলা।
নব্বই এর দশকে এনার্জি সোডাও, অরবিটজ (রঙিন বিন্দুগুলির সাথে সেই পরিষ্কার জুস পানীয়) যা লাভা ল্যাম্পের মতো দেখায়-এগুলো ছিল দারুণ সব উদ্ভাবন।
মাঠের পর মাঠ অবারিত প্রান্তর গাছগাছালিতে পূর্ণ ছিল। বাংলাদেশের প্রতিটি শহরজুড়ে বার্গার, স্যান্ডউইচ আর বিদেশি খাবারের আধিক্যে শহর নুইয়ে পরার আগে ভালোবাসার জায়গাজুড়ে বিচরণ ছিল রিং চিপস, চিজ বল কিংবা কাঠের বাক্সের আইস্ক্রিম। আহ কী স্বাদ!
এই দশকে আরেক আলোড়ন ঘটায় ম্যাকডোনাল্ডস তাদের বিখ্যাত সুপার সাইজ ফ্রাই এবং ড্রিংক মর্ত্যে এনে। সাল ১৯৯২। এটি ২০০৪ সাল পর্যন্ত তাদের মেনুতে বলবৎ ছিল বিপুল চাহিদার জন্য।
হ্যাঁ, এই দশকটি ছিল রবিন উইলিয়ামসে দশক। পুরো দশকব্যাপী অবিশ্বাস্য ক্যারিয়ার ছিল তার। নব্বইয়ের দশকের তার অনেকগুলো চলচ্চিত্র ছিল আলোড়িত। মিসেস ডাউটফায়ার, জুমানজি, হুক, দ্য বার্ডকেজ এবং গুড উইল হান্টিং প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
এই দশকের আরেক আলোড়নের নাম টাইটানিক! এটি শুধু একটি জাহাজ বা সিনেমা ছিল না। এ যেন জীবনের এক অমোঘ অধ্যায়। তুমুলভাবে আলোড়িত এই চলচ্চিত্র রেকর্ড-ধারী ব্লকবাস্টার যা লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও এবং কেট উইন্সলেটকে খ্যাতির উচ্চস্তরে নিয়ে গিয়েছিল।
লিওর প্রতি এক ন্যানোসেকেন্ডের জন্যও ক্রাশ ছিল না এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর ছিল এই সময়ে। জ্যাক আর রোজের অমর সেই ক্ষনিকের প্রেম আজো ঝড়ের মতো কাঁপিয়ে দেয় দুনিয়াকে।
বইমেলা ছিল প্রাণের এক অপার সমাবেশ। এখন বইমেলায় ক্রেতার চেয়ে যেখানে দর্শনার্থীর আর মিডিয়ার সংখ্যায় ভিড় বেশি, তখন এসব ছিল না। বরং সত্যিকার বইপ্রেমীদেরই মিলনমেলা হয়ে উঠতো এক একটি বইমেলা। আর মেলাকে কেন্দ্র করে চলতো প্রানবন্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এখনকার মতো নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতি না থাকায় স্বতঃস্ফূর্ত ছিল আগতদের যাতায়াত। সার্বিক পরিস্থিতিই ছিল এখনের চেয়ে অনেক বেশি উৎসবমুখর। অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল আর টেলিভিশন সহজলভ্য না থাকায় বইয়ের পাঠকও ছিল বেশি।
চাচা চৌধুরী আর সাবু, বিল্লু, পিংকী, ফ্যান্টম, টিনটিন আর আর্চির কমিকস সিরিজ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল তৎকালীন বাংলায়।
পাঠ্যবইয়ের ভেতর লুকিয়ে তিন গোয়েন্দা পড়া আর কখনো ধরা খেয়ে মায়ের হাতের উত্তম-মাধ্যম খাওয়ার সেসব লোমহর্ষক স্মৃতি এখনো নস্টালজিক করে তোলে নব্বইয়ের কিশোর-তরুণদের!
