জমির হোসেন , ইতালি:
ভালোবাসা আবেগে ভরা মধুময় একটি শব্দ। যার গভীরতা এত বেশি যে, পরিমাপের কোনো একক নেই। ভালোবাসা বিস্তীর্ণ হয়ে পাখা মেলে আছে মানব-মানবীর ওপর। এর কোনো সীমাবদ্ধতাও নেই এবং এককভাবে কারো ওপর নির্ভরও করে না রংহীন ভালোবাসা। নেই কোনো বিকৃত রূপ।
ভালোবাসা মূল্যহীন হলেও এর মূল্যবোধ এই প্রজন্মের কাছে খুবই কম। শিরি-ফরহাদ, লাইলী-মজনু ও শাহজাহান-মমতাজের ভালোবাসা এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। বিনোদনের অতিমাত্রায় বর্তমান ভালোবাসা। অবাধ বিচরণই অবক্ষয়ের মূল কারণ এ যুগের ভালোবাসা যা এখন প্রতীয়মান। তবে সবার ভালোবাসা এক রকম একই দৃষ্টিতে দেখা সমীচীনও নয়। ভালো মানুষ, সত্যিকার মানুষ সত্য ভালোবাসা পৃথিবীতে এখনও বিদ্যমান।
প্রশ্ন থাকে এ রকম ভালোবাসা খুবই নগন্য যা মূল্যায়ন করার মতো নয়। হাদিসের আলোকে যদি বলা হয়, ভালো মানুষ আছে বলেই এই পৃথিবী এখনও টিকে আছে যতদিন সৎ মানুষ থাকবে ততদিন এই জগতে মানুষের বিচরণ অব্যাহত থাকবে। এখনও কিছু ভালোবাসা মানুষকে অমর করে রাখে।
মোগল সম্রাট শাহজাহান তার স্ত্রী মমতাজ বেগমের জন্য তাজমহল নির্মাণ করে ভালোবাসার বিশ্ব রেকর্ড গড়ে। পৃথিবীতে এক অনন্য দৃষ্টান্ত তাজমহল যা নির্মাণ হয়েছিল ১৬৩২ সালে। এটি বর্তমান বিশ্ব পর্যটনের অন্তর্ভুক্ত অসাধারণ সুন্দর বলেই তাজমহল দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা এসে ভিড় জমান। তাজমহল ভালোবাসার জন্য বিরল এক দৃষ্টান্ত। এ রকম স্বচ্ছতায় ভরা ছিল এক সময়কার ভালোবাসা। বর্তমানে সত্যিকার, বিশ্বাসযোগ্য ভালোবাসা পাওয়া বড়ই দুষ্কর। তবু ভালোবাসা টিকে আছে নিরূপায়ে নামে মাত্র।
প্রেমিক যুগলের জন্য জনম জনমের অবিশ্বাস্য দৃষ্টান্ত রোমিও- জুলিয়েটের ভালোবাসা। উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের অমর সাহিত্যে রোমিও- জুলিয়েটের ভালোবাসাকে বেশ গুরুত্ব দেয়। শেক্সপিয়ারের রোমিও- জুলিয়েটের বইটি ওই সময় বিশ্বময় তোলপাড় সৃষ্টি করে। ভালোবাসার অমর কাহিনী লিখে শেক্সপিয়ার নিজেও ভীষণ খ্যাতি অর্জন করে প্রেমিক-প্রেমিকাদের মাঝে আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং ভালোবাসার প্রতি অগাধ বিশ্বাস সমারোহ হয়।
উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের অমর সাহিত্যে জুলিয়েট এক অদ্ভুত সুন্দর প্রশ্ন করেন। কথাটি এমন এই স্থানে তুমি কিভাবে এলে। কে-ই বা দেখিয়েছে এই পথ। রোমিও অকপটে বললো আমার প্রেম আমাকে এই পথ দেখিয়েছে। এই যে ভালোবাসার গভীর অনুভূতি, মমতা ভরা কথার আদান-প্রদান মানব সমাজে প্রেমিক যুগলের জন্য একটি বড় শিক্ষা। এই শিক্ষা সর্বক্ষেত্রে পৃথিবীর সব শ্রেণির মানুষের বুকে লালন করা দরকার এখন থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত।
লেখক: প্রবাসী সংবাদকর্মী, ইতালি
প্রবাসে আপনার অভিজ্ঞতা, কমিউনিটির খবর, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, ব্যাবসা, কমিউনিটি বিষয়ক চিন্তা-চেতনা, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংঘঠন, স্মৃতিচারণসহ যে কোনো বিষয়ে লিখে পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা – amaderparis@gmail.com