এত টিভি চ্যানেল ছিল না তখন। অনেককেই দেখা যেত বাসার ছাদে দাঁড়িয়ে অ্যান্টেনা ঘোরাচ্ছে ছবি স্পষ্টতার জন্য। বিটিভি ছাড়া বিনোদনের অন্য কোনো চ্যানেল তখনও মধ্যবিত্তের আওতায় আসেনি।
সাপ্লিমেন্ট হিসেবে কোনো কোনো ঘরে ভিসিআর থাকত ব্যাস এটুকুই। বিটিভিতে প্রচারিত তখনকার বিভিন্ন অনুষ্ঠান, নাটক এখনো বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বাধিক দর্শকনন্দিত।
একটা দশকে কম্পনের মতো শব্দ ‘হুমায়ূন আহমেদ’। যিনি শব্দের সেতার দিয়ে রচনা করেছেন একের পর এক অলৌকিক সঙ্গীত প্রতি চান্নিপসর রাতে। লিখে গিয়েছেন আধুনিক মানুষের যাপিত জীবনের কথা, নাগরিক কষ্টের বোঝা।
টিভিমাধ্যমেও হুমায়ূন আহমেদ ছিল সমান জনপ্রিয়। তার নাটক কোথাও কেউ নেই পেয়েছিল আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তা। নাটকটির শেষ পর্বে বাকের ভাইয়ের (নাটকের মূল চরিত্র) ফাঁসি ঠেকাতে তখন ঢাকার রাস্তায় নেমেছিল মিছিলের স্রোত।
এছাড়াও, বিটিভিতে জনপ্রিয় ছিল ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান—‘ইত্যাদি’, ‘ঈদ আনন্দমেলা’, ‘যদি কিছু মনে না করেন’ প্রভৃতি। দর্শকপ্রিয় টিভি নাটকের মধ্যে আরো ছিল বহুব্রীহি, সংশপ্তক, এইসব দিনরাত্রি উল্লেখযোগ্য।
তবে এসব ছাড়াও বিটিভির সবচেয়ে জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ছিল শুক্রবারের ছায়াছবি। সারা দেশই যেন এই সময়টায় থেমে যেত। পাশাপাশি বেশ কিছু কার্টুনও জনপ্রিয়তা পায় নব্বয়ের ঢাকাসহ পুরো বাংলাদেশেই। তারমধ্যে শিক্ষামূলক মিনা কার্টুন এ তালিকায় ছিল অগ্রগণ্য।
এখন যেমন অনেকে প্রিয় তারকার ছবি নিজেদের ফোনে বা ল্যাপটপে রাখে, তখন থাকতো ঘরের দেয়ালে। প্রিয় নায়কের বা নায়িকার ছবি ঝুলিয়ে রক্ষণশীল পরিবারের সদস্য হয়ে কেউ কেউ দেয়ালে টাঙাতে না পারলেও ঠিকই রেখে দিতো বিছানার তোশকের নিচে!
নব্বই দশকের অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল দশকের শুরুতেই স্বৈরশাসক এরশাদের পতন। এই ঝটকা আমূল পরিবর্তন এনে দেয় দেশীয় রাজনৈতিক উত্থান-পতনের! এছাড়াও নানা রকম রাজনৈতিক অস্থিরতায় শহর জুড়ে হরতাল, টায়ার পোড়ানো ও গাড়ি ভাঙচুর ছিল নিত্য-নৈমিত্তিক ঘটনা।
গণঅভ্যুত্থানে জেনারেল এরশাদ ৪ঠা ডিসেম্বর পদত্যাগের ঘোষণা দেন এবং ৬ই ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য হোন। দীর্ঘ ৯ বছর ধরে চলা এই আন্দোলন ১৯৯০ সালে এসে গণআন্দোলনের রুপ নেয়।
সেই গণআন্দোলনে এরশাদ পদত্যাগ করেছে আর ইতিহাসে তা ৯০’র আন্দোলন হিসেবে নাম পায়।
সেই সময়টাতে জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলো। ভ্যালেন্টাইন ডে, ফাল্গুন উৎসব, ফ্রেন্ডশিপ ডে উদযাপনের প্রচলনও একই সময়েই ঘটে।
এখনকার মতো ফেসবুক না থাকলেও ইয়াহু মেসেঞ্জার, মিগ থার্টি থ্রি কিংবা এসএসএনের মাধ্যমে অনলাইন ভিত্তিক চ্যাটিং কালচার তখনই শুরু হয়। ধরতে গেলে আজকের এই ভার্চুয়াল কালচারের গোড়া-পত্তনের শুরু সেই দশকে।
অনেক র্যাপ সঙ্গীত অনুরাগী দাবি করেন নব্বইয়ের দশকে র্যাপ সত্যিই শীর্ষে পৌঁছেছিল। এই সময়ে সবচেয়ে বড় এবং সেরা র্যাপারদের পেয়েছিল মানুষ।
বিগি স্মলস এবং টুপ্যাক এর মতো কিংবদন্তি নিয়ে পূর্ব/পশ্চিম উপকূল দ্বিমুখী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। এই সময়ে আরো উল্লেখযোগ্যরা হল ড. ড্রে, স্নুপ ডগ, লিল’ কিম, ফক্সি ব্রাউন এবং এমিনেম।
১৯৯৬ সালের গ্রীষ্মে জর্জিয়ার আটলান্টায় অনুষ্ঠিত হয় গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক। বিশ্বের এই কিংবদন্তি টুর্নামেন্টের অনেক কিছু ঘটেছে। কিন্তু আজো মানুষ মহিলাদের জিমন্যাস্টিকস দল ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেনকে মানুষ ভুলতে পারেনা।
ম্যাগনিফিসেন্ট সেভেনের কেরি স্ট্রাগ তার প্রথম ভল্টে গোড়ালিতে আঘাত পেলে দর্শকের হৃদয় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। তিনি যখন স্বর্ণপদকের মঞ্চে দাঁড়ায় তখন আনন্দে নেচে উঠে পুরো দশক। এই অলিম্পিকের সেরা চমক ছিল ম্যাগফিসেন্ট সেভেন।
নব্বই দশকে একটি বিশেষ খেলনা ছিল ইয়োইয়ো। সবার হাতে থাকত। স্কুল ছুটি হলেই শুরু হতো ইয়োইয়ো প্রতিযোগিতা। কে কত দ্রুত ঘোরাতে পারে সেটিই ছিল দেখার বিস্ময়! এই সময়ে বঙ্গদেশে লাটিম ছিল অন্যতম আকর্ষণ। লাটিমের পেরেকে দড়ি বেঁধে কিশোর-তরুণরা ছিল লাটিম ঘোরানোয় দক্ষ।
আর ছিল পর্যাপ্ত খালি জায়গা। চলতো মার্বেল, সাতচাড়া, সাতার অথবা গোল্লাছুটের মতো খেলা। আর পানিতে নেমে বরফ পানি খেলে কাটিয়ে দেওয়া আস্ত একেকটা দুপুর রঙ্গীন করে তুলত সেসব দশক। সন্ধ্যার জ্যোৎস্নার আলোয় জমে উঠতো লুকোচুরি খেলা।
ফুটবল বিশ্বকাপের এই আসরের শিরোপাধারী দল হচ্ছে ফ্রান্স, যারা ফাইনালে ব্রাজিলকে ৩-০ গোলে পরাজিত করে বিস্ময় সৃষ্টি করে। এই বিশ্বকাপের মধ্য দিয়ে ফ্রান্স প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায়। তারা ৭ম ফুটবল খেলুড়ে দেশ এবং আয়োজক দেশ হিসেবে ৬ষ্ঠ বারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করে।
তৎকালীন পরিবারিক বন্ধন ছিল সুদৃঢ়। প্রায় ঘরে দেখা যেতো সবাই গোল হয়ে লুডু খেলছে, এ দৃশ্য আজকের এই অ্যান্ড্রয়েড যুগে কল্পনাতীত হলেও নব্বইয়ের বাংলাদেশে ছিল নিত্যনৈমিত্তিক। আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশি সবাই আন্তরিকতায় একে অন্যকে চিনতো।
নব্বই দশকেই প্রথম ফুটবলকে ছাপিয়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় ক্রিকেট। আইসিসি ট্রফি জয়ের মাধ্যমে ক্রিকেটে নিজেদের প্রথম অর্জন বাংলাদেশকে ভাসিয়েছিল উন্মাদনায়।
সেই দিনটি বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম উৎসবমুখর দিন ছিল। এরপর বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেওয়া বাংলাদেশ যেন বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ দিয়েছিল পুরো জাতিকে।
কাজুয়ো মিনামাইডের বই ‘মিলেনিয়াল জেনারেশন ইন বাংলাদেশ’ ১৯৯০ এর দশকে জন্ম নেওয়া প্রজন্মের বৈশিষ্ট্য এবং অভিজ্ঞতাগুলি বাংলাদেশের আবরণে বর্ণনা করেছেন। বাংলাদেশের এক রাজনৈতিক ক্রান্তিকালে জন্মগ্রহণ করা এই দশকের মানুষ এবং একের পর এক সামরিক শাসনের পর গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন দেখেছিলেন।
তারা এমন একটি সমাজে বেড়ে ওঠেন যা সরাসরি নব্য উদারনীতিবাদের দিকে বিশ্বব্যাপী চাপ দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। তাদের সংগ্রাম বৈশ্বিক পরিবেশে সমসাময়িক অবস্থার প্রতিফলন করে।
১৯৯০ সাল থেকে বাংলাদেশ শিশুদের অধিকার নিশ্চিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করে। প্রজনন যত্ন এবং শিশু-পুষ্টি ব্যাপক সম্প্রসারণ, যা পরবর্তীকালে শিশু এবং শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস করার ক্ষেত্রে অবদান রাখে। এই দশকের শিশুরাই সবচেয়ে বড় জনসংখ্যার দলে পরিণত হয়েছে দশকের বিচারে!
আটলান্টায় ১৯৯৬ সালের গেমসে গ্রেট ব্রিটেন সবাইকে হতাশ করে মাত্র একটি সোনা জেতে। অথচ ১৯৯২ সালের বার্সেলোনায় অলিম্পিক আরও ফলপ্রসূ ছিল তাদের জন্য। যেখানে পাঁচটি স্বর্ণ এবং ১৩তম স্থান অর্জন করে। ক্রিকেটে এই সময়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং ওয়ারউইকশায়ারের ব্যাটসম্যান ব্রায়ান চার্লস লারার অপূর্ব উত্থানের সূচনা হয়।
১৯৯৪ সালে এজবাস্টনে ডারহামের বিরুদ্ধে তার রেকর্ড-ব্রেকিং প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের ৫০১ রানের রেকর্ড-ব্রেকিং খেলার জন্য সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ক্রিকেটারে পরিণত হয় ব্রায়ান লারা। লারা ৪২৭ ডেলিভারিতে ৬৪টি চার এবং ১০টি ছক্কা মেরে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান হানিফ মোহাম্মদের (৪৯৯ রান) করা রেকর্ডটি ভাঙ্গেন। তার বিস্ময়কর স্কোরটি ছিল অমর এক কীর্তি এবং দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে আজ অবধি এটিই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে রেকর্ড হিসেবে রয়েছে।
এই সময়ে মাইক টাইসন এবং ইভান্ডার হলিফিল্ড উভয় ফান্ড সহায়তার রিংয়ে ফিরে আসে। এই জুটির মধ্যে তৃতীয় ব্লকবাস্টার হেড-টু-হেড পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা চলতে শুরু করে চারপাশে। এটি ছিল দুই হেভিওয়েটের মধ্যে শেষ লড়াই। যদিও টাইসনকে তার প্রতিদ্বন্দ্বীর কানের একটি অংশ কামড়ানোর জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
পরদিনই সংবাদের শিরোনাম আসে ইভেন্টটির নামে ‘দ্য বাইট ফাইট’ শিরোনামে। এর ফলে হলিফিল্ডকে WBA তার হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপ বেল্ট রাখার অনুমতি দেয় এবং কামড়ানোর দাঁয়ে মাইক টাইসন কিছুদিনের জন্য তার বক্সিং লাইসেন্স হারায়!
আরেক কিংবদন্তির উত্থান টাইগার উডস। ১৯৯৭ সালের রেকর্ড-ব্রেকিং মাস্টার্স জয় সত্যিই বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত গল্ফারকে সাফল্যের আরাধ্য ভূমিতে এনে দেয়। এটি ছিল ২১ বছর বয়সী এই গল্ফারের প্রথম বড় টুর্নামেন্ট সাফল্য।
এবং বিজয়ের ব্যবধান তার প্রতিদ্বন্দ্বীর থেকে ১২ স্ট্রোক এগিয়ে ছিল। যা শুধুমাত্র ১৩৫ বছর আগে ১৮৬২ সালে ব্রিটিশ ওপেনে ওল্ড টম মরিস ১৩টি স্ট্রোকের মাধ্যমে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। নব্বইয়ের দশকে এটি ছিল খেলাধুলার সবচেয়ে বড় আর আধুনিকতম অর্জন।
আরেক উজ্জ্বল তারকার নাম সেরেনা উইলিয়ামস। যে প্রথমবারের মতো গ্র্যান্ড স্ল্যাম ফাইনালে জয়লাভ করে। বিশ্বের এক নাম্বার মার্টিনা হিঙ্গিসকে সরাসরি সেটে পরাজিত করে ইউএস ওপেন জিতে নেয় এই কিংবদন্তি৷ এই সূচনার পরে তিনি আরও ২২টি গ্র্যান্ড স্ল্যাম জিতে নেয়, যার মধ্যে পাঁচটি ইউএস ওপেন রয়েছে।
কিন্তু এগুলো ১৯৯৯ সালে তৈরি করা ইতিহাসের প্রথম সাক্ষীর রেশকে ছাড়াতে পারেনা। তিনি প্রথম আফ্রিকান-আমেরিকান মহিলা যিনি ‘ওপেন ইরা’তে একটি গ্র্যান্ড স্লাম জিতে নেয়।
কেটে গিয়েছে এর মধ্যে আরো দুটি দশক! তাও নব্বইয়ের সেই তরুণদের উত্থান আর প্রজন্মের স্বাদ যেন আজো ঝংকার তোলে কোটি মানুষের মাঝে। এই আজন্ম ব্যঞ্জনার স্বাদ ইতিহাস রেখে দিয়েছে তার অক্ষিকোটরে ‘নব্বই দশক’ শিরোনামে।
এই আয়োজনে হয়তো আরো অনেক কিছুই স্থান পেতো নব্বইয়ের দিনগুলোর। কিন্তু ব্যাপ্তিপরিক্রমাতে আমাদেরও থেমে যেতে হয় নস্টালজিক সেই মুহুর্তগুলোর স্মৃতিগন্ধা বুকে রেখে!
Feature Image: Getty Images References: 01. 15 things that happened in that decade of '90s. 02. The '90s: The decade that never ended. 03. 1990s: The good decade. 04. 20 reasons why The '90 were the best decade to grow up in. 05. Bangladeshis bring down Ershad regime, 1987-1990. 06. Millennials of Bangladesh: The generation that grew in democracy, neoliberalism and disparity. 07. 15 memorable sporting moments from the 90s.
অনবদ্য অন্বেষণ।।নব্বই দশক আসলেই এক নস্ট্রালজিয়া।।
নব্বই দশকের স্বাদ সম্পূর্ণটুকু না পেলেও যতটুকু পেয়েছি তাতে আমার ছোটবেলার স্মৃতিগুলো ছিলো খুব সুন্দর এবং প্রাণবন্ত ছিলো। বিকেল হলেই মাঠে দাড়িয়াবান্ধা, সাত চারা,মাংস চুরি,ডাংগুলি,এলোন্টি-বেলোন্টি ইত্যাদি খেলার জন্য দৌড়ে চলে যেতাম। রাতের বেলা যখন ধুম করে লোডশেডিং হতো মনে হতো যেনো কলোনীর সব মানুষের মাঝে মেলা জমেছে। ছোট থেকে বড় কে না লোডশেডিং সময় টাকে উপভোগ করেছে। আরো যে কত কত নস্টালজিক মূহূর্ত… তার বেশিরভাগ ই লেখিকা ফুটিয়ে তুলেছেন তার লেখায়। লেখিকার জন্য মন থেকে শুভকামনা ও ভালোবাসা🤍